আইপিএলের বাকি আসর আমিরশাহিতে
নীল নকশা আগেই তৈরি হয়ে গিয়েছিল। শনিবার সর্বসম্মতিক্রমে তা পাস হয়ে গেল বিসিসিআইয়ের (BCCI) সাধারণ সভায়। চতুর্দশ আইপিএলের (IPL) বাকি ৩১টি ম্যাচ হবে আমিরশাহিতেই (UAE)। এছাড়া কোনও উপায় ছিল না। কারণ, স্থগিত হয়ে যাওয়া আইপিএল শেষ পর্যন্ত পরিত্যক্ত হলে বোর্ডকে বিপুল লোকসানের মুখে পড়তে হত। ক্ষতির পরিমান দাঁড়াত প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা, যা সরাসরি প্রভাব ফেলত ভারতীয় ক্রিকেটের উপর।
আরবদেশে আইপিএল হতে পারে ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ১০ অক্টোবর। তার পরেই রয়েছে টি-২০ বিশ্বকাপ, যা হওয়ার কথা ভারতে। কিন্তু করোনার কারণে আইপিএল মাঝপথে স্থগিত হওয়ার পর টি-২০ বিশ্বকাপ নিয়েও ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে। যদিও এখনই হাল ছাড়তে নারাজ বিসিসিআই কর্তারা। ১ জুন আইসিসি’র বোর্ড মিটিং রয়েছে। সেখানে ভারতীয় বোর্ডের পক্ষ থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য আরও এক মাস সময় চাওয়া হতে পারে। একান্তই ভারতে যদি টি-২০ বিশ্বকাপ না হয়, তাহলে আইসিসি’র মেগা ইভেন্টের আসর বসতে পারে আমিরশাহিতে। সেক্ষেত্রেও প্রতিযোগিতা আয়োজনের দায়িত্বে থাকবে বিসিসিআই। আইসিসি’র এই সভা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই খোদ বোর্ড সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলি ও সচিব জয় শাহ উপস্থিত থাকতে পারেন। সোমবারই তাঁদের দুবাই যাওয়ার কথা। আইসিসি’র মিটিংয়ে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি সৌরভরা আমরশাহি ক্রিকেট বোর্ডের কর্তাদের সঙ্গেও এক প্রস্থ বৈঠক সেরে নিতে পারেন।
শনিবারের ভার্চুয়াল সভায় মুম্বই থেকে যোগ দেন সৌরভ গাঙ্গুলি, জয় শাহরা। শুরুতেই বিরাট কোহলির নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের প্রশংসা করেন বোর্ড সভাপতি । ২ জুন টিম ইন্ডিয়া ইংল্যান্ড সফরে রওনা হবে। যেখানে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথমে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল খেলবে কোহলি বাহিনী। তারপর রয়েছে পাঁচ ম্যাচের দ্বিপাক্ষিক টেস্ট সিরিজ। বোর্ডের পক্ষ থেকে ভারতীয় দলকে শুভেচ্ছা জানানো হয়। ভারতীয় ক্রিকেটাররা সরাসরি ইংল্যান্ড থেকে দুবাই পৌঁছাবেন আইপিএল খেলতে। বিরাট কোহলিরা যেহেতু জৈব সুরক্ষা বলয়ে থাকবেন, তাই আলাদা করে তাঁদের হয়তো কোয়ারেন্টাইনের কঠোর নিয়ম মানতে হবে না আমিরশাহিতে।
গত বছর মহিলাদের টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিলেন স্মৃতি মান্ধানারা। কিন্তু পুরস্কার মূল্যের অংশ এখনও তাঁরা পাননি বলে অভিযোগ উঠেছে। তারই প্রেক্ষিতে বোর্ডের সভায় ঠিক হয়েছে, দ্রুত যাবতীয় পাওনা মিটিয়ে দেওয়া হবে। তবে গত বছর রনজি না হওয়ার জন্য ঘরোয়া ক্রিকেটারদের আর্থিক সহযোগিতা দেওয়ার দাবি তোলেন এক কর্তা। তখন সৌরভ তাঁকে থামিয়ে বলেন, বিষয়টি সভার আলোচ্য বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত নয়। এমনকি মহম্মদ আজহারউদ্দিনের উপস্থিতি নিয়ে অনেকেই অসন্তুষ্ট বলে শোনা যাচ্ছে।
করোনার দুঃসময়েও বোর্ডের ভাণ্ডার সুরক্ষিত: করোনাকালে বিশ্বের প্রায় সব ক্রিকেট বোর্ডই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। তবে মহামারীর বিন্দুমাত্র আঁচ পড়েনি ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (বিসিসিআই) ভাণ্ডারে। ২০২০-২১ আর্থিক বর্ষে তাদের উপার্জনের পরিমান ৩৭৩০ কোটি টাকা। অর্থাৎ সৌরভ গাঙ্গুলির নেতৃত্বাধীন ক্রিকেট বোর্ড অটুট রেখেছে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ক্রিকেট সংস্থার মুকুট। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। এই সময়কালে তাদের আয় ২৮৪৩ কোটি টাকা। পৃথিবীর তৃতীয় ধনী ক্রিকেট সংস্থা ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)।