এবার কল্যাণীতে টর্নেডো, লণ্ডভণ্ড মাঝেরচর, ভুট্টাবাজার
ফের টর্নেডো (Tornado) আছড়ে পড়ল কল্যাণী মহকুমা (Kalyani subdivision) এলাকায়। চাকদহের পর এবার কল্যাণী শহরে শনিবার বিকেলে দেখা গেল এই ঝড়ের তান্ডব। কয়েক সেকেন্ডের টর্নেডোয় লণ্ডভণ্ড হয়ে গেল পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝেরচর ও ভুট্টাবাজার এলাকা। ঝড়ের দাপটে কয়েকটি বাড়ির টালির চাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোথাও আবার উড়ে গিয়েছে টিনের চাল। আংশিক ক্ষতি হয়েছে আরও কয়েকটি বাড়ির। গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়েছে। এদিন বিকেলে আচমকা কল্যাণীতে ঝড়ের সঙ্গে ব্যাপক বৃষ্টি হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই ফের স্বাভাবিক হয়ে যায় আবহাওয়া। ছোট আকারের এই টর্নেডো ঘিরে এলাকায় দারুন আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়। এলাকার বাসিন্দারা কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঝড়ের দাপটে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় এলাকা। তবে ঝড় থামার কিছু সময় পরেই উদ্ধারকাজে হাত দেয় পুরসভা। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ইলেকট্রিক কাটার দিয়ে গাছ কেটে এলাকা পরিষ্কার করা হয়। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রিপল দেওয়া হয়।
কল্যাণী পুরসভার মুখ্য প্রশাসক সুশীলকুমার তালুকদার বলেন, যশ ঘূর্ণিঝড়ের সময় থেকেই আমরা সতর্ক রয়েছি। এদিনের ঝড়ে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাছ ভেঙে পড়েছে, বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে গিয়েছে। আমরা খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এলাকায় পৌঁছে কাজে নেমে পড়ি। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির বাসিন্দাদের ত্রিপল দেওয়া হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার চাকদহ, শান্তিপুরের বাসিন্দারা এই ধরনের টর্নেডোর সাক্ষী ছিলেন। তার আগে হালিশহর এবং ব্যান্ডেলে এই ঝড় হয়েছে। বাসিন্দাদের দাবি, কল্যাণী শহরে এদিন টর্নেডো ঝড়টা গঙ্গার তীরবর্তী মাঝেরচরের দিক থেকে ভুট্টাবাজারের একটা পাশ ঘেঁষে সোজাসুজি বেরিয়ে গিয়েছে। যে এলাকা দিয়ে এই টর্নেডো গিয়েছে, সেই এলাকাগুলিকে একেবারে তছনছ করে দিয়ে গিয়েছে। এর প্রভাবে শহরের বি ব্লকের বেশ কিছু এলাকায় ঝড়ো হাওয়া দেখা দেয়। তবে টর্নেডোর গতিপথে বেশিরভাগ এলাকায় ফাঁকা জায়গা থাকায় ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই এড়ানো সম্ভব হয়েছে। ঝড়ের গতিপথের মধ্যে পড়ে কয়েকটি বাড়ির টিনের চাল পাক খেতে খেতে উড়ে গিয়েছে দূরে। মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কয়েকটি বাড়ির অ্যাজবেস্টর এবং টালির চাল ভেঙে গিয়েছে। কিছু টালির চাল দেওয়া দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় ভুট্টাবাজার এলাকার বাসিন্দা কৃষ্ণ মাহাত বলেন, এই ঝড়ের জন আবহাওয়া দপ্তরের আগাম কোনও সর্তকতা ছিল না। হঠাৎ করে কিছু বুঝে ওঠার আগেই বেশ কয়েকটি বাড়ি তছনছ হয়ে যায়। ঝড়ের ওই গতিবেগ দেখে আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। আরেক বাসিন্দা পেশায় দিনমজুর মনোজ সাউ বলেন, ঝড়ের তাণ্ডবে আমাদের বাড়ির চাল উড়ে গিয়েছে। লকডাউনে এমনিতেই আমাদের পরিস্থিতি খারাপ। তার মধ্যে এই ঝড়ে প্রচুর ক্ষতি হয়ে গেল।