দক্ষিণবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

যশ মোকাবিলায় দক্ষিণবঙ্গে খোলা হল ফ্লাড শেল্টারও

May 25, 2021 | 2 min read

ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ (Yaas)। আবহাওয়া দপ্তরের সতর্কবার্তা মোতাবেক পরিস্থিতি মোকাবিলায় সবরকম প্রস্তুতি নিয়েছেন দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির প্রশাসনিক কর্তারা। বাসিন্দাদের সতর্ক করতে মাইকিংয়ের পাশাপাশি প্রতিটি জেলাই বিশেষ কন্ট্রোল রুম চালু করেছে। আগেভাগেই একাধিক ফ্লাড শেল্টার খোলা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা দফায় দফায় বৈঠক করে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন।

বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও আরামবাগে ঝড়ের ব্যাপক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। দফায় দফায় বৈঠক করেছে বাঁকুড়া জেলা পুলিস ও প্রশাসন। সোমবারও জেলাশাসক কে রাধিকা আইয়ার গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরগুলিকে নিয়ে বৈঠক করেছেন। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই বাঁকুড়ায় ২৬জনের একটি এনডিআরএফ-এর দল পৌঁছেছে। সেনার সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছে প্রশাসন।

প্রশাসন সূত্রে খবর, পানীয় জলের দু’লক্ষ পাউচ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তারসঙ্গে করোনা আক্রান্তদের জন্য অক্সিজেন, ওষুধ মজুত রাখছে স্বাস্থ্যদপ্তর। প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকায় স্কুলগুলিতে ত্রাণশিবির খোলা হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক রাখতে বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিষ্ণুপুরের প্রতিটি গ্রাম সংসদ এলাকায় তৃণমূলের পক্ষ থেকে ত্রাণকেন্দ্র খোলা হচ্ছে।

পুরুলিয়ার প্রতি ব্লক, মহকুমা ও জেলাস্তরে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। জেলাজুড়ে ঝড় নিয়ে সতর্ক করতে মাইকিং করা হচ্ছে। কাঁচাবাড়ির তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। বান্দোয়ানের তৃণমূল বিধায়ক রাজীবলোচন সোরেনও হেল্পলাইন খুলেছেন।

আরামবাগ মহকুমা প্রশাসন বিভিন্ন বিভাগকে নিয়ে একটি যৌথ কন্ট্রোল রুম খুলেছে। এনডিআরএফ-এর টিম এসেছে। মহকুমার সব স্কুল, কলেজেই ত্রাণশিবির খোলার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। খানাকুলে মানুষের পাশে দাঁড়াতে টিম গড়েছেন তৃণমূল কর্মীরা।

রামপুরহাটে ‘যশ’ পরিস্থিতি সামাল দিতে মহকুমা কন্ট্রোল রুম চালু হয়েছে। মহকুমা শাসক জগন্নাথ ভড় বলেন, মহকুমার ৪৩টি স্কুলে ফ্লাড শেল্টার তৈরি হয়েছে। ব্লক ও পুরসভাস্তরে প্রস্তুতি বৈঠক করে ২৪ঘণ্টার জন্য কন্ট্রোল রুম খোলার কথা ঘোষণা করেছেন বোলপুরের এসডিও মানস হালদার। ওয়ার্ডভিত্তিক কমিউনিটি সেন্টারে দুর্গতদের আশ্রয়স্থল তৈরি করা হয়েছে। জলের পাউচ, শুকনো খাবার মজুত রাখা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এদিন রামপুরহাট ও নলহাটি পুরসভাও কন্ট্রোল রুম খুলেছে। বিপর্যয় মোকাবিলায় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরাও ময়দানে থাকবেন বলে দলের জেলা চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় জানান।

এদিকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় পৃথক টিম ও হেল্পলাইন তৈরি করেছে সিউড়ি পুরসভা। এদিন পুরসভায় একটি জরুরি বৈঠক হয়েছে। ক্যুইক রেসপন্স টিম তৈরি করা হয়েছে। তিনটি হেল্পলাইন নম্বর রাখা হয়েছে। প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান প্রণব কর বলেন, আমরা যথাসম্ভব দ্রুত পরিষেবা দেবার চেষ্টা করব। সিউড়ি মহকুমার অন্যান্য ব্লকেও বাড়িঘর দুর্বল হলে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।

মুর্শিদাবাদ জেলায় যশ রুদ্রমূর্তি ধারণ করবে না বলেই জেলা প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট রয়েছে। তা সত্ত্বেও সবরকম প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হচ্ছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলাশাসকের অফিসে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। প্রত্যেকটি পুরসভাতেও একই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক সিরাজ দানেশ্বর বলেন, বিদ্যুৎদপ্তরের কর্মীদেরও প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই দপ্তর ১০০জন কর্মীকে নিয়ে ক্যুইক রেসপন্স টিম তৈরি করেছে। কোথাও তার ছিঁড়ে গেলে ঝড় থামার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবে। জেলায় কয়েকটি ফ্লাড শেল্টার তৈরি করে রাখা হচ্ছে। গাছ সরানোর জন্য যন্ত্রাংশ রাখা হয়েছে।

অতিরিক্ত জেলাশাসক আরও বলেন, মুর্শিদাবাদে প্রবল গতিতে ঝড় বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা কম। উদ্যানপালন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝড় হলে আম ও লিচু চাষিরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়বেন। আতঙ্কে অনেকেই কাঁচা আম পাড়তে শুরু করেছেন।

রাজ্যের নির্দেশে নদীয়া জেলার বিভিন্ন ব্লক এবং জেলাস্তরের কৃষিদপ্তরের কর্মকর্তারা অফিসের আশপাশে থাকছেন। পান বরজ ও সবজি মাচাগুলি শক্তপোক্ত করতে বলা হয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #yaas cyclone

আরো দেখুন