ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণে শীর্ষে গুজরাত
দেশজুড়ে কমতে শুরু করেছে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ (COVID Second Wave)। কিন্তু সেই সামান্য স্বস্তির মধ্যেই দেখা দিয়েছে নতুন বিপদ—ব্ল্যাক ফাঙ্গাস (Black Fungus) । নতুন এই রোগ চরম উদ্বেগে ফেলেছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলিকে। ব্ল্যাক ফাঙ্গাস (মিউকোরমাইকোসিস) সংক্রমণের ক্ষেত্রে দ্রুত শীর্ষে চলে গিয়েছে গুজরাত। সে রাজ্যে এই নতুন রোগে আক্রান্ত ২,২৮১ জন। অন্যদিকে, এখনও পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে এর সংক্রমণ সর্বনিম্ন। শনিবার কেন্দ্রীয় সরকার প্রকাশিত তালিকায় দেখা যাচ্ছে, বাংলায় ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র ১। যদিও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই তথ্য সঠিক নয়।
উত্তর-পূর্ব ভারত এবং উত্তর ভারতের হিমালয় সংলগ্ন ক্ষুদ্র রাজ্যগুলিতে এখনও পর্যন্ত ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সেভাবে থাবা বসায়নি। তবে এদিন উত্তরাখণ্ডে এই নয়া অসুখে সংক্রামিতের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। ত্রিপুরাতেও আক্রান্তের সংখ্যা ১। অসমে শূন্য। নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, নাক ব্যথা, চোখে সংক্রমণ এবং হঠাৎ যন্ত্রণা, কানে সংক্রমণ, তীব্র মাথাব্যথা ইত্যাদি প্রায় প্রতিটি উপসর্গকেই সতর্কতার সঙ্গে নিতে বলেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। করোনা রোগীদের মধ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা শনিবারও বেড়েছে। গুজরাতের পর এই রোগে সবথেকে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা দেখা দিয়েছে মহারাষ্ট্রে। সেখানে সংক্রামিত ২ হাজার। পাশাপাশি উদ্বেগ বাড়িয়েছে মধ্যপ্রদেশ, কর্ণাটক, রাজস্থান, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানাও।
শনিবারই ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের ওষুধ অ্যম্ফোটেরাইসিন-বি ইঞ্জেকশনের মোট ২৩ হাজারের বেশি ভায়াল রাজ্যে রাজ্যে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। পশ্চিমবঙ্গের জন্য ভায়াল বরাদ্দ করা হয়েছে ৫০টি। সবথেকে বেশি ওষুধ পেয়েছে গুজরাত। কারণ, ওই রাজ্যেই ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের আক্রমণ সর্বাধিক। কেন্দ্রীয় সার ও রসায়ন মন্ত্রী সদানন্দ গৌড়া বলেছেন, দেশে মোট ৮,৮৪৮ জন ব্ল্যাক ফাঙ্গাস রোগীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। সাধারণভাবে কোভিড রোগী অথবা কোভিড থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের দেহেই বেশি সংক্রমণ ঘটাচ্ছে এই মিউকোরমাইকোসিস। স্বাস্থ্যমন্ত্রক বলেছে, কোভিড রোগী না হলেও, যারা ডায়াবেটিক তাদের এই ফাঙ্গাস আক্রমণ করতে পারে। কারণ, তাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল স্বীকার করেছেন, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের ওষুধ ‘অ্যাম্ফোটেরাইসিন-বি’-র স্টক দেশে এখনও কম। তবে উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য আরও পাঁচটি সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
অন্যদিকে, দেশে ভ্যাকসিন সঙ্কট মেটাতে আগামী দিনে বিদেশি ভ্যাকসিনের উপর ভরসা আরও জোরদার হচ্ছে। রাশিয়া জানিয়েছে, মে মাসেই স্পুটনিকের ৩০ লক্ষ ডোজ আসছে ভারতে। জুন মাসে পাঠানো হবে ৫০ লক্ষ। সব মিলিয়ে ভারতের জন্য ৮৫ কোটি ভ্যাকসিন ডোজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে রাশিয়া। তার জন্য ভারতেই স্পুটনিক উৎপাদনের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে। রাশিয়ায় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত ডি ভি বেঙ্গটেশ ভার্মা জানিয়েছেন, নয়াদিল্লিকে এই টিকা উৎপাদনের প্রযুক্তি প্রদান করবে মস্কো। আশা করা হচ্ছে আগামী আগস্ট মাস থেকে স্পুটনিক ভ্যাকসিন উৎপাদন করা হবে দেশের ল্যাবরেটরিতেই।