ভোটের ডিউটিতে উত্তরপ্রদেশে মৃত ১৬০০ শিক্ষক, যোগী সরকারের দাবি ৩, ক্ষোভ
কথা শোনেনি কমিশন (Election Commission)। জোর করে ভোটের ডিউটিতে পাঠানো হয়েছিল শিক্ষকদের। করোনা পরিস্থিতিতে চলে গিয়েছে বহু শিক্ষকের প্রাণ! উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনের দাবি, নয় নয় করে সংখ্যাটা প্রায় ১৬০০ পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু সরকার বলছে অন্য কথা। যোগী (Yogi Adityanath) প্রশাসনের দাবি, ১৬০০ নয়, পঞ্চায়েত ভোটের ডিউটিতে গিয়ে উত্তরপ্রদেশে মৃত্যু হয়েছে মাত্র ৩ জন শিক্ষকের। তাঁদের পরিবারের প্রতি সরকার সহমর্মী। এবং তাঁদের অনুদান দেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে।
উত্তরপ্রদেশের বুনিয়াদি শিক্ষা দপ্তরের দাবি, এখনও পর্যন্ত জেলাশাসকদের পাঠানো রিপোর্ট অনুযায়ী রাজ্যে ভোটের ডিউটিতে গিয়ে ৩ জন শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। অথচ, উত্তরপ্রদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সংঘ, আর এস এস অনুমোদিত রাষ্ট্রীয় শিক্ষক মহাসংঘ ও অন্যান্য শিক্ষক সংঠনের দাবি এই সংখ্যাটা প্রায় ১৬০০। কিন্তু সরকারের পেশ করা সংখ্যা আর শিক্ষক সংগঠনের দাবির মধ্যে এই বিস্তর ফারাক কেন? উত্তরপ্রদেশের বুনিয়াদি শিক্ষা দপ্তর বলছে, একজন সরকারি কর্মী শুধুমাত্র ভোটের ডিউটির জন্য বাড়ি থেকে বেরনো এবং ডিউটি শেষে বাড়িতে ঢোকা পর্যন্ত সময়টুকুই সরকারের দায়িত্বে থাকেন। এর আগে বা পরে যদি তাঁর মৃত্যু হয়, তাহলে সেটা ভোটের ডিউটিতে মৃত্যু বলে গণ্য হবে না। উত্তরপ্রদেশে পঞ্চায়েত ভোট (UP panchayat elections) হয়েছিল ১০ এপ্রিল। তার একদিন আগে থেকে একদিন পরে পর্যন্ত (৯ থেকে ১১ এপ্রিল) কর্মীরা ভোটের ডিউটিতে ছিলেন। ওই সময় মৃত্যু হয়েছে মাত্র তিন জনের।
সরকারের এই ঘোষণায় ক্ষুব্ধ শিক্ষক সংগঠনগুলি। উত্তরপ্রদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সংঘের প্রধান দীনেশচন্দ্র শর্মা বলছেন, সরকারি স্কুলের কর্মীদের প্রতি বুনিয়াদি শিক্ষা দপ্তরের এই মানসিকতা একেবারেই দুর্ভাগ্যজনক। আসলে শিক্ষক সংগঠনগুলি আগে থেকেই জানিয়ে আসছে, উত্তরপ্রদেশের পঞ্চায়েত ভোটের সময় কোনওরকম স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়নি। হাজার হাজার শিক্ষক ভোটের ডিউটিতে গিয়ে করোনার কবলে পড়েছেন। অনেকেরই মৃত্যু হয়েছে পরে। অথচ, সরকার তা মানতেই নারাজ।
প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশ সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে, যে সমস্ত ভোটকর্মীর করোনায় মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের পরিবারের জন্য অন্তত ১ কোটি টাকা ক্ষতিপুরণ দেওয়া হোক। আদালতের বক্তব্য, এই সমস্ত ভোটকর্মীদের কোনওরকম নিরাপত্তা ছাড়াই ভোটের ডিউটি করতে বাধ্য করেছে কমিশন। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্যের মৃত্যু হলে, কী সমস্যা যে হয় সেটা বুঝে এই ক্ষতিপূরণের পরিমাণ অন্তত এক কোটি করা উচিত সরকারের। কিন্তু উত্তরপ্রদেশ সরকার যে তিনজনের মৃত্যুর কথা স্বীকার করেছে, তাঁদেরও আগের নিয়মেই ক্ষতিপুরণ দেবে।