সিবিআই-বিকাশ যোগ, সোশ্যাল মিডিয়া আবার উত্তাল রাম-বাম-বিজেএম থিয়োরি নিয়ে
“বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বামপন্থীদের রাজ্যসভার সাংসদ আর বিজেপির প্রধান আইনজীবী!! সত্য সেলুকাস কি বিচিত্র এই দেশ…” – গতকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় এই পোস্টটি করেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ অর্পিতা ঘোষ। এর পরেই একটি বহু-প্রচলিত থিয়োরি নিয়ে জ্বলে ওঠে সোশ্যাল মিডিয়া- রাম-বাম বা বিজেএম থিয়োরি। সিপিএম ও বিজেপির তলায় তলায় যোগসাজশের থিয়োরি।
প্রেক্ষাপটটা সাজিয়ে দিয়েছিলো বিজেপির হাইকম্যান্ড। সোমবার সকালেই নারদ কাণ্ডে গ্রেপ্তার করা হয় রাজ্যের মন্ত্রী তথা প্রাক্তন মেয়র ফিরহাদ হাকিম এবং সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে। সেই সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয় কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রকে। এই ৩ জনের সঙ্গে তালিকায় ছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ও। জানা যায়, সিবিআই পক্ষের কৌশলী হিসাবে আছেন বামপন্থীদের রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।
বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য হচ্ছেন এলিট বামপন্থী। তিনি মাটিতে নেমে কোনও দিন বুথের রাজনীতি করেননি। নিন্দুকেরা বলেন, তিনি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্যের পদলেহন করে ত্রিপুরার এডভোকেট জেনারেল হয়েছিলেন, কলকাতার মেয়র হয়েছিলেন ইত্যাদি। ২০২১শে বাংলার নির্বাচনের ফল বেরোনোর পর তিনি বলেন ‘এই ফলে খুশী হয়েছে আর.এস.এস ও সিপিআইএম বিরোধী সমস্ত শক্তি। … মমতার জয় তাই নি:সন্দেহে ফ্যাসিবাদী শক্তির জয়।’ অন্যদিকে তারই সহকর্মী কান্তি গাঙ্গুলি, যিনি মাটিতে নেমে রাজনীতি করে আসছেন, বলেন, “…ধন্যবাদ জানাই বাংলার মানুষকে, যার নেতৃত্বেই হোক না কেন তাঁরা মৌলবাদী শক্তিকে প্রতিহত করতে পেরেছেন। রাজ্যবাসী সচেতনতার পরিচয় দিয়েছেন।”
আসলে ২০১৯এর সাধারণ নির্বাচনে বামফ্রন্টের ভোট কমে যাওয়া, আর সেই ভোট গিয়ে বিজেপিতে ঢুকে পড়ার কিছু আগেই রাম-বাম থিয়োরি জন্ম নেয়। তারপর, ২০২১এর আগে স্লোগান ওঠে, ‘একুশে রাম, ২৪শে বাম’। অর্থাৎ, ২০২১শে বাম ভোট ট্র্যান্সফার করে বিজেপিকে জেতানো হোক, তাহলেই ২০২৪শে বামফ্রন্ট ক্ষমতায় আসবে। অনেকটা মূর্খের স্বর্গে বাস করার মত ভাবনা। তৃনমুলের ২১৩টা আসন পাওয়া, যা ২০১৬র থেকে বেশি, এবং বিজেপির ৩ থেকে ৭৫ হয়ে যাওয়া আবার প্রমান করে দিলো, সিপিএম শূন্য থেকেও বিজেপির মত ফ্যাসিবাদী শক্তিকে বাংলায় ঘাঁটি গড়তে সাহায্য করলো। আর চোরের মায়ের বড়ো গলার রীতি মেনেই বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য চিৎকার করে বলে বেড়ালেন, মমতার জয় ফ্যাসিবাদী শক্তির জয়।
শাক দিয়ে মাছ ঢাকা যায় না। সত্য প্রকাশ পেলো অচিরেই যখন সত্যিকারের ফ্যাসিবাদী শক্তির হয়ে মামলা করতে এলেন বিকাশবাবু। খবর বেরোতেই দাবানল লাগলো সোশ্যাল মিডিয়ায়। এখন এই দাবানলকে কিভাবে নেভাবেন বামপন্থীরা, সেটাই দেখার বিষয়।