ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় যুদ্ধকালীন প্রস্তুতি দক্ষিণ ২৪ পরগনায়
দুর্যোগপ্রবণ এলাকা থেকে গ্রামবাসীদের সরানোর আগে নতুন চিন্তা প্রশাসনের। একাধিক ব্লকে গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে অনেকেরই ২৫ থেকে ২৭ মে-র মধ্যে প্রসব হওয়ার কথা। তবে তাঁদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করছে একাধিক ব্লক। এদিকে, বারবার সতর্কীকরণ করার পরও নদী ও সমুদ্র থেকে না ফেরার জন্য অন্তত ৪৮ জন মৎস্যজীবীকে ফিরিয়ে এনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সূত্রের খবর, গোসাবায় স্থানীয় দু’টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এই প্রসূতি মহিলাদের ভর্তি করে রাখা হবে। স্যালাইন ও অন্যান্য পরিষেবা থাকবে। পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে ব্লক সূত্রে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে নামখানা ব্লকেও এমন হবু মায়েদের জন্য আলাদা ঘর এবং কোথাও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বেডের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিডিও।
এদিকে, রবিবার আকাশপথে জেলাশাসক পি উলগানাথন সহ অন্যান্য অফিসাররা উপকূল এলাকা পরিদর্শন করেন। তখনই ফ্রেজারগঞ্জ, গোসাবা এবং পাথরপ্রতিমায় একাধিক ট্রলারকে জলে দেখা যায়। এরপর এমন ৫-৬টি ট্রলার এবং দু’টি ছোটো নৌকা আটক করে ডাঙায় ফিরিয়ে আনা হয়। ৪৮ জনের মতো মৎস্যজীবীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ১২টি ট্রলারও বাজেয়াপ্ত করা হয়।
জেলার পুরসভাগুলির তরফেও ঘূর্ণিঝড় (cyclone Yaas) মোকাবিলায় যাবতীয় প্রস্তুতি সেরে ফেলা হয়েছে। রাজপুর-সোনারপুর পুরসভা, বারুইপুর, মহেশতলা এবং জয়নগর পুরসভা গতবারের থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার গাছ কাটার আধুনিক যন্ত্র কিনে ফেলেছে। জেসিবি প্রস্তুত রাখা থাকছে পরিষ্কারের জন্য। বারুইপুর পুরসভা আলাদা করে ১৭টি ওয়ার্ডে এই ঝড়ের পরের দিন জলের ট্যাঙ্ক পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া ২০ জন করে একাধিক কুইক রেসপন্স টিম রেডি থাকবে। রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার প্রশাসক পল্লব দাস বলেন, বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে শ্মশান, হাসপাতাল এবং সেফ হোমের প্রতি অগ্রাধিকার দিতে হবে। ইতিমধ্যে ভ্যাকসিনের সব ডোজ পুরসভার সদর অফিসে নিয়ে আসা হয়েছে। জেনারেটরের ব্যবস্থাও করে রেখেছে পুরসভাগুলি। প্রতি পুর এলাকায় আগাম গাছের ডালপালা কেটে ফেলার কাজও শুরু হয়েছে। এদিকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা পরিষদের উপাধ্যক্ষ জয়ন্ত ভদ্রকে চারটি বিধানসভার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
উপকূলবর্তী এলাকায় পুলিসের পক্ষ থেকেও বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সুন্দরবন কোস্টাল ও গোসাবা থানার ৯টি দ্বীপে পুলিসের বিশেষ দল পাঠানো হবে। উদ্ধারকাজ সুষ্ঠুভাবে করার জন্য তাদের গাছ কাটার যন্ত্র সহ অন্যান্য সরঞ্জাম দেওয়া হবে। পুলিস আধিকারিকদের যোগাযোগের জন্য স্যাটেলাইট ফোন দেওয়া হবে।