রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

টিকা ঘাটতি মেটাতে ‘গ্লোবাল টেন্ডার’ ডাকতে চলেছে রাজ্য সরকার

May 16, 2021 | 2 min read

প্রতিষেধক পেতে এ বার ‘গ্লোবাল টেন্ডার’ ডাকতে চলেছে রাজ্য সরকার। গোটা বিশ্বে যত নামজাদা প্রতিষেধক উৎপাদনকারী সংস্থা রয়েছে, তাদের কাছে জানতে চাওয়া হবে, তারা রাজ্যকে কত টিকা দিতে পারবে। সেই তথ্য জেনে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির থেকে সরাসরি প্রতিষেধক কিনে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার। এক-দু’দিনের মধ্যেই এই টেন্ডার ডাকা হবে বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, কোভিড (Covid 19) সংক্রমণ ঠেকানোর অন্যতম শর্তই হল যত বেশি সম্ভব মানুষকে প্রতিষেধকের আওতায় নিয়ে আসা। কিন্তু প্রতিষেধকের ঘাটতির কারণে রাজ্যে টিকাকরণের গতি সরকারের উৎকণ্ঠা ক্রমশ বাড়াচ্ছে। সরকারি বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, এখনই এ নিয়ে পদক্ষেপ করা না হলে বিপদ আরও বাড়তে পারে। সেই কারণেই বিদেশি সংস্থাগুলির সঙ্গে যোগাযোগের জন্য এই ‘গ্লোবাল টেন্ডার’ ডাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দেশীয় প্রতিষেধক সংস্থাগুলির সঙ্গেও যোগাযোগ করছে রাজ্য। কোনও দেশীয় সংস্থা কত সংখ্যক প্রতিষেধক দিতে পারবে, তা জেনে তাদেরও বরাত দেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সম্প্রতি একাধিকবার লিখিত ভাবে প্রতিষেধক কেনার অনুমতি চেয়েছিলেন কেন্দ্রের কাছে।

প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “প্রতিষেধকের দাম নিয়ে এখন আর কোনও বিভ্রান্তি নেই। ফলে রাজ্য প্রয়োজন মতো প্রতিষেধক কিনে নিতে প্রস্তুত। পদ্ধতি মেনে সেই পদক্ষেপ শীঘ্রই হতে চলেছে। এর জন্য পৃথক ভাবে অর্থ হাতে রাখা হয়েছে। এক-একটি সংস্থার প্রতিষেধকের দাম এক-এক রকম। ফলে কোন সংস্থা কত টিকা দিতে পারবে, তার উপরে খরচটা নির্ভর করছে।”

কেন এই জরুরি পদক্ষেপ? স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, রাজ্যের মোট ৭ কোটি ১৭ লক্ষের মতো মানুষকে প্রতিষেধকের আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত প্রতিষেধক পেয়েছেন মাত্র ১ কোটি ২৪ লক্ষ মানুষ। শতাংশের হিসেবে তা ১৭%-এর মতো। সবিস্তার তথ্য অনুযায়ী, ৪৫ বছরের বেশি বয়স্ক প্রায় ২ কোটি ৮৭ লক্ষ মানুষকে প্রতিষেধক দেওয়ার কথা। কিন্তু এই সংখ্যার মধ্যে ৮৯ লক্ষ (৩০%) মানুষ এতদিন পর্যন্ত প্রথম ডোজ পেয়েছেন। দু’টি ডোজই পেয়েছেন ৩৫ লক্ষ (১২%) মানুষ। সব মিলিয়ে এই গোত্রের প্রায় ৫০% মানুষের প্রতিষেধক পাওয়া বাকি রয়েছে। ১৮ থেকে ৪৪ বছরের মধ্যে ৪ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষকে প্রতিষেধক দেওয়ার প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মাত্র ১২০০ জনকে তা দেওয়া গিয়েছে।

প্রশাসনিক ব্যাখ্যায়, এই কারণে প্রতিষেধকের জোগান নিয়ে শুরু থেকে সরব ছিল রাজ্য। প্রসঙ্গত, বিধানসভা নির্বাচনের শুরু থেকেই প্রতিষেধক নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তৃতীয়বার শপথ নেওয়ার পর থেকেই তিনি প্রধানমন্ত্রীকে টিকার জোগান নিয়ে একের পর এক চিঠি লিখেছেন। তাঁর বক্তব্য, যে সব দেশে টিকা পাঠানো হয়েছে, সেখান থেকে টিকা এনে এ দেশের টিকা-ঘাটতি মেটাক কেন্দ্র। এমনকি, প্রতিষেধক উৎপাদনের জন্য জমি এবং সহযোগিতা দিতে রাজ্য সরকার যে প্রস্তুত সে কথাও প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন তিনি। রাজ্যে এখন দৈনিক কোভিড সংক্রমণের সংখ্যা ২০ হাজার পেরিয়ে গিয়েছে। তাই কার্যত লকডাউনের মতো নিয়ন্ত্রণও আরোপ করতে হচ্ছে সরকারকে। কিন্তু এর সঙ্গে প্রতিষেধকের সুরক্ষা থাকলে কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইটা আরও জোরদার ভাবে করা যেত বলে মনে করছেন প্রশাসনিক কর্তারা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Mamata Banerjee, #Coronavirus in West Bengal

আরো দেখুন