দুর্যোগে মানুষের পাশে গৌতম, চালু করলেন তহবিল
এবার শিলিগুড়ি পুরসভায় চেয়ারম্যানের ত্রাণ তহবিল চালু করা হল। কোভিড মহামারী ও প্রকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতেই বৃহস্পতিবার এই তহবিল চালু করেছে পুরসভা। এদিন পুর চেয়ারম্যান গৌতম দেব (Gautam Deb) সংশ্লিষ্ট তহবিলে দেড় লক্ষের বেশি অর্থ প্রদান করেন। অন্যদিকে, কোভিড (Covid19) পরিস্থিতির জেরে থমকে থাকা ১৫০টি নির্মাণ প্রকল্প রূপায়ণে তৎপর হয়েছে পুর কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলির জন্য বরদ্দ হবে প্রায় ৩০ কোটি টাকা। এদিন পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে এ ব্যাপারে বৈঠক করে প্রশাসক মণ্ডলী।
শিলিগুড়ি পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান মনোনীত হওয়ার পরই কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলায় ঝাঁপিয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেব। ইতিমধ্যেই তিনি কোভিড আক্রান্তদের বাড়িতে বিনামূল্যে রেশন সরবরাহ প্রকল্প চালু করেছেন। নিয়মিত শহর স্যানিটাইজ করার কর্মসূচি চালু করেছেন। হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীদের সহায়তা করা, কোভিড ও নন কোভিড রোগীদের জন্য অ্যাম্বুলেন্স, মৃতদেহ বহনের গাড়ি প্রভৃতির জন্য সার্ভিস সেন্টার চালু করেছেন। নার্সিংহোমগুলির বিলে লাগাম টানতে তৎপর হয়েছেন। এবার চালু করলেন চেয়ারম্যানস রিলিফ ফান্ড। এদিন তিনি পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের তিনসদস্যের সঙ্গে আলোচনা করার পর এই তহবিল চালু করেন।
পুরসভার চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমানে পুরসভার অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো নয়। আয় ও ব্যয়ের মধ্যে অনেকটাই তফাত রয়েছে। অর্থনীতির কিছু ক্ষেত্রে শৃঙ্খলার অভাব আছে। এ ব্যাপারে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে আপতকালীন অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে চাহিদা মতো কোভিডের ভ্যাকসিন মিলছে না। এই অবস্থায় মানুষকে সাহায্য করতেই চেয়ারম্যানের ত্রাণ তহবিল চালু করা হল। এতে আমজনতার কাছ থেকেই অর্থসংগ্রহ করা হবে। কোভিডে অনেকে মারা গিয়েছেন। সেইসব অসহায় পরিবারকে এই তহবিল থেকে সাহায্য করব। শুধু তাই নয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ সহ যেকোনও ধরনের আপতকালীন অবস্থায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে ব্যবহার করা হবে এই তহবিল।
এরআগে শিলিগুড়ি পুরসভায় মেয়রের ত্রাণ তহবিল চালু করা হয়েছিল। প্রাক্তন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য ওই তহবিল চালু করেছিলেন। সেটার কী অবস্থা? পুর চেয়ারম্যান বলেন, মেয়রের ত্রাণ তহবিলে কত অর্থ আছে তা জানা নেই। এ ব্যাপারে খোঁজ নেব। সেই তহবিলকে এরসঙ্গে যুক্ত করা যায় কি না সেই বিষয়েও চেষ্টা করব। উল্লেখ্য, এদিন নিজের ব্যক্তিগত উপার্জন থেকে ১ লক্ষ ৫৭ হাজার ও ১১ হাজার টাকা ওই তহবিলে দেন গৌতম দেব। তিনি এ জন্য দু’টি চেক পুরসভা কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়ার হাতে তুলে দেন। এছাড়া তিনি দিল্লির এক বাসিন্দার কাছ থেকে পাওয়া একটি অক্সিজেন কনসেনট্রেটরও পুর কমিশনারের হাতে তুলে দেন।
এদিকে কোভিড মোকাবিলায় আত্মশাসন লাগুর জেরে পুরসভার একগুচ্ছ উন্নয়নমূল প্রকল্প থমকে গিয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, রাস্তা, ড্রেন, পার্ক সংস্কার, ড্রেনের গার্ডওয়াল নির্মাণ সহ ১৫০টি প্রকল্পের নির্মাণ কাজ প্রায় থমকে আছে। শ্রমিকের অভাবে কয়েকটি প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে। এরবাইরে আরও ২৫টি প্রকল্প প্রস্তুত রয়েছে। এলাকা পরিদর্শনের পর সেগুলি নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।
বৈঠকের পরে চেয়ারম্যান বলেন, কতগুলি প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে, কতগুলির কাজ চলছে, কোন প্রকল্প শুরু করা হবে এসব বিষয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। শীঘ্রই উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজে আরও গতি আসবে।