কোভিড প্রোটোকল মেনে মৃতদেহ সৎকার নিয়ে নয়া নির্দেশিকা রাজ্যের
করোনা রোগীর মৃত্যুর পরও দুর্ভোগের অন্ত নেই পরিজনদের। কোথাও শেষকৃত্যের সময় তাদের উপস্থিতি নিয়ে আপত্তি উঠছে। কোথাও আবার টেস্ট রিপোর্ট না আসায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা পড়ে থাকছে দেহ। এই পরিস্থিতিতে কোভিড প্রোটোকল মেনে মৃতদেহ সৎকার নিয়ে শনিবার নয়া নির্দেশিকা জারি করল রাজ্য সরকার। সেখানে শর্তসাপেক্ষে কোভিড রোগীর মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। এতদিন হাসপাতাল থেকে দেহ তাদের হাতে তুলে দেওয়া হতো না। স্বাস্থ্যদপ্তর জানিয়েছে, এখন থেকে কোভিড প্রোটোকল মেনে করোনায় মৃতের শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে পারবে পরিবার। তবে হাসপাতাল থেকে দেহ সরাসরি নিয়ে যেতে হবে নির্দিষ্ট শ্মশান বা কবরস্থানে। কেউ চাইলে মৃতদেহ স্থানীয় এলাকায় নিয়ে যেতে পারেন। কিন্তু সেক্ষেত্রেও সরাসরি ওই এলাকার নির্দিষ্ট শ্মশান বা কবরস্থানে গিয়ে অন্ত্যেষ্টির ব্যবস্থা করতে হবে। অন্য কোথাও দেহ নিয়ে যাওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে স্থানীয় নোডাল অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। অন্যদিকে, শেষকৃত্যে অংশ নেওয়া পরিজনদের কোভিড প্রোটোকল মানতে হবে।
অনেক সময়ই রোগীদের শেষ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হচ্ছে। সেই পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার পাশাপাশি র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করার নির্দেশও দিয়েছে স্বাস্থ্যদপ্তর। যাতে রোগীর মৃত্যু হলে দ্রুত ডেথ সার্টিফিকেট এবং অন্ত্যেষ্টির ব্যবস্থা করা যায়। কোনও অবস্থাতেই কোভিড রিপোর্টের অপেক্ষায় মৃতদেহ ফেলে রাখা যাবে না বলেও সতর্ক করা হয়েছে নির্দেশিকায়। এমন ক্ষেত্রে কোভিড প্রোটোকল মেনেই শেষকৃত্য করতে হবে।
এদিন গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১৯ হাজার ৪৩৬ জন। ১২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। শেষ ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৮ হাজার ২৪৩ জন। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে একগুচ্ছ পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে আবেদন জানিয়ে চিঠি দিয়েছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য শাখা। দি হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার রাজ্য শাখার পক্ষ থেকেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে হোমিওপ্যাথি এবং হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের কাজে লাগানোর আর্জি জানানো হয়েছে। কলকাতার সাউথ পয়েন্ট স্কুলে আরটি পিসিআর নমুনা সংগ্রহের কেন্দ্র গড়া হয়েছে। এদিনই শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে এক কোভিড রোগীর দেহে পেসমেকার বসানোর কাজে সাফল্য পেয়েছেন ডাক্তাররা। হাওড়ায় এক বেসরকারি হাসপাতালেও ৩০ বছর বয়সি এক রোগী হার্ট প্রতিস্থাপনের পর ছাড়া পেয়েছেন। এক চিকিৎসকের ব্রেথ ডেথের পর তাঁর পরিবারের সদস্যরাই এই অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নেন। এদিন থেকেই কলকাতায় চালু হয়েছে ‘অক্সিজেন অন হুইলস’ পরিষেবা। ৭০৪৪০৪১০১০ এবং ৭০৪৪০৪১০১৫ এই নম্বরে ২৪ ঘণ্টা শহরের ১৪০ কিমি ব্যাসার্ধের মধ্যে মিলবে এই ভ্রাম্যমান পরিষেবা।