অক্সিজেনের আকাল মেটাতে মোদীর গুজরাতের ভরসা দিদির বাংলা
দেশজুড়ে করোনা পরিস্থিতিতে তৈরি হয়েছে অক্সিজেনের (Oxygen) তীব্র সঙ্কট। যা সামাল দিতে রীতিমতো নাজেহাল হয়ে পড়ছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই অবস্থায় অক্সিজেনের আকাল মেটানোর উদ্দেশ্যে বাংলার প্রতিষ্ঠানের উপরই ভরসা করতে হচ্ছে নরেন্দ্র মোদির গুজরাতকে। অক্সিজেনের সঙ্কট মেটাতে দুর্গাপুরের প্রতিষ্ঠানের উদ্ভাবন করা অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে গুজরাতের মতোই উদ্যোগী হয়েছে হরিয়ানা, রাজস্থানের মতো রাজ্যও। তেলেঙ্গানার দুটো সংস্থাও ওই প্রযুক্তি ব্যবহার করে অক্সিজেন পরিষেবা প্রদানকারী যন্ত্র তৈরি করতে উদ্যোগী হয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অক্সিজেন এনরিচমেন্ট টেকনোলজির ব্যবহারে তৈরি যন্ত্র প্রয়োজনে কোনও রোগীকে প্রতি মিনিটে ৭০ লিটার পর্যন্ত অক্সিজেন সরবরাহ করতে সক্ষম।
উল্লেখ্য, দেশে অক্সিজেনের আকাল মেটানোর জন্য সম্প্রতি অক্সিজেন এনরিচমেন্ট টেকনোলজির উদ্ভাবন করেছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের আওতায় থাকা দুর্গাপুরের সিএসআইআর-সিএমইআরআই (সেন্ট্রাল মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট)। জানা যাচ্ছে, এরপরেই সংশ্লিষ্ট অক্সিজেন এনরিচমেন্ট টেকনোলজির ব্যবহার করে স্বয়ংসম্পূর্ণ যন্ত্র তৈরি করতে উদ্যোগী হয়েছে গুজরাত। দুর্গাপুরের সিএসআইআর-সিএমইআরআইয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রযুক্তি উদ্ভাবনের পর এখনও পর্যন্ত সারা দেশের মোট ছ’টি সংস্থাকে তা দেওয়া হয়েছে যাতে তারা নিজেদের রাজ্যে অক্সিজেনের আকাল মেটাতে সমর্থ হয়। প্রতিটি সংস্থাই অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের (এমএসএমই) অন্তর্গত। এর মধ্যে রয়েছে হরিয়ানার গুরুগ্রামের দুটো, রাজস্থানের কোটার একটি, গুজরাতের রাজকোটের একটি এবং তেলেঙ্গানার দুটো সংস্থা।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রাজস্থানের কোটার সংস্থাটি এই মুহূর্তে প্রতি মাসে তিন থেকে চার হাজার এহেন যন্ত্র তৈরির পরিকল্পনা করেছে। অন্যদিকে, গুরুগ্রামের একটি সংস্থা প্রতি মাসে পাঁচ হাজার যন্ত্র তৈরির লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে। দুর্গাপুরের সিএসআইআর-সিএমইআরআই জানিয়েছে, সাধারণত একজন রোগীর প্রতি মিনিটে গড়ে পাঁচ থেকে ২০ লিটার অক্সিজেন প্রয়োজন হয়। নয়া অক্সিজেন এনরিচমেন্ট টেকনোলজির মাধ্যমে প্রস্তুত যন্ত্র প্রয়োজনে মিনিটে ৭০ লিটার পর্যন্ত অক্সিজেন সরবরাহ করতে সক্ষম। এক্ষেত্রে বিশুদ্ধতার হার থাকবে ৩০ শতাংশ। মিনিটে ১৫ লিটার অক্সিজেন সরবরাহের ক্ষেত্রে বিশুদ্ধতার হার প্রায় ৯০ শতাংশ। একইসঙ্গে চার থেকে ছয় জন রোগীকে এই যন্ত্রের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ করা সম্ভব। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রক জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তির ব্যবহারে রোগীকে তুলনায় অনেক দ্রুত সুস্থ করে তোলা যাবে। পাশাপাশি অক্সিজেন সিলিন্ডারে যেসব দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে, অক্সিজেন এনরিচমেন্ট ইউনিটে তাও থাকবে না বলেই জানিয়েছে কেন্দ্র।