রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

আসেনি কাঙ্খিত ফল বঙ্গ বিজেপির কাছে খরচের হিসেব চাইছে নেতৃত্ব

May 31, 2021 | 2 min read

ভোটে উড়েছে দেদার টাকা। কিন্তু কাঙ্খিত ফল আসেনি। বাংলায় মুখ পুড়েছে নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ সহ বিজেপির (BJP) তাবড় শীর্ষ নেতাদের। কাজেই হারের পর থেকে রাজ্য বিজেপির উপর খড়্গহস্ত হয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তড়িঘড়ি বিধানসভা নির্বাচন পর্বে যাবতীয় খরচের হিসেব চাওয়া হয়েছে বঙ্গ পার্টির কাছে। কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্বের সাফ নির্দেশ, পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন পর্বে যত টাকা অর্থসাহায্য করা হয়েছে, এবার তার খরচের হিসেব দিন। কোন খাতে কত টাকা ব্যবহার করেছেন, সবিস্তার জানান সেটিও। দলের শীর্ষ সূত্রের দাবি, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতায় কোনওরকম কার্পণ্য করা হয়নি। কিন্তু সঠিকভাবে অর্থ খরচ না করার জেরেই বাংলায় এহেন নির্বাচনী বিপর্যয় কি না, সেটিই এখন খতিয়ে দেখতে মরিয়া তারা। সেই কারণেই কার্যত নজিরবিহীনভাবে দলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছ থেকে টাকা খরচের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসেব চাওয়া হয়েছে। বিজেপির অন্দরের খবর, এক্ষেত্রে যদি কোনও স্তরে ন্যূনতম খামতি ধরা পড়ে, তাহলেও উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করার চিন্তাভাবনা করছেন দিল্লির নেতারা।

যদিও এভাবে খরচের হিসেব চাওয়াকে নজিরবিহীন বলতে নারাজ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। দলের অন্যতম সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় জানিয়েছেন, ‘রাজ্য পার্টির কাছ থেকে টাকা খরচের হিসেব চাওয়া হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এর মধ্যে কোনও বিতর্ক কিংবা জল্পনার অবকাশ নেই। এটি বিজেপির একটি রুটিন প্রক্রিয়া। যখনই নির্দিষ্ট ইস্যুতে কোনও রাজ্য পার্টির জন্য টাকা খরচ করা হয়, তখন কাজ শেষের পর সেই সংক্রান্ত হিসেব চায় দল। যাতে পুরো প্রক্রিয়াটিই স্বচ্ছ থাকে।’ বিজেপিরই আরেকটি সূত্রের অবশ্য ব্যাখ্যা, নির্বাচনী খরচ সংক্রান্ত হিসেব কিয়দংশে পেশ করতে হয় কমিশনের কাছেও। দলের রাজ্য নেতারা তা না পাঠালে, কেন্দ্রীয় পার্টি ব্যয়ের নথি জমা দিতে পারে না। ফলে রাজ্য পার্টির কাছ থেকে হিসেব চাওয়াটাই দস্তুর।

বিজেপির পক্ষ থেকে একে যতই ‘স্বাভাবিক’ বলা হোক না কেন, গোটা বিষয়টিকে রীতিমতো তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তাঁদের মতে, প্রধানত বঙ্গ নেতৃত্বের সাংগঠনিক রিপোর্টের ভিত্তিতেই দিল্লির বিজেপি নেতারা জোর গলায় ‘আসল পরিবর্তন’ স্লোগান তুলেছিলেন। দাবি করেছিলেন ২০০ আসন জয়ের। সেইমতোই বাংলায় ‘বিনিয়োগ’ও করেছিল কেন্দ্রীয় বিজেপি। কিন্তু মমতা-ঝড়ের কাছে তাদের সেই অলীক স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়েছে। তিন অঙ্কেই পৌঁছতে পারেনি বঙ্গ বিজেপি। এবারের ভোটে বিজেপির প্রার্থী হওয়া নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা জানিয়েছেন, ‘দলীয় অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট অনুযায়ী যেসব কেন্দ্রে জয়ের সম্ভাবনা বেশি ছিল, সেখানে একরকম অর্থসাহায্য করেছে কেন্দ্রীয় পার্টি। অন্যত্র টাকার পরিমাণ ছিল তুলনায় কম। তবুও গড়ে প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্র পিছু কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয়ে অনুমোদন দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় পার্টির নেতারা। মূলত নির্বাচনী প্রচার, নেতা-কর্মীদের থাকা-খাওয়া এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য কাজের জন্যই খরচ করার জন্যই তা দেওয়া হয়েছিল।’ রাজনৈতিক মহল মতে, পুরোটাই ভস্মে ঘি ঢালা হয়েছিল কি না, সেটিই এখন নিশ্চিত করতে চাইছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal Assembly Elections 2021, #bjp

আরো দেখুন