নারদ মামলায় চার নেতার বিরাট জয়, অন্তর্বর্তী জামিন দিল হাইকোর্ট
নারদ মামলায় বিরাট জয় ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়ের। কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ আজ এই চার অভিযুক্তকে অন্তর্বর্তী জামিন দিল। আজ এমনটাই জানালেন হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল।
মুখ্যমন্ত্রী এবং আইনমন্ত্রীর উপস্থিতি এবং জনতার চাপ। তাতেই ‘প্রভাবিত হয়েছিলেন বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক’। এই তত্ত্ব খাড়া করে প্রথম থেকেই উচ্চ এবং সর্বোচ্চ আদালতে দরবার করে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এই নারদ মামলায় জামিন নাকচের নির্দেশ পুনর্বিবেচনার বিষয়টি প্রাসঙ্গিক হলেও, প্রভাবশালী তত্ত্ব খাটাতেই বারবার সরব হচ্ছেন সিবিআই কৌঁসুলি তথা সলিসিটর জেনারেল (এসজি) তুষার মেহতা। এমনকী মামলা অন্যত্র সরানোর আবেদন জানানো হয়েছে ওই দুই ইস্যু সামনে রেখেই।
বৃহস্পতিবারও কলকাতা হাইকোর্টে পাঁচ বিচারপতির ‘বৃহত্তর বেঞ্চে’র সামনে ওই বিষয়গুলি তুলে ধরে সিবিআই। আবেদন জানায়, গত ১৭ মে নিম্ন আদালত যে রায় দিয়েছিল, তা নাকচ করতে হবে। কিন্তু তাতে ‘প্রভাবিত’ হয়নি হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ। বরং ‘প্রভাবিত বিচারক’ তত্ত্বে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে বেঞ্চ।
আজ বিচারপতি মুখোপাধ্যায় সিবিআইকে পাল্টা প্রশ্ন করেন, তদন্ত শুরু হয় ২০১৭ সালে। এতদিন কেন এই চার অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হল না? গ্রেপ্তারি তো তদন্তে প্রভাব খাটানো আটকাতেই করা হয়ে থাকে। তাহলে এখন গ্রেপ্তারি কেন?
এরপরই সিবিআইয়ের তরফে তুষার মেহতা আদালতকে আবেদন জানান চার অভিযুক্তকে অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়া হলে এই শর্তে দেওয়া হোক যে তারা মামলা সম্পর্কে সংবাদমাধ্যমে কোনও বিবৃতি দেবেন না। সিবিআইয়ের তরফে আরও আবেদন জানানো হল এই চার নেতাকে যদি তদন্তের স্বার্থে ডাকা হয়, তারা ভিড় জড়ো করবেন না।
মিডিয়ায় বিবৃতি দেওয়ার শর্ত মেনে নিয়েও অভিযুক্তদের পক্ষের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি আপত্তি জানান অন্য শর্তে। তাঁর দাবি, ভিড় জড়ো না করার নির্দেশ দেওয়া হলে প্রকারান্তরে এটাই মেনে নেওয়া হবে যে গ্রেপ্তারির দিন এই নেতারা মানুষকে সংগঠিত হতে বলেছিলেন। এই আবেদন স্রেফ মিডিয়ায় হেডলাইন বানানোর জন্য করা হচ্ছে।
আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা আদালতকে আবেদন করেন ভার্চুয়াল হাজিরার নির্দেশ দিতে, তাহলেই ভিড় জড়ো করার প্রশ্নই উঠবে না। এরপরই রায় দেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি।