এই প্রথম রাজ্যে প্যাথলজিক্যাল ময়নাতদন্ত হবে করোনায় মৃতের
করোনা কেড়ে নিল গণদর্পণের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং মরণোত্তর দেহদান আন্দোলনের পথিকৃৎ ব্রজ রায়কে। তাঁর দেহের প্যাথলজিক্যাল ময়নাতদন্ত (pathological autopsy) হবে। রাজ্যে এই প্রথম কোনও করোনায় মৃতের ময়নাতদন্ত করা হতে চলেছে। মরণোত্তর দেহদান যাঁর জীবনের প্রধান অঙ্গীকার ছিল, তাঁর দেহই হবে এখন করোনার গবেষণায় চিকিৎসক এবং গবেষকদের কাছে প্রধান আকর্ষণ। গণদর্পণের সম্পাদক শ্যামল চট্টোপাধ্যায় জানান, স্বাস্থ্যদপ্তরের কাছে ব্রজবাবুর দেহ গবেষণার জন্য অটোপসি করার আবেদন জানানো হয়েছে। তাতেই সিলমোহর দিয়েছে স্বাস্থ্যদপ্তর। আজ, আর জি কর হাসপাতালে তাঁর ময়নাতদন্ত হবে। সপ্তাহখানেক আগে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় এস এস কে এম হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ব্রজবাবু। এরপরে তাঁর কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসে। সঙ্গে সঙ্গে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। এদিন সকালে জীবনাবসান হয় তাঁর।
এদিকে, করোনা টিকা (Covid Vaccine) দ্বিতীয় ডোজ কে, কীভাবে, কোথা থেকে পাবেন তাই নিয়ে মানুষের মধ্যে শুরু হয়েছে বিভ্রান্তি। তা থেকে সমাধান সূত্রে পৌঁছল রাজ্য সরকার। দ্বিতীয় ডোজ সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য পৌঁছে যাবে গ্রাহকের মোবাইল নম্বরে। মেসেজের আকারে রাজ্য সরকারের তরফে সেই তথ্য পৌঁছে দেওয়া হবে দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণকারীদের কাছে। টিকা কবে পাওয়া যাবে, কোথা থেকে পাওয়া যাবে এবং এই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য পৌঁছে যাবে গ্রাহকের হাতের মুঠোয়। একইসঙ্গে, প্রথম ডোজের টিকার সংখ্যাও বাড়ানো হচ্ছে বলে রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে খবর। প্রথম টিকাকরণ এই মুহূর্তে ১০ শতাংশে এসে ঠেকেছে। তবে, প্রথম এবং দ্বিতীয় ডোজের মধ্যে সময়সীমা তিন থেকে চার মাস করে দেওয়ার ফলে হাতে অনেকটা সময় পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন আধিকারিকরা।
নিত্যদিনের নিজের রেকর্ড নিজেই ভাঙছে করোনা। বৃহস্পতিবারের স্বাস্থ্যদপ্তরের বুলেটিন অনুযায়ী, রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ২০ হাজার ৮৩৯। এদিন প্রাণ হারিয়েছেন ১২৯ জন। শুধুমাত্র কলকাতায় এদিন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩৯২৪ জন এবং মারা গিয়েছেন ৩৯। অন্যদিকে, উত্তর ২৪ পরগনায় আক্রান্তের সংখ্যা রাজ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ। বুলেটিন অনুযায়ী, সংখ্যাটা ৪১৩১ জন। করোনার প্রকোপে এদিন মারা যান রাজ্যের প্রোটোকল অফিসার সুজয় সরকার। নবান্ন সূত্রে খবর, বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বিধানসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রোটোকল অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ৫ মে রাজভবনে মন্ত্রিসভার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তিনি।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে, ৩০০টি বেড নিয়ে কলকাতা পুলিস হাসপাতালে সেফ হোম তৈরি করা হচ্ছে। যেখানে পুলিস কর্মীদের পাশাপাশি নাগরিকদের কোভিড চিকিৎসা করা হবে। মূলত উপসর্গহীনদের এখানে চিকিৎসা চলবে। এই সংক্রান্ত ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার এই হাসপাতালে আসেন পুলিস কমিশনার সৌমেন মিত্র। সেখানে অত্যাধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম রয়েছে কি না তা নিয়ে লালবাজারের শীর্ষকর্তাদের চিন্তাভাবনা করার নির্দেশ দিয়েছেন সিপি। করোনা সঙ্কটকালে বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়িয়েছে পর্ণশ্রী থানা। থানার উদ্যোগে অক্সিজেন (Oxygen) সহ একটি অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিনামূল্যে স্থানীয় রোগীরা হাসপাতালে পৌঁছে যেতে পারবেন। থানার অফিসার-ইন-চার্জ সৌম্য ঠাকুর জানিয়েছেন, পর্ণশ্রী থানা এলাকার বাসিন্দাদের যদি শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা দেখা যায়। সেক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে তাঁর বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে অক্সিজেন সিলিন্ডার। এই মর্মে থানায় দু’টি অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুত রাখা হয়েছে। বুধবার, রাজারহাট-গোপালপুর বিধানসভা এলাকার কৈখালিতে ৫০ বেড বিশিষ্ট একটি সেফ হোমের উদ্বোধন করেন বিধায়ক অদিতি মুন্সি।