টিকা পাঠাচ্ছে না কেন্দ্র, আটকে দশ লক্ষ মানুষের দ্বিতীয় ডোজ
কেন্দ্রীয় সরকার দ্রুত টিকা না পাঠালে অন্তত ১০ লক্ষ রাজ্যবাসী সময়ে দ্বিতীয় ডোজ পাবেন না। কোটি কোটি টাকা খরচ করে যে প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে, সেই উদ্যোগই মাঠে মারা যাবে। অসম্পূর্ণ থেকে যাবে করোনা টিকাকরণ। এমনই আশঙ্কা দেখা দিয়েছে রাজ্যে। বাংলায় টিকাদান কর্মসূচির পদস্থ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, প্রধানত এই সমস্যা তৈরি হয়েছে কোভিশিল্ড টিকার ক্ষেত্রে। টিকা সময়ে না আসায় ইতিমধ্যেই বহু মানুষের প্রথম ডোজ নেওয়ার পর ৪২-৫৬ দিনের সময়সীমা শেষ। কিন্তু দ্বিতীয় ডোজ পাননি। এই সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। এ মাসের শেষে তা বেড়ে হবে কমপক্ষে ৮-১০ লক্ষ।
তাহলে সময়ে দ্বিতীয় ডোজ না পাওয়ায় তাঁদের টিকাদান কি সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়ে যাবে? কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে কোভিশিল্ডের (Covishield) দু’টি ডোজের ব্যবধান আরও বাড়ানো যায় কি না, তা নিয়ে জোর চর্চা চলছে দিল্লির নির্মাণ ভবনে। কারণ, প্রথমত রাজ্যগুলিকে চাহিদা মেনে টিকা পাঠাতে অনেকটাই ব্যর্থ কেন্দ্র। এই পরিস্থিতিতে কোভিশিল্ডের দু’টি ডোজের ব্যবধান দুই থেকে বাড়িয়ে তিন মাস করলে টিকা পাঠানোর ক্ষেত্রে আরও বেশি সময় পাবে কেন্দ্র। দুই, দু’টি ডোজের ব্যবধান যত বাড়ছে, ভ্যাকসিনও তত ভালো কাজ করছে। ব্রিটেনে বর্তমানে দু’টি ডোজের ব্যবধান বাড়িয়ে তিন মাস করা হয়েছে।
যদি টিকার দু’টি ডোজের ব্যবধান না বাড়ে ও কেন্দ্রীয় সরকার সময়মতো দ্বিতীয় ডোজ পাঠাতে ব্যর্থ হয়, তাহলে কী ভবিতব্য হবে একবার টিকা পাওয়া লোকজনের? বুধবার এ প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারের করোনা মোকাবিলার বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য ডাঃ সৌমিত্র ঘোষ বলেন, একবার এবং দু’বার টিকা পাওয়ার মধ্যে তুলনা করলে সাফল্যের হারে অবশ্যই কিছুটা ফারাক আছে। তবে সেটা ওই কিছুটাই। আহামরি কিছু নয়। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডাঃ অনির্বাণ দলুই বলেন, সমস্যা মূলত কোভিশিল্ড নিয়ে। কোভ্যাকসিন পর্যাপ্ত আছে। বিভিন্ন সমীক্ষা জানাচ্ছে, একবার কোভিশিল্ড পেলে তা ৪০-৬০ শতাংশ পর্যন্ত ক্ষেত্রে করোনা রুখতে পারে। অন্যদিকে দু’বার পেলে সেটা ৬০ শতাংশের বেশি সময়ে আটতে দিতে পারে কোভিড। একটা ডোজ পেলে টিকাদান ব্যর্থ হয়ে যাবে, সেটা ঠিক নয়। তবে হ্যাঁ, হার্ড ইমিউনিটির যে লক্ষ্য মাথায় রেখে ভারত সরকার টিকা দিতে শুরু করেছিল, তা এখনই পূরণ হবে না। আরও সময় লাগবে।