শপথ নেওয়ার সাথে সাথেই ‘নতুন’ সুর মুকুলের গলায়
দীর্ঘদিন পর ভোটের ময়দানে নেমেও সাফল্য পেয়েছেন তিনি। কিন্তু রাজ্যে গোটা দলের কার্যত ভরাডুবি হয়েছে। ফলে মুকুল রায় (Mukul Roy) এখন বিরোধী দলের বিধায়ক। কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্রে তাঁর জয় নিয়ে তিনি নিজেও সন্দিহান ছিলেন না, বাস্তবেও তৃণমূল প্রার্থী অভিনেত্রী কৌশানী মুখোপাধ্যায়কে হারিয়ে বিধানসভা ভোটে প্রথম ব্যক্তিগত পেয়েছেন মুকুল। কিন্তু সেই জয়ও তাঁকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। দল হারার দুঃখের থেকেও মুকুলের এই অসন্তুষ্টি দলের প্রতি ‘অভিমান’ বলেই ধারনা অনেকের। সেই অভিমান যেন ধরা পড়ল শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানেও।
শুক্রবার বিধানসভায় আসেন মুকুল। ১২.০৪ মিনিট থেকে ১২.২৫ মিনিট পর্যন্ত বিধানসভায় ছিলেন তিনি। শপথের সামান্য সময়টুকু বাদ দিলে মুকুল ছিলেন একেবারেই ‘নীরব’। সংবাদমাধ্যমের তরফেও তাঁকে নানা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি আজ কিছু কথা বলব না। যেদিন বলার সেদিন সবাইকে ডেকে আমি বলব।’ এরপরই হাতজোড় করে বিধানসভা ছাড়েন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি।
আর মুকুলের এই ‘নীরবতা’ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে। ভোটের মাঝেই কানাঘুষো উঠেছিল, তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে নিজের পুরনো সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছেন মুকুল। সেই সম্ভাবনায় হাওয়া লাগে যখন স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) মুখে উঠে আসেন তাঁর নাম। শুভেন্দুকে আক্রমণ করতে গিয়ে মমতা বলেন, ‘শুভেন্দুর থেকে মুকুল অনেক ভালো।’ আর সেই ‘ভালো’ মুকুলকে নিয়েই শুরু হয়েছে চর্চা।
সূত্রের খবর, বিজেপির অন্দরে ক্রমেই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন মুকুল। ২০১৯ -এর লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে BJP-র বিপুল সাফল্যের জন্য মুকুলের অবদানকেও প্রথম সারিতে রাখা হয়। সেই মুকুলকেই এবার কৃষ্ণনগরে টিকিট দিয়ে ‘আটকে’ রাখা হয়। এমনকী রাজ্যের প্রতিটা প্রান্তের সংগঠন বোঝা মুকুলকে এবার কোনঠাসা করেই রেখেছিলেন বিজেপির শীর্ষ কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। খুব স্বাভাবিকভাবেই সেই অভিমান ধীরেধীরে বড় আকার নিয়েছে মুকুলের মনে। এবার কি তাই ‘নতুন’ ভাবনা মুকুলের মনে? ফের কি পুরনো দলেই প্রত্যাবর্তন হবে মুকুলের? এদিন বিধানসভার আবহও সেই সম্ভাবনাকে একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছে না।
যদিও এদিন মুকুল শপথ নেওয়া মাত্রই বিজেপি বিধায়কদের একাংশের তরফে তাঁকে বিরোধী দলনেতা করার দাবি ওঠে, তবে তাতে বিশেষ আমল দেননি তিনি। তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর মুখোমুখি পড়ে যাওয়ায় সৌজন্য সাক্ষাৎ ছেড়ে বিধানসভা ছাড়েন তিনি।