যশের আগেই টর্নেডো, লণ্ডভণ্ড হালিশহর
যশ (Cyclone Yaas) আতঙ্কে প্রমাদ গুনছে বঙ্গবাসী। তার আগে মঙ্গলবার বিকেলে আচমকাই ব্যান্ডেল চার্চের মাথার দেখা গেল ‘ঘূর্ণিঝড়’। আকাশ কালো করে ধেয়ে আসতে দেখা গেল ঝড়।। মুহূর্তের তাণ্ডবে কার্যত ধ্বংসলীলা চালালো ব্যান্ডেল চার্চ সংলগ্ন এই এলাকায়। ভেঙে পড়ল দোকানপাট-গাছপালা। একইভাবে কয়েক মুহূর্তের জন্য নৈহাটি সহ হালিশহরে একাধিক এলাকা তছনছ করল ‘ঘূর্ণিঝড়’। একাধিক বাড়ি ভেঙে পড়ায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়।
মঙ্গলবার বিকেলের এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকাবাসী। কয়েক মিনিটের ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় ব্যান্ডেল চার্চ চত্বর। চার্চের পাশের দোকানগুলির চাল ভেঙে উড়ে গিয়ে পড়ে পাশের খালে। এলাকার বেশ কিছু বাড়ির টিনের চাল হাওয়ায় ঘুড়ির মতো উড়ে যায়। ।৮টি বড় বড় গাছ ও একটি বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে। তবে স্টেশন ও অন্য এলাকায় ঝড়ো হাওয়ার প্রভাব তেমনভাবে পড়েনি। কয়েক মুহূর্তের এই ‘ঘূর্ণিঝড়’-এ হতভম্ব হয়ে পড়েন স্থানীয়রা। কেউ কেউ আবার ক্যামেরাবন্দিও করে ফেলেন সেই বিপর্যয়ের চিত্র। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘ব্যান্ডেল চার্চ সংলগ্ন খালের পাশের দোকানগুলি এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ভেঙে পড়ে।’ এলাকার দোকানদারের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
পাশাপাশি, কয়েক মুহূর্তের ঘুর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড বীজপুর থানার জেটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বালিভাড়া গ্রাম। ঝড়ে কমপক্ষে ৭০-৮০ টি বাড়ির টালি কিংবা টিনের ছাউনি উড়িয়ে নিয়ে গেছে। ছাউনি উড়ে ইঁটের গাথনি পড়ে এক পরিবারের তিনজন জখম হয়েছেন। তাদেরকে কল্যাণী জে এন এম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দে বাড়ির ছাউনি উড়ে গিয়ে ট্রান্সফারমারের উপর গিয়ে পড়েছে। ফলে ট্রান্সফারমার পুরো ভেঙে গিয়েছে। ইলেকট্রিক সংযোগ সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বালিভাড়া গ্রামে। পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ইয়াস (Cyclone Yaas) ঘিরে উদ্বেগে বাংলা। বুধবার সকালে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূলে পৌঁছবে যশ। রাজ্যের মধ্যে ঝড়ের মুখে সবচেয়ে বেশি পড়বে পূর্ব মেদিনীপুর। পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আমফানের মতো আতঙ্কের দরকার নেই।
উল্লেখ্য, গত বছর আমফানের তাণ্ডবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল কলকাতার একাংশ। অন্যদিকে, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুরে ঝড়ের বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ৮০-৯০ কিমি। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ঝড়ের বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ৮০-৯০ কিমি। ঝড়ের জেরে কাঁচা বাড়ি ভেঙে পড়তে পারে। নীচু এলাকায় জল জমতে পারে।
হুগলির কন্ট্রোল রুম নম্বর
বিপর্যয় মোকাবিলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে হুগলিতে। নম্বরগুলি হল- ০৩৩২৬৮১২৬৫২, ০৩৩২৬৮০০১১৫, ৮১০০১০৬০২২, ৮১০০১০৬০৪১।