দক্ষিণবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

৯৫ হাজার বাসিন্দাকে দ্রুত সরানোর উদ্যোগ পূর্ব মেদিনীপুরে

May 24, 2021 | 2 min read

ঘূর্ণিঝড় যশ (Cyclone Yaas) মোকাবিলায় পূর্ব মেদিনীপুর (East Midnapore ) জেলায় মোট ৯৫হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরানো হচ্ছে। ২৫তারিখ দুপুরের মধ্যেই ৯৪০টি জায়গায় তাঁদের সরিয়ে আনা হবে। সাইক্লোনের অভিমুখ এরাজ্যের দিকে থাকায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের তৎপরতা বেড়ে গিয়েছে। সাইক্লোন মোকাবিলায় আগামী ২৫তারিখ তমলুকে জেলাশাসকের অফিসে রাতে থাকবেন রাজ্যের শ্রমদপ্তরের প্রধান সচিব বরুণ রায়, জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি সহ অতিরিক্ত জেলাশাসক ও অন্যান্য অফিসাররা। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন ব্লকে ত্রাণসামগ্রী পাঠানো হয়েছে।

যশ মোকাবিলায় রবিবার জেলাশাসক দফায় দফায় ভার্চুয়াল বৈঠক সারেন। মোট চারটি এনডিআরএফ টিম জেলায় এসেছে। তাদের আটটি দলে ভাগ করে বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়েছে। আগামী ২৫থেকে ২৭মে জেলার সবক’টি বিডিও অফিস এবং গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস খোলা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় হলদিয়ায় উপকূলরক্ষী বাহিনী, দীঘা-শঙ্করপুরে এনডিফআরএফ(ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স) মাইকিং করেছে।

এদিন সকাল থেকেই দীঘা উপকূল এলাকায় প্রশাসনিক ব্যস্ততা ছিল তুঙ্গে। দীঘা থেকে সমস্ত হোর্ডিং, ফ্লেক্স খুলে নেওয়া হয়েছে। হাইমাস্ট লাইট খুলে ফেলা হয়েছে। ভারী ও বড় গাছের ডালপালা ছেঁটে দেওয়া হয়েছে। দীঘায় বিভিন্ন জায়গায় ড্রেন পরিষ্কার করা হয়েছে। উপকূল বরাবর দোকানপাট থেকে জিনিসপত্র সরানোর জন্য শনিবার রাত থেকেই মাইকিং করা হয়েছিল। রবিবার সকাল থেকেই অনেক দোকানদার জিনিসপত্র সরিয়ে নিয়েছেন। লকডাউন পরিস্থিতিতে দীঘায় হোটেলে পর্যটক নেই। তা সত্ত্বেও সাইক্লোন পরিস্থিতি দেখার নেশায় কেউ কেউ দীঘায় চলে আসেন। ঘূর্ণিঝড়ের সময় তাঁরা যাতে কোনওভাবেই বাইরে না বের হন, তারজন্য মাইকিং করা হয়।

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রামনগর-১ ও ২, কাঁথি-১, দেশপ্রাণ এবং খেজুরি-২ব্লক কোস্টাল এলাকার মধ্যে পড়ে। এছাড়াও হলদিয়া এবং নন্দীগ্রাম-১ব্লক হলদি নদীর তীরে বঙ্গোপসাগরের মোহনা অংশে অবস্থান করায় সাইক্লোন অধ্যুষিত জোন বলে পরিচিত। ওইসব ব্লক থেকেই বেশি সংখ্যক মানুষজনকে নিরাপদ জায়গায় সরানো হবে। এরবাইরে খেজুরি-১, সুতাহাটা, কাঁথি-৩, মহিষাদল প্রভৃতি ব্লকেও বেশকিছু জায়গায় মানুষজনকে সরানো দরকার। খেজুরি-১ব্লকের হেঁড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের কৃষ্ণনগর রাজবাড়ি আপার প্রাইমারি, হেঁড়িয়া শ্রী গৌরাঙ্গ প্রাইমারি, নেতাজি সুভাষ বিএড কলেজ, মাতঙ্গিনী এসএসকে, দেবীচক বিবেকানন্দ হাইস্কুল ও খড়ার বোর্ড প্রাথমিকে রেসকিউ সেন্টার করা হয়েছে। এভাবেই জেলার সমস্ত ব্লকে ৯৪০টি জায়গাকে চিহ্নিত করে সেখানে মানুষজনকে সরানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে।

প্রতিটি বিডিও অফিস, পুরসভা অফিস এবং পঞ্চায়েত অফিসে কন্ট্রোলরুম খোলা হবে। জেলা হেডকোয়ার্টার থেকে প্র঩তিটি ব্লক ও পুরসভায় ত্রাণসামগ্রী এবং ত্রিপল পাঠানো হয়েছে। আজ, সোমবার থেকেই ২৬তারিখ পর্যন্ত কাঁথি পুরসভায় ২৪ঘণ্টার জন্য কন্ট্রোল রুম চালু হচ্ছে।

ডেঙ্গু প্রতিরোধ কর্মসূচির জন্য বরাদ্দ অর্থে জরুরিভিত্তিতে ত্রাণসামগ্রী, ত্রিপল এবং অন্যান্য সামগ্রী কেনার অনুমতি চেয়ে জেলাশাসককে চিঠি দিয়েছেন পুরবোর্ডের সদস্যরা। এদিন জেলাশাসক প্রতিটি সরকারি দপ্তরের জেলা অফিসারের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। সাইক্লোনের আগে ও পরে প্রতিটি দপ্তরের কী ভূমিকা তা নিয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিপর্যয় ব্যবস্থাপন দপ্তরের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলাশাসক(ভূমি) সুদীপ্ত পোড়েল বলেন, মোট ৯৫হাজার মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরানো হবে। ২৫তারিখ দুপুরের মধ্যেই কাজ শেষ করা হবে। ওই রাতে অতিরিক্ত মুখ্য সচিব বরুণ রায়, জেলাশাসক সহ আমরা প্রত্যেকেই জেলা কালেক্টরেটে থাকব।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#cyclone yaas, #East Midnapore

আরো দেখুন