কৃষক আন্দোলনে যোগ দেওয়া বাংলার মহিলাকে ‘গণধর্ষণ’
তিকরি সীমান্তে কৃষক আন্দোলনে (Farmers protest) যোগ দিতে গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের এক মহিলা সমাজকর্মী (২৬)। সেখানে যে দু’জন ব্যক্তির সঙ্গে গিয়েছিলেন, তারাই তাঁকে ধর্ষণ (Rape) করে বলে অভিযোগ করলেন মহিলার বাবা। পরে করোনাভাইরাস (Coronavirus) সংক্রান্ত উপসর্গ নিয়ে হরিয়ানার একটি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
মহিলার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছে পুলিশ। এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, এফআইরে দু’জন মূল অভিযুক্ত-সহ ছ’জনের নাম আছে। তাদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ, ষড়যন্ত্র, যৌন হেনস্থা-সহ ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। তবে অভিযুক্তরা কোন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিল, তা এখনও জানায়নি পুলিশ। সংযুক্ত কিষান মোর্চার তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, মহিলাদের বিরুদ্ধে হেনস্থার ঘটনা কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। নিজেদের ‘কিষান সোশ্যাল আর্মি’ নামে সংগঠনের সদস্য হিসেবে দাবি করেছিল অভিযুক্তরা। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থল থেকে সেই সংগঠনকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদেরও আন্দোলনে যোগ দিতে দেওয়া হচ্ছে না বলে দাবি করেছে মোর্চা।
শনিবার নিজের অভিযোগপত্রে মহিলার বাবা জানিয়েছেন, গত ১০ এপ্রিল বাংলা থেকে দিল্লি-হরিয়ানা সীমান্তের তিকরির উদ্দেশে রওনা দেন সমাজকর্মী। যিনি কেন্দ্রের তিন নয়া কৃষক আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সমর্থক ছিলেন। বাহাদুরগড়ের স্টেশন হাউস অফিসার ইনস্পেক্টর বিজয় কুমার জানিয়েছেন, মহিলার বাবা দাবি করেছেন যে গত মাসের গোড়ার দিকে কয়েকজনের সঙ্গে দুই অভিযুক্ত বাংলা এসেছিল। যারা নিজেদের কৃষক আন্দোলনের সমর্থক বলে দাবি করেছিল। সেই সময় তাদের সঙ্গে মহিলার আলাপ হয়। তারপর তিকরি সীমান্তে যেখানে কৃষকরা আন্দোলন চালাচ্ছেন, সেখানে যাওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন মহিলা। প্রাথমিকভাবে রাজি না হলেও পরে সেই ব্যক্তিদের সঙ্গে মহিলাকে যাওয়ার অনুমতি দেয় পরিবার। কিন্তু ট্রেনে যাওয়ার সময় একজন তাঁকে যৌন হেনস্থা করে। তখন ওই অভিযুক্তকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন মহিলা। ১১ এপ্রিল তিকরিতে পৌঁছানোর পর সমাজকর্মীকে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ করেন মহিলার বাবা। অভিযোগপত্রে মহিলার বাবা জানিয়েছেন, মেয়ে তাঁকে পুরো বিষয়টি ফোনে জানান।
ওই পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, ২৫-২৬ এপ্রিলের মধ্যবর্তী রাতে মহিলাকে ঝাঝারের বাহাদুরগড়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয়। তাঁর করোনাভাইরাসের উপসর্গ ছিল। ৩০ এপ্রিল রাতে মহিলার মৃত্যু হয়। তিনি বলেন, ‘চিকিৎসা চলাকালীন মহিলার মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, করোনা রোগীর মতো মহিলার চিকিৎসা চলছিল। আমরা নথি চেয়েছি। বিস্তারিত তথ্য পাওয়ার পরই আমরা বলতে পারব যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে কিনা।’