যশ মোকাবিলায় আগাম সতর্ক রাজ্য
যশের (Yaas) করাল গ্রাস ঠেকাতে আগাম সর্তকতা অবলম্বন করতে চাইছে রাজ্য প্রশাসন। এই বিষয়টি মাথায় রেখে সোমবার একটি ভার্চুয়াল বৈঠকে বসেন রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন জেলাশাসক, পুলিস সুপার, কলকাতা পুরসভা, সিইএসসি, সেনাবাহিনীর আধিকারিকরা। প্রায় আড়াই ঘণ্টা চলে বৈঠক। আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, ঝাড়খণ্ডের দিকে ঝড়টির অভিমুখ রয়েছে। সেইজন্য পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পূর্ব বর্ধমান— এই জেলাগুলিকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ওই জেলাগুলি থেকেও সাধারণ মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। বৈঠকে এমনটাই জানিয়েছেন মুখ্যসচিব।
তিনি বলেন, ‘ইভাকুয়েশন’ বা লোকজনকে নিরাপদ জায়গায় সরানোর কাজ ঠিকভাবে করতে হবে। এখনও বেশ কিছু জায়গায় এটি পুরোপুরি হয়নি। এ বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিন। কোভিড হাসপাতালগুলিতে অক্সিজেনের অন্তত দুই থেকে তিনদিনের জন্য মজুত রাখুন। বিদ্যুৎ চলে গেলে যাতে অক্সিজেনের অভাবে কোনও রোগীর মৃত্যু না হয়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। এবিষয়ে সমন্বয় রাখার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানান মুখ্যসচিব। তিনি জানান, সেনাবাহিনীও সঙ্গে থাকবে। দামোদর নদীর বাঁধগুলি থেকে বেশি জল ছাড়া হচ্ছে কি না, সেদিকে বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে হুগলির জেলাশাসককে। সব থেকে খারাপ পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকার নির্দেশ দিয়েছেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। বিদ্যুৎ চলে গেলেও যাতে তা দ্রুত ফিরিয়ে আনা যায়, তার জন্য কলকাতা পুরসভাকে নির্দেশ দেন মুখ্যসচিব। সি ই এস সি-র সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করতে বলা হয়েছে কলকাতা পুরসভাকে। ঝড় চলে যাবার পর তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার নির্দেশও দেন তিনি। অন্যদিকে, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য খাদ্যদপ্তর সোমবার বিশেষ কন্ট্রোল রুম চালু করেছে। আগামী ২৮ মে পর্যন্ত এই ব্যবস্থা চলবে। খাদ্যদপ্তরের শীর্ষ আধিকারিকদের উদ্দেশে সোমবার এক নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছে, রেশন ডিলার ও ডিস্ট্রিবিউটরদের কাছে যে খাদ্য ও কেরোসিন তেল মজুত আছে, ঘূর্ণিঝড়ে তার যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। বিশেষ করে গুদামে যাতে জল না ঢুকে যায়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। রেশন দোকানের ই-পস যন্ত্রগুলিকে সাবধানে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি স্থায়ী কেন্দ্র থেকে কৃষকদের ধান কেনার কাজ মঙ্গল ও বুধবার বন্ধ রাখা হবে। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বৃহস্পতিবার বা শুক্রবার তা ফের চালু করা হতে পারে।