আজ ক্ষতিগ্রস্ত জেলাসফরে মমতা, অপেক্ষায় দুর্গতরা
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন এবং প্রশাসনিক বৈঠক করতে আজ, শুক্রবারই দীঘায় আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সঙ্কটকালে তাঁর এই গুরুত্বপূর্ণ সফরের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন সাইক্লোন বিধ্বস্ত পূর্ব মেদিনীপুরের মানুষ। রুজি-রোজগার হারিয়ে অনেকের পথে বসার অবস্থা। দীঘা, মান্দারমণি, তাজপুর ও শঙ্করপুরের অনেক ছোট ও মাঝারি দোকানদারের সর্বস্ব কেড়ে নিয়েছে সমুদ্র। উপকূল এলাকার মাছচাষের উপর নির্ভরশীল হাজার হাজার মানুষের ফিশারি জলে ভেসে যাওয়ার পর তাঁরা নিঃস্ব হয়ে গিয়েছেন। হাজার হাজার চাষির জমিতে নোনাজল উঠে যাওয়ায় জমি থেকে আয়ের রাস্তাও আপাতত বন্ধ হয়ে গেল। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীর সফর এবং তাঁর ঘোষণার দিকে তাকিয়ে গোটা পূর্ব মেদিনীপুর।
মুখ্যমন্ত্রী শনিবার আসবেন বলে আগে ঠিক ছিল। কথা ছিল, সেদিন বেলা ২টোয় দীঘায় মিটিং করবেন। দীঘা সংলগ্ন চাঁদপুর, তাজপুর এবং গোবিন্দবসান এলাকায় তাঁর ঘুরে দেখার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু, বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে জানানো হয়, মুখ্যমন্ত্রী শুক্রবারই দীঘায় চলে আসবেন। বৈঠকে রিপোর্ট দাখিলের জন্য পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের ব্যস্ততা ছিল তুঙ্গে। সমস্ত দপ্তরের ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট সংগ্রহ করা হয়েছে। জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, শুক্রবারই মুখ্যমন্ত্রী দীঘায় আসবেন। তিনি সার্বিক ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে বৈঠক করবেন।
দীঘার অলঙ্কারপুর গ্রামের বাসিন্দা প্রাথমিক স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পূর্ণেন্দুশেখর দাস বলেন, আমার বয়স ৭২বছর। দীঘায় এরকম বিপর্যয় আগে কখনও দেখিনি। এদিন ওল্ড দীঘায় বিশ্ববাংলা উদ্যোন লাগোয়া চাউমিন, ঠান্ডা পানীয় ও পান সিগারেটের দোকানে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে কিছু জলের বোতল বের করছিলেন দোকানদার শক্তিপদ পয়ড়া। তিনি বলেন, উপকূল এলাকা থেকে জিনিসপত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ঘোষণা করেছিল প্রশাসন। এর আগে অনেক সাইক্লোন দেখেছি। ভেবেছিলাম, তেমনই হবে। দোকানের বিশেষ ক্ষয়ক্ষতি হবে না। কিন্তু, সমুদ্রের জলের তোড়ে সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে। এমনটা কল্পনাও করতে পারিনি। একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেলাম। দু’লক্ষ টাকার জিনিসপত্র ভেসে গিয়েছে।
ভাঙাচোরা দোকানের ভিতরে থেকে যাওয়া জিনিসপত্র বের করছিলেন আর এক ব্যবসায়ী প্রণব মাইতি। তাঁর পান ও ঠান্ডা পানীয়ের দোকান। প্রণববাবু বলেন, সরকারি সাহায্য না পেলে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারব না। আমরা মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরের দিকে তাকিয়ে আছি। দিদি নিশ্চয়ই আমাদের মতো ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য কিছু করবেন।
রামনগর-২বিডিও অফিসের উল্টো দিকে তালগাছারি মাল্টি পারপাস সাইক্লোন শেল্টার থেকে এদিন বাড়ি ফিরে গিয়েছেন অনিমা মাইতি, বাপি সামন্তরা। তাঁরা বলেন, ঘরবাড়ি ভেঙেচুরে গিয়েছে। আমরা মুখ্যমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে। তিনি নিশ্চয়ই ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করবেন।