স্বাস্থ্য বিভাগে ফিরে যান

সাবধান, বাতাসে ৩৩ ফুট পর্যন্ত ছড়াতে পারে করোনা

May 21, 2021 | 2 min read

করোনার সংক্রমণ নিয়ে নাকানিচোবানির মধ্যেই নতুন করে চিন্তা বাড়াল মিউকোরমাইকোসিস বা ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’। করোনা (COVID19) রোগীদের মধ্যে এই সমস্যা বাড়তে থাকায় বিষয়টিকে মহামারীর তকমা দিল কেন্দ্র। একইভাবে সামনে এল কোভিড নিয়ে আর এক উদ্বেগজনক তথ্য। করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির ফলে নাক-মুখ থেকে নিঃসৃত সূক্ষ্ম কণা বাতাসের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে পারে ৩৩ ফুট (১০ মিটার) পর্যন্ত। তাই ডবল মাস্ক, বারবার হাত ধোয়া এবং ছ’ফুট দূরত্ব বজায় রাখার মতো কোভিড বিধিতে নতুন করে যুক্ত হল আরও একটি—যতটা সম্ভব দরজা জানলা খোলা রাখা। কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক পরামর্শদাতা ডঃ বিজয় রাঘবনের দপ্তর থেকে গাইডলাইন প্রকাশ করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, অফিস হোক বা বাড়ি, পর্যাপ্ত হাওয়া চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে। হাওয়ার গতি বাড়িয়ে বাতাসে ভেসে থাকা সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ সূক্ষ্ম কণা তাড়াতে হবে। তাই এগজস্ট ফ্যান ব্যবহারে জোর দিয়েছে কেন্দ্র।

একইসঙ্গে বলা হয়েছে, বাড়িতে অপরিচিত কেউ এলে অবশ্যই মাস্ক পরে তাঁর সামনে যাবেন। কারণ, উপসর্গহীন করোনা আক্রান্তরাও ভাইরাস ছড়াতে পারেন। তাই সাবধানতাই একমাত্র পথ। সমীক্ষার ভিত্তিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, একজন সংক্রামিত ব্যক্তি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এক মাসে ৪০৬ জন পর্যন্ত মানুষকে সংক্রামিত করতে পারেন। দেশের ২৫টি শহরে সমীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, মাত্র ১৪ শতাংশ মানুষ সঠিকভাবে নাক, মুখ, চিবুক ঢেকে মাস্ক পরেন। বাকিরা হয় মুখ ঢাকেন, নাক বাইরে থাকে… না হলে গোটা মাস্কটাই ঝোলে গলায়। তাই সঠিকভাবে ডবল মাস্ক অথবা এন-৯৫ মাস্ক পরেই বাইরে বেরনোর পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্র।

ভাইরাসের ভেসে বেড়ানোর ক্ষমতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দুশ্চিন্তা অবশ্যই বাড়িয়েছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস। আইসিএমআরের ডিজি ডাঃ বলরাম ভার্গব দ্ব্যর্থহীন ভাষায় তা স্বীকার করে নিয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, ইমিউনিটি কমে যাওয়া, এমনকী চিকিৎসার সময় কোভিড রোগীকে অতিরিক্ত স্টেরয়েড দেওয়ার ফলেও ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, করোনার ভাইরাস ‘সার্স কোভ-টু’ অগ্ন্যাশয়ে গিয়েও আঘাত হানছে। ফলে নতুন উপসর্গ দেখা দিচ্ছে—ব্লাড সুগার। এর থেকেও ব্ল্যাক ফাঙ্গাস জন্মাতে পারে। বেশ কয়েকটি রাজ্যে কোভিড রোগীদের মধ্যে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাই এটিকে মহামারী সংক্রান্ত আইনের অন্তর্ভুক্ত করতে রাজ্যগুলিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। যাতে কোথায় কতজন ব্ল্যাক ফাঙ্গাসেরও শিকার হচ্ছেন, সেটা যথাযথভাবে নথিভুক্ত হয়।

ইতিমধ্যেই করোনার সংক্রমণ দ্রুত চিহ্নিত করতে টেস্টের সংখ্যা ব্যাপক হারে বাড়ানো হয়েছে। গত দু’দিনে দৈনিক ২০ লক্ষেরও বেশি টেস্ট হয়েছে। যা রেকর্ড। আগামী জুন মাসের শেষে গিয়ে দৈনিক পরীক্ষার সংখ্যা ৪৫ লক্ষ করার টার্গেট নিয়েছে আইসিএমআর। টেস্টে দেখা গিয়েছে, দেশে পজিটিভিটির হার ক্রমশ কমছে। এক সপ্তাহ আগেই যা ছিল ২৩ শতাংশ, এখন তা দাঁড়িয়েছে ১৩ শতাংশে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২ লক্ষ ৭৬ হাজার ১১০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যাও কমে হয়েছে ৩ হাজার ৮৭৪ জন। তাই সামান্য হলেও আশার আলো দেখছে কেন্দ্র।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Coronavirus

আরো দেখুন