টানা তিন মাস সিবিআই ডিরেক্টর পদ ফাঁকা, উঠছে প্রশ্ন
ফেব্রুয়ারি থেকে মে। টানা তিন মাস দেশের সর্বোচ্চ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (সিবিআই) (CBI) কোনও পূর্ণাঙ্গ ডিরেক্টর নেই। ৩ ফেব্রুয়ারি গুজরাত ক্যাডারের আইপিএস অফিসার তথা সিবিআই-এর অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর প্রভীন সিনহাকে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ডিরেক্টরের কার্যভার দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপর তিন মাস কেটে গেলেও পূর্ণ সময়ের ডিরেক্টর নিয়োগ করা হচ্ছে না। প্রশ্ন উঠেছে, পূর্ণ সময়ের ডিরেক্টর না থাকায় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন কে? বিষয়টি নিয়ে এতটাই জলঘোলা হয়েছে যে, সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে। সুপ্রিম কোর্টও জানতে চেয়েছে কেন সিবিআই ডিরেক্টর নিয়োগ করা হয়নি। অবশেষে আগামী সপ্তাহে সিবিআই ডিরেক্টর নিয়োগ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হতে চলেছে বলে খবর। সেখানেই বেছে নেওয়া হবে সংস্থার নতুন ডিরেক্টরকে। অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রতিকালের সবথেকে হাই প্রোফাইল যে মামলায় চার ভিআইপি নেতা-মন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা নিয়ে আলোড়ন হচ্ছে, সেই সিবিআইয়ের কোনও পূর্ণাঙ্গ ডিরেক্টরই নেই।
আদালতে কেন্দ্রীয় সরকার একাধিকবার জানিয়েছে, কয়েকটি বিশেষ কারণে সিবিআই ডিরেক্টর নিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় বৈঠক ডাকা যাচ্ছে না। সেই কারণগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল, লোকসভার কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত, তাই ওই বৈঠক করা যাচ্ছে না। দিল্লি স্পেশাল পুলিশ এস্ট্যাবলিশমেন্ট অ্যাক্ট ১৯৪৬ অনুযায়ী নিয়ম হল প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি একসঙ্গে বৈঠকে আলোচনায় স্থির করেন সিবিআই ডিরেক্টর কে হবেন। সেখানে কয়েকটি নাম নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। কিন্তু কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টে জানায় ২ মে নির্বাচনের ফলপ্রকাশের আগে ওই বৈঠক করা যাচ্ছে না। এরপর ২ মে চলে গেলেও কোনও বৈঠক হয়নি। অবশেষে আগামী ২৪ মে বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সেদিনই স্থির হবে নতুন সিবিআই ডিরেক্টর কে হবেন। তিন মাস কোনও পূর্ণ সময়ের ডিরেক্টর না থাকায় তাৎপর্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে সমস্যা তৈরি হয়। কারণ সিবিআই ডিরেক্টরের ক্ষমতা ও অধিকার অনেক বেশি। অন্তর্বর্তী সময়ের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সেই কারণেই সব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন না। রুটিন তদন্ত ছাড়া বাকি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত পূর্ণাঙ্গ সময়ের ডিরেক্টরই নেবেন।
এবার নতুন সিবিআই ডিরেক্টর হওয়ার দৌড়ে ১৯৮৪, ১৯৮৫ এবং ১৯৮৬ সালের আইপিএস অফিসাররাই এগিয়ে। এখনও পর্যন্ত রাকেশ আস্থানা, ওয়াই সি মোদি এবং সুবোধ জয়সওয়ালের নাম সিবিআই ডিরেক্টর হওয়ার চর্চায় আছে। রাকেশ আস্থানা বর্তমানে বিএসএফের ডিরেক্টর জেনারেল পদে আছেন। ওয়াই সি মোদি ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির প্রধান। আর সুবোধ জয়সওয়াল সিআইএসএফের ডিরেক্টর জেনারেল।