ঘূর্ণিঝড় যশের মোকাবিলায় সাইক্লোন শেল্টার হবে স্কুলেও
করোনা (COVID 19) সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তের মধ্যেই ঘূর্ণিঝড় যশের (Yaas) ভ্রুকুটি। উপকূল এলাকা থেকে মানুষজনকে সরিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখার সময় যাতে করোনা স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়, সেদিকে বিশেষ নজর দিচ্ছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। শুধু সাইক্লোন শেল্টার নয়, আশপাশে থাকা বড় স্কুল বাড়ি এবং অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিকেও আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহার করতে হবে বলে জেলাশাসক পি উলগানাথন নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর কথায়, এবার করোনা সংক্রমণ অনেকটাই ঊর্ধ্বমুখী। এক জায়গায় সবাইকে রেখে গাদাগাদি যেন না করা হয়। কোভিড বিধি মানতে গেলে আশপাশের আরও স্কুল ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিকে আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।
আগেরবারের থেকে শিক্ষা নিয়ে এই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে, আরও একটি বিষয় চিন্তা বাড়িয়েছে প্রশাসনের। কোভিড আক্রান্ত হয়ে যাঁরা হোম আইসোলেশনে রয়েছেন, তাঁদেরকে কোথায় সরানো হবে, তা নিয়েও উদ্বিগ্ন জেলার কর্তারা। আপাতত কয়েকটি ব্লক ঠিক করেছে, এমন আক্রান্তদের চিহ্নিত করে তাঁদের নির্দিষ্ট একটি স্কুলের মধ্যে রাখা হবে। অন্যান্য সাধারণ লোকের সঙ্গে যাতে এই রোগীদের মিশিয়ে না ফেলা হয়, সে ব্যাপারেও লক্ষ্য রাখা হবে। অন্যদিকে, ঘূর্ণিঝড়ের ধাক্কা সামলাতে জরুরি পদক্ষেপ নিয়ে বৃহস্পতিবার থেকেই কাজে নেমে পড়ল ব্লক ও মহকুমা প্রশাসন। গোসাবা, পাথরপ্রতিমা, কাকদ্বীপ সহ একাধিক এলাকায় সাইক্লোন শেল্টার ও তার আশপাশের স্কুলগুলি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং জীবাণুমুক্ত করার কাজ সেরে ফেলা হল এদিন। মথুরাপুর দু’নম্বর ব্লকের আধিকারিকরা দুর্বল নদীবাঁধ এলাকা পরিদর্শন করেন। যতটা সম্ভব কম ক্ষয়ক্ষতি যাতে হয়, সে কথা মাথায় রেখে বাঁধের আপদকালীন মেরামতির করে ফেলা হচ্ছে বেশ কিছু জায়গায়। তার পাশাপাশি উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে এদিন থেকেই স্থানীয় থানার পক্ষ থেকে মাইকিং করে সাধারণ মানুষকে সচেতন ও সতর্ক করে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
পাথরপ্রতিমা, নামখানা এবং সাগরের মত ব্লকে একাধিক দ্বীপ রয়েছে। সে সব জায়গায় আগে থেকেই যাতে শুকনো খাবার ও অন্যান্য সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া যায়, সে ব্যাপারে অফিসারদের পরামর্শ দিয়েছেন জেলাশাসক। উম-পুনের সময় যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। সেই আশঙ্কা এবারও করছেন আধিকারিকরা। তাই জরুরি ভিত্তিতে যাতে যোগাযোগ করা যায়, তার জন্য বিশেষ কিছু জায়গায় স্যাটেলাইট ফোন রাখার চিন্তাভাবনা চলছে। জেলা সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ঝড়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে, এমন কয়েকটি এলাকা চিহ্নিত করে, সেখানে বিপর্যয় মোকাবিলা দল আগে থেকেই রেখে দেওয়া যায় কি না, সেটা নিয়েও কথাবার্তাও চলছে। জেলার সদর কার্যালয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন ব্লকেও ঝড় নিয়ে বৈঠক হয়। যেমন বারুইপুর ব্লকের ১৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতে কন্ট্রোল রুম খোলার কথা জানিয়েছেন বিধায়ক বিভাস সর্দার। তিনি বলেন, পঞ্চায়েতে গাছ কাটার মেশিন দেওয়া হবে। বারুইপুর পুরসভাও দুটি গাছ কাটার আধুনিক যন্ত্র কিনবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।