নেতা-মন্ত্রীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে গর্জে উঠল বাংলা
নারদ কাণ্ডে তৃণমূল কংগ্রেসের তিন নেতাকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় গর্জে উঠল বাংলা। বিজেপির প্রতিহিংসার রাজনীতির বিরুদ্ধে সোমবার মালবাজার থেকে মালদহ, মুর্শিদাবাদ থেকে মন্দিরবাজার, নদীয়া থেকে নৈহাটি সর্বত্র তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের ক্ষোভের বিস্ফোরণ দেখা গিয়েছে। জেলায় জেলায় নরেন্দ্র মোদির কুশপুতুল দাহ, পথ অবরোধ, টায়ার জ্বালানো সহ প্রতীকী আন্দোলনে উত্তেজনা ছড়ায়। এদিন দুপুর বেলাতেই শাসকদলের কর্মিমহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। দিনভর তার রেশ দেখা গিয়েছে। সন্ধ্যার পরে ধৃত নেতা-মন্ত্রীদের জামিন মঞ্জুর হওয়ার পরে ক্ষোভের আগুন কিছুটা প্রশমিত হয়। তবে রাতের দিকে তাঁদের জামিনে স্থগিতাদেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। এদিন উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গ, জেলা সদর থেকে গ্রাম সর্বত্র তৃণমূলকর্মী তো বটেই, আমজনতার একাংশও ক্ষোভের সঙ্গে প্রশ্ন তুলেন নারদকাণ্ডে অভিযুক্ত দলবদলুদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না কেন?
ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও মদন মিত্রকে সিবিআই নারদ কাণ্ডে গ্রেপ্তার করার খবর ছড়িয়ে পড়তেই দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ শুরু হয়ে যায়। মন্ত্রী, নেতা থেকে কর্মীরা ব্যাপকভাবে বিক্ষোভে সামিল হয়।
এদিন বেলা ১২টাতেই হাওড়ার ধুলাগড়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। বসিরহাট টাউন হলের সামনে, মাটিয়াবাজারে, বনগাঁতে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখায় শাসকদলের সদস্যরা। অশোকনগরে ক্ষুব্ধ কর্মীরা মোদি’র কুশপুতুল দাহ করে। বারুইপুর ও সূর্যপুরে পথ অবরোধ শুরু হয়ে যায়। হুগলির বাঁশবেড়িয়াতে এদিন দুপুর বেলাতেই পথ অবরোধ, বিক্ষোভ শুরু হয়। ধনেখালি, সুগন্ধ্যা মোড়ে প্রতীকী বিক্ষোভ হয়। আরামবাগের গৌরহাটি মোড়ে পথ অবরোধ, বিক্ষোভ সভা করে নেতৃত্ব। গোঘাট, খানাকুল, তারকেশ্বরে রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে। মদন মিত্রের বিধানসভা কেন্দ্র কামারহাটির রথতলা মোড়ে পুর নেতৃত্ব প্রতিবাদ বিক্ষোভ করে। সেখান থেকে রাজ্যপাল ও প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের দাবি ওঠে। বিটি রোডে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভে সঙ্গে বারাকপুরে শুরু হয় পথ অবরোধ। নদীয়ার গয়েশপুর চেকপোস্ট, চাকদহ, বেথুয়াডহরি, কৃষ্ণনগর, শান্তিপুর, চাপড়ায় পথ অবরোধ, বিক্ষোভ হয়েছে। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভও হয়।
পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরেও তীব্র বিক্ষোভ হয়েছে। হলদিয়া, কোলাঘাট সহ জেলার একাধিক জায়গায় পথ অবরোধ করে শাসকদলের ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। পিংলা, এলাহিচক, দাঁতন, ডেবরা সহ একাধিক জায়গায় অবরোধের সঙ্গে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগে প্রধানমন্ত্রীর কুশপুতুল দাহ করা হয়। জঙ্গলমহলেও অবরোধ, প্রতিবাদ সভা হয়েছে। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থেকে পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল, দুর্গাপুর সহ বহু জায়গায় মোদির কুশপুতুল জ্বালিয়ে বিক্ষোভ হয়। পূর্ব বর্ধমানের কার্জন গেট, বীরহাটা, মেমারি সহ একাধিক জায়গায় সিবিআই ও বিজেপি বিরোধী রোষ আছড়ে পড়ে। পথ অবরোধ, প্রতীকী অবস্থান বিক্ষোভ, কুশপুতুল দাহ, কিছুই বাকি থাকেনি। বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছে মুর্শিদাবাদও। এদিনের বিক্ষোভের রেশ উত্তরবঙ্গে জেলাগুলিতে ছড়িয়ে পড়েছিল। কোচবিহারের মাথাভাঙা, দিনহাটা সহ একাধিক জায়গায় পথ অবরোধ হয়।
জলপাইগুড়ির দোমোহনি, উত্তর দিনাজপুরের ডালখোলাতে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে তৃণমূল কর্মীরা। দক্ষিণ দিনাজপুরের গ্রাম থেকে শহর সর্বত্র ধিক্কার মিছিল হয়েছে। মালদহের গাজলের কদুবাড়িতে বিক্ষোভ হয়। প্রকৃতির প্রবল দাবদাহের মধ্যেই বিক্ষোভের রণংদেহী চেহারায় আক্ষরিক অর্থেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল তামাম বাংলা। এই মুহূর্তে