ধেয়ে আসছে ‘যশ’-বিপর্যয়ের আশঙ্কা অনলাইন কাজে
আছড়ে পড়তে পারে যশ (Yaas)। এই আশঙ্কার সঙ্গে ফিরছে গতবারের আম্পানের স্মৃতি। ভিড় করে আসছে এক ঝাঁক দুশ্চিন্তা। কেউ ভাবছেন বাড়ি থেকে চলা অফিসের কাজ নিয়ে, কারও আবার উদ্বেগের কারণ বাড়িতে থাকা রোগী। নিত্য ব্যবহারের এবং পানীয় জল টেনে আনাও বহু মানুষের মাথাব্যথা। অনলাইন ক্লাস নিয়ে চিন্তিত বেসরকারি স্কুলগুলি। সব মিলিয়ে উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে সবার।
আম্পানের সময় দীর্ঘদিন বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না বসিরহাটের পায়েল মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে। তখন কষ্ট হলেও কোনওরকমে দিন কাটিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু কয়েক মাস হল একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় চাকরি পেয়েছেন তিনি। করোনার দৌরাত্ম্যে বাড়িতে থেকেই কাজ চলছে। কর্পোরেট পরিভাষায় যাকে বলে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ (Work From Home)। এবারে টানা এক সপ্তাহ বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকলে কী হবে, ভেবেই চোখে অন্ধকার দেখছেন পায়েল। হুগলির মাখলার বাসিন্দা সুব্রত সরকার বেঙ্গালুরুর একটি সফটওয়্যার সংস্থায় কাজ করেন। ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ চলায় বিগত কয়েক মাস হল বাড়িতেই ফিরে এসেছেন তিনি। এখানে ঘূর্ণিঝড়ের (Cyclone) কারণে ইন্টারনেট (Internet) এবং বিদ্যুৎ পরিষেবা (Electricity) ব্যাহত হলে ওই ক’দিন ছুটি চাওয়া ছাড়া কোনও উপায় থাকবে না বলেই আশঙ্কায় তিনি। উত্তরপাড়ার সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় আবার জানাচ্ছেন, অফিস থেকে যশ নিয়ে ইতিমধ্যেই সতর্কবার্তা এসেছে। কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বেশিদিন এই অবস্থা চললে ‘বিজনেস কন্টিনিউইটি ম্যানেজমেন্ট’ তাঁদের অন্যত্র সাময়িক বদলি করতে পারে।
সরকারি এবং বেসরকারি স্কুলের অধিকাংশেই গ্রীষ্মের ছুটি পড়ে গিয়েছে। তবে ব্যতিক্রমও যে নেই, তা নয়। যে স্কুলগুলিতে অনলাইন ক্লাস চলছে, তারাও সেগুলি বন্ধ হওয়ার চিন্তাভাবনা করছে। যেমন, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অধীনে দক্ষিণ কলকাতার একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে একাদশ শ্রেণির ‘ওরিয়েন্টেশন ক্লাস’ চলছে। শিক্ষকরা জানাচ্ছেন, উম-পুনে দীর্ঘদিন ক্লাস বন্ধ রাখতে হয়েছিল। এবারও সেই আশঙ্কা। একই মনোভাব অনলাইন ক্লাস চালানো কলেজগুলির।
কিন্তু কোভিড রোগী? নেবুলাইজার, বড় অক্সিজেন কনসেনট্রেটরের মতো মেশিনগুলি যে বিদ্যুতে চলে। সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকলে সমূহ বিপদ। বাড়িতে রোগী থাকলে বাইরে থেকে জল বয়ে আনা কি সম্ভব হবে? প্রহর তাই দুশ্চিন্তার।