রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

বঙ্গবিজেপিতে কোন্দলের চেষ্টা দলবদলুদের? ক্ষুণ্ন আদি নেতারা?

May 15, 2021 | 2 min read

রাজ্যের নেতাদের দিয়ে কিছু হবে না। কেন্দ্র কেন কিছু করছে না? শুক্রবার বাংলার নেতাদের নিয়ে বৈঠকে এমনই অভিযোগ শুনতে হল বিজেপি-র ভোট-বিপর্যয় মোকাবিলার দায়িত্বে সদ্য-আগত সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তরুণ চুঘকে। বিজেপি সূত্রে খবর, সরবদের অগ্রভাগে ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহ এবং বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। আদতে তৃণমূল থেকে-আসা ওই ‘ত্রয়ী’ বৈঠকে ‘অতি সরব’ হওয়ায় বিজেপি রাজ্য নেতাদের একটি অংশ খানিক ক্ষুন্ন। তবে প্রকাশ্যে এ নিয়ে কেউই কিছু বলতে নারাজ।

ভোট গণনার পর থেকেই জেলায় জেলায় বিজেপি কর্মীরা ‘আক্রান্ত’ বলে দাবি করে আসছে গেরুয়া শিবির। এর পরেই রাজ্য নেতাদের বিভিন্ন জেলায় পরিস্থিতি দেখতে পাঠান রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি নিজেও তিনটি জেলায় কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে যান। শুক্রবার সব নেতাদের জেলা সফরের রিপোর্ট দেওয়ার কথা ছিল‌। কলকাতার হেস্টিংসে বিজেপি-র দফতরে বৈঠকে তরুণ, দিলীপ ছাড়াও ছিলেন রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী। বিজেপি সূত্রে খবর, সেই বৈঠকেই নিজেদের এলাকার পরিস্থিতি জানানোর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের দাবিতে সরব হন শুভেন্দু, অর্জুন ও সৌমিত্র।

বৈঠকে উপস্থিত রাজ্য বিজেপি-র এক নেতা জানিয়েছেন, সবচেয়ে বেশি সরব ছিলেন অর্জুন। তিনি প্রার্থিতালিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। নোয়াপাড়া ও জগদ্দলের প্রার্থী তাঁর পছন্দমতো না হওয়ায় বিপর্যয় হয়েছে বলে দাবি করার পাশাপাশি অর্জুন এমনও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ দরকার। রাজ্য নেতাদের কারও কিছু করার ক্ষমতা নেই। একই সঙ্গে অর্জুন অভিযোগ করেন, আক্রান্ত কর্মীরা ফোন করলে অনেক পরাজিত প্রার্থী কথাও বলছেন না। বিজেপি সূত্রের খবর, এতটা চড়াসুর না থাকলেও নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দুর গলাতেও ছিল ক্ষোভ। শুক্রবারের বৈঠকে তিনিও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের হস্তক্ষেপ দাবি করেন।

অর্জুন, শুভেন্দুর মতোই সৌমিত্রও বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলে খবর। এমনকি, তাঁকে রাজ্য নেতৃত্ব বাঁকুড়ার বাইরে অন্য জেলা পরিদর্শনে যেতে বললেও তিনি স্পষ্ট ‘না’ বলে দেন। সৌমিত্র বৈঠকেএমনও বলেন যে, এলাকার লোকেদেরই সমস্যা মিটিয়ে ফেলতে হবে। প্রয়োজনে সংঘাতের মুখোমুখি হতে হবে। বস্তুত, সৌমিত্র উল্টে প্রশ্ন তোলেন, ২০০ কিলোমিটার দূরের নেতারা কেন এলাকায় এলাকায় যাবেন?

প্রসঙ্গত, অর্জুন-শুভেন্দু-সৌমিত্র তিন জনেই বিভিন্ন সময়ে তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন। সেই প্রসঙ্গ টেনে রাজ্য বিজেপি-র এক শীর্ষনেতার বক্তব্য, “দেখা গেল, যাঁরা একসময়ে আমাদের উপর অত্যাচার করেছেন, তাঁরাই বেশি সরব। এতদিন তাঁরা শাসকদলে থেকে রাজনীতি করেছেন। এখন টের পাচ্ছেন বিরোধী হওয়ার কী জ্বালা!” ওই নেতারা এমনও বলছেন যে, “ভোটে জয় পেলে এঁরা সকলেই সাফল্য দাবি করতেন। কিন্তু এখন কর্মীদের পাশে থাকার দরকার হতেই নেতৃত্বের দিকে আঙুল তুলছেন। ক’দিন আগেও তো এঁরা হাবেভাবে নেতা ছিলেন।”

বৈঠক নিয়ে শুভেন্দু-অর্জুন এবং সৌমিত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কেউ ফোনে সাড়া দেননি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#suvendu adhikari, #Arjun singh, #soumitra khan, #bjp

আরো দেখুন