একমাসের মধ্যে দীঘাকে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরাতে ঝাঁপালো রাজ্য
যশ ঘূর্ণিঝড়ে (Cyclone Yaas) বিধ্বস্ত বাঙালির অতি প্রিয় পর্যটনস্থল দীঘা। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত ভরা কটালের সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে বাংলার উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে হয়েছে প্রবল জলোচ্ছ্বাস। সেই জলোচ্ছ্বাসেই যেন ভাঙাহাট দীঘা। বাংলার সর্বাধিক জনপ্রিয় এই পর্যটন কেন্দ্রকে পুনরায় স্বাভাবিক চেহারায় ফিরিয়ে আনতে কাজ শুরু করে দিল প্রশাসন। শুক্রবার হিঙ্গলগঞ্জ ও সাগর ঘুরে দীঘায় আসবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরেজমিনে ঘুরে দেখবেন দুর্গত এলাকা।
কিন্তু তার আগেই দ্রুত দীঘাকে ছন্দে ফেরাতে একাধিক দফতর সমন্বয় করে সেই কাজ শুরু করে দিয়েছে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, পরিকাঠামো পুনর্গঠনে। যশ ঘূর্ণিঝড়ের পরবর্তী প্রভাব যাতে দীঘার পরিকাঠামোকে কোনও ভাবেই বিপর্যস্ত না করতে পারে, সে দিকেই নজর প্রশাসনিক কর্তাদের। ভ্রমণপিপাসু বাঙালির জন্য যাতে দীঘাকে দ্রুত তৈরি করে ফেলা যায়, সেই লক্ষ্য নিয়ে তাঁরা কাজ শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন এক প্রশাসনিক কর্তা।দীঘার সমুদ্রে যে ‘প্রোটেকশান ওয়াল’ রয়েছে তা অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। জলোচ্ছ্বাসের কারণে যে সব বাঁধগুলি দুর্বল হয়েছে পড়েছে, তাতে সেচ দফতরের আশঙ্কা দ্রুত মেরামত না হলে বাঁধ ভেঙে গ্রামে জল ঢুকে নতুন করে প্লাবনের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই বৃহস্পতিবার বিকেলে দীঘাতেই সেচ দফতরের কর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসছেন সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। সূত্রের খবর, বৈঠকেই বাঁধগুলো মেরামত নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। দীঘার মূল যে রাস্তা, সেটি ভেঙে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই পূর্ত দফতর তা পুনরায় তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছে।
সকালেই দীঘা এলাকা পরিদর্শনে যান রামনগরের বিধায়ক তথা মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি। তিনি বলেন, ‘‘যত দ্রুত সম্ভব দীঘাকে স্বাভাবিক রূপে ফেরানোই আমাদের লক্ষ্য হবে। আশা করছি, এক মাসের মধ্যেই আমরা সেই কাজ করতে পারব।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা আমাদের মতো করে কাজ শুরু করে দিয়েছি। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী আসবেন, তিনি সব কিছু দেখে যে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিলেও আমরা সে ভাবে কাজ করব।’’একমাসের মধ্যে দীঘাকে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরাতে একযোগ কাজ করছে পূর্ত, সেচ, বিপর্যয় মোকাবিলা, পর্যটন, মৎস্য দফতর। এই সমস্ত দফতরের সঙ্গে সমন্বয় করে চলেছে দীঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ। পর্ষদের চেয়ারম্যান জ্যোর্তিময় কর বলেন, ‘‘একমাসের মধ্যেই দীঘাকে তার পুরনো চেহারায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব। সে ক্ষেত্রে যে সমস্ত দফতর দীঘার উন্নয়নের দায়িত্বে রয়েছেন, তাদের পরস্পরের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে দিনরাত কাজ করতে হবে। এক একটি দফতর নিজের দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করলেই এই কাজে আমাদের বেশি সময় লাগবে না। তবে মুখ্যমন্ত্রী এসে পরিস্থিতি পরিদর্শন করে গেলে, তাঁর পরামর্শে কাজ করতে আমাদের সুবিধাই হবে।’’