বিজেপির প্রতি পক্ষপাতিত্ব, জাতীয় তফসিলি কমিশনের ভূমিকায় ক্ষোভ
পূর্ব বর্ধমানে ভোট পরবর্তী হিংসায় ক্ষতিগ্রস্ত তফসিলি পরিবারগুলির সঙ্গে বৃহস্পতিবার দেখা করেন জাতীয় তফসিলি কমিশনের (National Commission for Scheduled Castes) প্রতিনিধিরা। তবে কমিশনের এই উদ্যোগে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে। জামালপুর ও বর্ধমান সদর এলাকা পরিদর্শন করেন তাঁরা। শুধুমাত্র বিজেপির ক্ষতিগ্রস্ত তফসিলি কর্মীদের পরিবারের সঙ্গে তাঁরা দেখা করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল (Trinamool)। জামালপুরের নবগ্রামে গণনা পরবর্তী অশান্তিতে তিনজনের মৃত্যু হয়। এক বিজেপি কর্মীর মা কাকলি ক্ষেত্রপাল মারা যান। এদিন ওই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন কমিশনের সভাপতি সহ অন্যান্যরা। ওই গ্রামেই অপর এক তফসিলি পরিবারের সদস্যও মারা গিয়েছেন। যদিও ওই বাড়িতে না যাওয়ায় তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে।
কড়া পুলিসি পাহারায় এদিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ জাতীয় তফসিলি কমিশনের চেয়ারম্যান বিজয় সাম্পলা ও ভাইস চেয়ারম্যন অরুণ হালদার জামালপুরের নবগ্রামের ষষ্ঠীতলায় পৌঁছন। জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা, জেলার পুলিস সুপার কামনাশিস সেন সহ জেলা প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তারাও কমিশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এদিন সেখানে যান। ঘটনাস্থল ঘুরে কেন্দ্রীয় তপসিলি জাতি কমিশনের চেয়ারম্যান বিজয় সাম্পলা বলেন, কাকলি ক্ষেত্রপালকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ পেয়েছি বলেই আমরা নবগ্রামে এসেছি। কিন্তু নিহতের পরিবার বা তাঁদের প্রতিবেশী কাউকে বড়িতে পেলাম না। এর থেকেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে নবগ্রামে এখনও আতঙ্কের পরিবেশ রয়েছে। মানুষ ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ৩মে গণনা পরবর্তী হিংসায় বিজেপি কর্মী আশিস ক্ষেত্রপালের মা কাকলি ক্ষেত্রপালের সঙ্গে আরও দুই তৃণমূল কর্মী খুন হন। তাঁদের মধ্যে বিভাস বাগ তফসিলি সম্প্রদায়ের। এদিন তাঁর বাড়িতে না যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে বিজয়বাবু বলেন, যাঁদের বিষয়ে তাঁরা অভিযোগ পেয়েছেন শুধু তাঁদের বাড়িই যাওয়া হচ্ছে।
এরপর ওই দল বর্ধমান সদরে ক্ষতিগ্রস্ত তফসিলি পরিবারের ভাঙা বাড়ি ও দোকান পরিদর্শন করেন। এদিন বর্ধমান সদরের বেলকাশ অঞ্চলের মিরিক পাড়ায় গিয়ে তাঁরা স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন।
যদিও জাতীয় তফসিলি কমিশনের এই ভূমিকায় ক্ষুব্ধ শাসক দল। রাজ্য এসসি, ওবিসি সেলের সহ সভাপতি তথা তৃণমূলের জেলা কোঅর্ডিনেটর উজ্জ্বল প্রামাণিক বলেন, জাতীয় তফসিলি কমিশন কীভাবে এমন পক্ষপাতিত্ব করতে পারে? ওরা দল দেখে শুধু বিজেপির আক্রান্তদের বাড়িতে যাচ্ছে। তৃণমূলের এতজন তফসিলি কর্মী মারা গেলেন, তাঁদের খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করেনি। বিজেপি বাংলার সামাজিকতা ও কৃষ্টিকে অস্বীকার করার চেষ্টা করছে। বিহার, ইউপির মতো করে বিভিন্ন জায়গায় ওদের কেন্দ্রীয় টিম পাঠাচ্ছে। বাংলার মানুষ ভোটে ওদের জবাব দিয়েছে।
রাজ্যের মন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূলের সভাপতি স্বপন দেবনাথ বলেন, আমরা কোনও মৃত্যুকে সমর্থন করি না। তবুও বলব, তফসিলি কমিশন পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে।