এই মুহূর্তে দীঘা থেকে ৪২০ কিলোমিটার দূরে ‘যশ’
অপেক্ষা এখন আরও একটা ঘূর্ণিঝড়ের ৷ গতিবেগ বাড়িয়ে ক্রমশই স্থলভাগের দিকে এগিয়ে আসছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় যশ (Cyclone Yaas)। আবহাওয়া দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী এই মুহূর্তে দীঘা থেকে ৪২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে এই ঘূর্ণিঝড়। তবে গতিবেগ বাড়লেও গতিপথ একই রয়েছে যশ-এর। অর্থাৎ আগামিকাল, বুধবার তা আছড়ে পড়তে পারে উপকূল অঞ্চলে। সেই সময় হাওয়ার সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার। পারাদ্বীপ ও সাগরদ্বীপের মধ্যে দিয়ে বালেশ্বরের কাছাকাছি এলাকা দিয়ে যাওয়ার কথা ঘূর্ণিঝড়ের।
বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় যশ এই মুহূর্তে ওড়িশার পারাদ্বীপ থেকে ৩২০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্ব, ওড়িশার বালেশ্বর থেকে ৪৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্ব, পশ্চিমবঙ্গের দীঘা থেকে ৪২০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্ব ও বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকে ৪৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে।
ঘূর্ণিঝড় যশের মোকাবিলায় দীঘায় নামানো হল নৌ বাহিনীর বিশেষ দল। এ ছাড়া আকাশ পথে সমুদ্রে নজরদারি চালাচ্ছে উপকূল রক্ষী বাহিনী। ইতিমধ্যেই নিউ দীঘা থেকে খেজুরি অবধি দীর্ঘ ৭১ কিলোমিটার সমুদ্রতট জুড়ে নৌ-বাহিনীর পাশাপাশি নজর রাখতে চলেছে ভারতীয় উপকূলীয় বাহিনী। হলদিয়া থেকে উপকূলীয় বাহিনীর জাহাজে নজর রাখা হচ্ছে। নৌ বাহিনীর এই বিশেষ দলটি এসেছে বিশাখাপত্তনম থেকে। মোট তিনটি টিম এসেছে। এই দলের অন্যতম সদস্য মেরিন কমান্ডো অনীশ জানিয়েছেন, দু’টি রেসকিউ টিম ও একটি ডাইভিং টিম নিয়ে আসা হয়েছে। ইতিমধ্যেই সমুদ্রের পাড় থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে একাধিক গ্রামের বাসিন্দাদের। তারপরেও যদি কেউ সমুদ্রে তলিয়ে যান তা হলে এই বিশেষ ডাইভিং টিম উদ্ধার কাজে নেমে পড়বেন। আর যদি কোথাও মাটির বাড়ি বা পাকা বাড়ির নীচে কেউ চাপা পড়ে যান বা দূর্ঘটনা ঘটে তাহলে নৌ-বাহিনীর এই বিশেষ দল কাজ করবে।
এ ছাড়া ডরনিয়ার বিমানে চেপে চক্কর কাটছে ভারতীয় উপকূল রক্ষী বাহিনী। মাঝ সমুদ্রে থাকা পণ্যবাহী জাহাজ ও ভেসেল যা আছে তাদের উপকূলে ফেরানোর ব্যবস্থা করছে। দীর্ঘ সময় ধরে মাইকিং করছে।প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, নেভির দুটো ডাইভিং টিম, ৫ খানা ফ্লাড রিলিফ টিম ও বিশেষ নৌকা আনা হয়েছে। এই টিম থাকছে দীঘা ও ফ্রেজারগঞ্জে। এ ছাড়া একটি ফ্লাড রিলিফ টিম ডায়মন্ড হারবারে স্ট্যান্ডবাই হিসাবে রাখা হয়েছে। এই সব দল গাছ কেটে রাস্তা পরিষ্কার করা, আহতদের উদ্ধার করে নিয়ে আসা, রিলিফ মেটিরিয়াল পৌছে দেওয়ার কাজ করবে। এ ছাড়া নৌ বাহিনীর তরফ থেকে বিশাখাপত্তনমে প্রস্তুত আছে। এই নৌ বাহিনীর জাহাজ থেকে প্রয়োজনে এয়ারড্রপ করানোর ব্যবস্থা থাকছে। রাজ্য সরকার যখনই তাদের কাছে সাহায্য চাইবে ত্রাণ পাঠানো বা উদ্ধার কাজের জন্যে তখনই এই টিম ঝাঁপিয়ে পড়বে। এ ছাড়া চিকিৎসকদের একটি দল প্রস্তুত আছে। সাইক্লোনের পরেই তাঁরা বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে যাবেন।