দক্ষিণ ২৪ পরগনার ১০ শতাংশ বুথে দুই সংখ্যাও ছোঁয়নি বিজেপি
বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর সব দলই পর্যালোচনায় বসেছে। বুথভিত্তিক কেমন ফল হয়েছে, এই নিয়ে চলছে আলোচনা। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় তা করতে গিয়ে চোখ কপালে ওঠার মতো অবস্থা বিজেপির। দক্ষিণ ২৪ পরগনা (South 24 Parganas) জেলায় ১১,২৭৯টির মধ্যে তারা প্রায় ১০ শতাংশ বুথে এক সংখ্যায় ভোট পেয়েছে। অর্থাৎ বুথগুলিতে তাদের পাওয়া ভোট ১০টিরও কম। আবার ৪০টি বুথে খাতাই খুলতে পারেনি গেরুয়া শিবির। তাছাড়া ১০ থেকে ৯৯-এর মধ্যে ভোট পাওয়া বুথের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। জেলার একাধিক কেন্দ্রে বিজেপি সার্বিকভাবে ভোট বাড়াতে সক্ষম হলেও বহু বুথেই কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে তারা।
বিগত লোকসভা নির্বাচনে একমাত্র এই জেলাতেই বিধানসভা ভিত্তিক ফলাফলে একটি কেন্দ্র থেকেও লিড নিতে ব্যর্থ হয়েছিল গেরুয়া শিবির। এবারের নির্বাচনেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। উল্টে এবারের বুথভিত্তিক ফল উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে পদ্ম শিবিরের। তার কারণ, জেলার সিংহভাগ গ্রামীণ বিধানসভায় বিভিন্ন বুথে তাদের ১০-এর নীচে ভোট পাওয়ার প্রবণতা সব থেকে বেশি। সব মিলিয়ে ১০৬৫টি বুথে নামমাত্র ভোট পেয়েছে বিজেপি। তার মধ্যে সব থেকে সব থেকে শোচনীয় অবস্থা ভাঙড়ে। এই কেন্দ্রে বিজেপি ১৫১টি বুথে এক সংখ্যায় ভোট পেয়েছে। পাশাপাশি ১৭টি বুথে তাদের পাওয়া ভোট শূন্য, ‘জিরো’। এটি গত লোকসভা ভোটের তুলনায় অনেকটাই বেশি।
ভাঙড় ছাড়া ক্যানিং পূর্ব (১১০) এবং মেটিয়াবুরুজে (১০১) তাদের এক সংখ্যায় ভোট পাওয়া বুথের সংখ্যা ১০০-র বেশি। মগরাহাট পশ্চিম কেন্দ্রে বিজেপি ৭টি বুথে একটিও ভোট পায়নি। ৮১টি বুথে তাদের প্রাপ্ত ভোট ১০ অতিক্রম করেনি। কুলপি ও মহেশতলায় যথাক্রমে তিনটি এবং দুটি বুথে একটিও ভোট পায়নি বিজেপি। এছাড়া বাসন্তী (৭১), মগরাহাট পূর্ব (৭৩), ডায়মন্ডহারবার (৪১) কেন্দ্রে ১০-এর নীচে ভোট পাওয়া বুথের সংখ্যা কম নয়। এইসব বুথে বিজেপির প্রার্থীরা কোথাও একটি, কোথাও আবার পাঁচটি করে ভোট পেয়েছেন। অপরদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের ঝুলিতে জমা পড়েছে সিংহভাগ ভোট। জেলার ৩১টি বিধানসভার মধ্যে ১৬টিতে একটিও ভোট পায়নি বিজেপি, এমন বুথ রয়েছে।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, যেসব বুথে বিজেপি (BJP) শূন্য বা দশের নীচে ভোট পেয়েছে, সেখানে সংযুক্ত মোর্চা তুলনায় ভালো ভোট পেয়েছে। তৃণমূলের ব্যবধান এবার প্রায় সব কেন্দ্রেই বেড়েছে। কারণ হিসেবে রাজনৈতিক মহলের মতে, বিজেপিকে একটিও ভোট নয় বলে যে প্রচার বিভিন্ন জায়গায় করা হয়েছিল, তার প্রভাব জেলার বহু বুথে পড়েছে। শাসকদলের প্রার্থীদের ঢেলে ভোট দিয়েছেন সাধারণ মানুষ। ফলে এইসব বুথ থেকে খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে বিজেপিকে। তবে গেরুয়া শিবিরকে কিছুটা স্বস্তিতে রেখেছে শহরের বিধানসভাগুলি। কসবা এবং মেটিয়াবুরুজ ছাড়া বাকি চার কেন্দ্রে একটিও বুথে এক সংখ্যায় বা শূন্য ভোট পায়নি তারা।