প্রতিটি পুরসভা এলাকায় বানানো হবে বৈদ্যুতিক চুল্লি
করোনায় (COVID 19) মৃতের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। এই দেহ সৎকারের ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সরকারকে। তাই প্রতিটি পুরসভা এলাকায় বৈদ্যুতিক চুল্লি বানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর জন্য একটু নির্জন জায়গা বা নদীর ধারে এক বিঘা জমির খোঁজ করা হচ্ছে। পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর ওই চুল্লি তৈরি করে দেবে। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার উত্তর ২৪ পরগনার ২৬টি পুরসভার চেয়ারম্যান ও মুখ্য প্রশাসকের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন পুরমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। সেখানে পুরদপ্তর, কেএমডিএ’র অফিসার ও ইঞ্জিনিয়াররা ছিলেন। ওই বৈঠকে প্রতিটি পুরসভায় বৈদ্যুতিক চুল্লি সহ শ্মশানঘাট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই বৈঠকে পঞ্চয়েত দপ্তরের যুগ্মসচিব দিব্যেন্দু দাসও উপস্থিত ছিলেন। সেখানে গ্রামীণ এলাকায় করোনায় মৃতদের দাহ করার বিষয়ে পঞ্চায়েত দপ্তরকে উদ্যোগী হতে বলা হয়েছে। এ নিয়ে তিনি পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গেও কথা বলেছেন। পঞ্চায়েত এলাকাতেও যাতে আলাদা করে করোনায় মৃতদের দাহ করার জন্য বৈদ্যুতিক চুল্লি তৈরি করা যায়, তার জন্য পরিকল্পনা করছে রাজ্য সরকার।
কিছুদিন ধরেই করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়েছে। উত্তরপ্রদেশে গঙ্গায় মৃতদেহ ভাসিয়ে দেওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ বেড়েছে এ রাজ্যে। শহর কলকাতায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ধাপার চুল্লিকে মাঝেমধ্যে বিশ্রাম দিতে হচ্ছে। সপ্তাহে দু’দিন নিমতলা শ্মশানে শুধু করোনায় মৃতদের এখন দাহ করা হয়। শহর লাগোয়া খড়দহ, কামারহাটি, উত্তরপাড়ার মতো শ্মশানগুলিতে রাত ১১টার পর থেকে করোনায় মৃতদের দাহ করা হচ্ছে। এর ফলে অন্য রোগে কেউ মারা গেলে দাহ করতে রাতভর অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
গত কয়েকদিন ধরেই উত্তর ২৪ পরগনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় প্রশাসনিক মহলে চিন্তা বেড়েছে। ওই জেলায় গড়ে সাড়ে তিন হাজারের বেশি রোগী আক্রান্ত হচ্ছেন প্রতিদিন। মারা যাচ্ছেন ২৫-৩০ জন। আর গোটা রাজ্যে গড়ে মারা যাচ্ছেন ১২৫ জনের মতো। রাজ্যে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ২০ হাজারের উপর। এত মৃতদেহ সৎকার করাই এখন সরকারের মাথাব্যথার অন্যতম কারণ। শুধুমাত্র ধাপার চুল্লি সৎকারের লোড নিতে পারছে না। তাই প্রতিটি পুরসভা এলাকায় চুল্লি বানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পুরমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (Chandrima Bhattacharya) বলেন, করোনায় যাঁরা মারা যাচ্ছেন, সংক্রমণের ভয়ে সব জায়গায় তাঁদের দাহ করা যাচ্ছে না। কয়েকটি শ্মশান নির্দিষ্ট করা হয়েছে। রাতের দিকে সেখানে দাহ করা হচ্ছে। এবার চুল্লির সংখ্যা বাড়ানোর জন্য প্রতিটি পুরসভাকে বলা হয়েছে। এর জন্য প্রতিটি জায়গায় এক বিঘা করে জমি দরকার। সেই জমির খোঁজ করতে বলা হয়েছে। জমির সন্ধান পেলে পুরদপ্তর দ্রুততার সঙ্গে চুল্লি বানিয়ে দেবে।