তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ, প্রাক্তন মন্ত্রী রাজ্যের সেরা আয়করদাতাদের তালিকায়
সেরা আয়করদাতাদের তালিকায় জায়গা করে নিলেন এরাজ্যের শাসকদলের দুই নেতা। একজন প্রাক্তন মন্ত্রী জাকির হোসেন (Jakir Hossain), অন্যজন সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee)। গত আর্থিক বছরে, অর্থাৎ ২০২০-২১ অর্থবর্ষে যাঁরা আয়কর মিটিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে সেরাদের নিয়ে একটি প্রাথমিক রিপোর্ট তৈরি করেছে ইনকাম ট্যাক্স ডিপাটর্মেন্ট। এই রাজ্য, অর্থাৎ কলকাতা সার্কেল থেকেও রিপোর্ট গিয়েছে দিল্লিতে। সেখানেই দেখা যাচ্ছে বাংলার করদাতাদের সেরা ২০০ জনের তালিকায় ৭৬ নম্বরে জায়গা করে নিয়েছেন জাকির হোসেন। ১৬০ নম্বরে রয়েছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই তালিকায় অন্য কোনও রাজনীতিকের নাম নেই। এমনকী বিগত কয়েক বছরেও রাজনীতির লোকজনের ঠাঁই হয়নি এই তালিকায়, এমনটাই জানাচ্ছেন আয়কর দপ্তরের কর্তারা।
গত অর্থবর্ষে অগ্রিম কর প্রদানের ভিত্তিতে যে প্রাথমিক তালিকা তৈরি করেছে আয়কর দপ্তর, সেখানে দেখা যাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গতবারের মন্ত্রিসভার সদস্য ও জঙ্গিপুরের বিধায়ক জাকির হোসেন ১ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকা আয়কর মিটিয়েছেন। শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণবাবু কর মিটিয়েছেন ১ কোটি ১১ লক্ষ টাকা। যাঁরা কোটি টাকার উপর আয়কর জমা করেন, তাঁদের আয়ের বহর কত? বিধানসভা বা লোকসভা ভোটে মনোনয়ন জমা করার সময় আয়ের হিসেব দাখিল করতে হয় প্রার্থীকে। সেখানেই জাকির হোসেন জানিয়েছেন, ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে তাঁর আয় ছিল ৯ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকারও বেশি। সেই সময় মোট সম্পত্তি ছিল প্রায় ৪৩ কোটি টাকার। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের মনোনয়ন পেশের সময় জানিয়েছিলেন, ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে তাঁর রোজগার ছিল প্রায় ৩ কোটি ৬৬ লক্ষ টাকা। মোট সম্পদ ছিল প্রায় ১৭ কোটি টাকার।
এই দু’জন রাজনীতিক ছাড়া আর কাদের নাম আছে এরাজ্যের সেরাদের তালিকায়? দপ্তরের কর্তারা জানাচ্ছেন, একেবারে শীর্ষে আছেন এমন সাত জন অবাঙালি ব্যক্তি, যাঁরা প্রত্যেকে ৮৬ কোটি টাকা আয়কর মিটিয়েছেন। শিল্পপতি কুমারমঙ্গলম বিড়লার নাম আছে ১২ নম্বরে। তাঁর কর মেটানোর অঙ্ক ৩২.২ কোটি টাকা। এরাজ্যের সেরা ৩০ জন করদাতার তালিকায় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বা সঞ্জীব গোয়েঙ্কাদের সঙ্গে একাসনে জায়গা করে নিয়েছেন এক জ্যোতিষীও। যেখানে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় প্রায় ৮.৮৩ কোটি টাকার আয়কর মিটিয়েছেন, ওই জ্যোতিষীর এক বছরে আয়কর মেটানোর অঙ্ক ৬ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা। তবে আয়কর কর্তারা বলছেন, স্বেচ্ছায় কর দেননি ওই জ্যোতিষী। বাড়ি ও অন্যত্র আয়কর হানা দিয়ে তাঁর যে বেআইনি সম্পত্তি ও আয়ের সন্ধান মিলেছে, তার ভিত্তিতেই ইনকাম ট্যাক্স ওই কর আদায় করেছে। অবশ্য এই প্রথম আয়কর হানা হয়নি ওই জ্যোতিষীর বাড়ি। কারণ ২০১৯-২০ অর্থবর্ষেও খানাতল্লাশির পর তাঁর থেকে ৬ কোটি ২৫ লক্ষ টাকার আয়কর আদায় করা হয়েছিল। আয়কর কর্তারা বলছেন, বাংলার সেরা আয়করদাতাদের তালিকায় বাঙালির সংখ্যা গুটিকতক। তা ১০ শতাংশও নয়।