রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

বিধানসভা নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয়, বেতন পাচ্ছেন না বিজেপির বিস্তারকরা

May 23, 2021 | 2 min read

বুথ থেকে জেলা—তাঁরাই ছিলেন পার্টির চোখ এবং কান। তাঁদের কাঁধে ভর দিয়ে ২০১৯ লোকসভায় আশাতীত সাফল্য পেয়েছিল বিজেপি। সেই বিস্তারকরাই এখন গেরুয়া শিবিরের কাছে ব্রাত্য। বিধানসভা ভোটে শোচনীয় হারের পর বিস্তারকদের উপর ব্যাপক হামলা-অত্যাচার চললেও, দলীয় নেতারা ফিরেও তাকাননি। শুধু তাই নয়, তাদের সাম্মানিক বা ‘বেতন’ বাবদ প্রাপ্য টাকা পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে না। দলীয় সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে ২৭৪ জন বিধানসভার বিস্তারক এবং আটজন জোন বিস্তারকের বকেয়া বাবদ প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা আটকে রেখেছে পার্টি। ফলে প্রায়  শ’পাঁচেক যুবকের ভবিষ্যৎ আজ গভীর অন্ধকারে। 


কী এই বিস্তারক যোজনা? রাজ্যজুড়ে বিজেপির সংগঠনকে মজবুত করতে কমবয়সি অবিবাহিত যুবকদের মাঠে নামানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়। তাদেরই গালভরা নাম বিস্তারক। যাদের কাজ ছিল, এলাকায় এলাকায় গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরা, বিজেপির ভোট স্তরে কমিটি গঠন এবং সংগঠন মজবুত বানানো। সদ্যসমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক পর্বে ২৯৪টি আসনের জন্য বিস্তারক বাছাই করে তাদের উপর একটি করে বিধানসভার ভার দেওয়া হয়েছিল। এরা প্রত্যেকেই নিজেদের জেলার বাইরে কোনও কেন্দ্রের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। প্রতি মাসে তাদের থাকা-খাওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থও বরাদ্দ করেছিল বিজেপি। সেটা নয় নয় করে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। 


জানা গিয়েছে, বিধানসভা ভোটের মাত্র পাঁচ মাস আগে বিস্তারক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়। সেই নিয়োগ ছিল বিধানসভা ভিত্তিক। এদিকে, প্রতিটি বিধানসভার দায়িত্ব নিয়ে বিভিন্ন প্রদেশ থেকে চলে আসেন তিন থেকে চারজন কেন্দ্রীয় নেতাও। তাঁরা এই বিস্তারকদের কার্যত ‘চাকর’ মনে করতেন। দলীয় বৈঠকে বিস্তারকদের দিয়ে চা, খাবার আনানো হতো। সামগ্রিকভাবে পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে গিয়েছিল যে, এই ভোটে দলের হয়ে কাজই করতে পারেননি তারা।


ভোটের পর পরিস্থিতি আরও দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। এ প্রসঙ্গে বজবজ বিধানসভার বিস্তারক সুব্রত সর্দার বলেন, ‘ভোটের পর থেকে আমার এবং পরিবারের উপর হামলা হচ্ছে, অথচ পার্টির নেতারা নিশ্চুপ।’ একই অভিযোগ কুলতলি বিধানসভার বিস্তারক শচীন ঘোষের। তাঁর বক্তব্য, ‘খুব দরিদ্র পরিবার থেকে বিজেপির হয়ে কাজ করতে এসেছি। সামান্য সান্মানিক, সেটাও আটকে রেখেছে পার্টি। এই দুর্দিনে কোনও নেতাই ফোন ধরছেন না।’ উত্তরবঙ্গ জোনের বিস্তারক ছিলেন অরিন্দম আদক। দলের দুই শীর্ষ নেতার সাথে ঝামেলার জেরে তাঁকে খড়দহ বিধানসভার বিস্তারক পদে নামিয়ে আনা হয়েছিল। ভবিষ্যতে কী করবেন, তা নিয়ে এখন দুশ্চিন্তায় তিনি। রাজ্য বিজেপির বিস্তারক যোজনার দায়িত্বে থাকা নেতা দীপাঞ্জন গুহ অবশ্য জানিয়েছেন, চন্দননগর বিধানসভার প্রার্থী ছিলাম। বিস্তারক যোজনার কাজে তাই সময় দিতে পারিনি। গেরুয়া শিবিরের তরফে সেই ভার দেওয়া হয়েছিল উত্তরপ্রদেশের নেতা দীনেশ সিংকে। ভোটে গো হারা হয়ে তিনি এখন বেপাত্তা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Bengal, #salary, #bjp, #West Bengal Elections 2021

আরো দেখুন