ভোটে বিপর্যয়ের পর হেস্টিংয়ের কার্যালয়ের বহর ছোট করছে বিজেপি
মাসে ভাড়া বাবদ গুনতে হচ্ছে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা। বিধানসভা ভোটে (Assembly Election 2021) পরাজয়ের পর দলের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয় কার্যত ফাঁকা মাঠ। নেই কোনও ব্যস্ততা। চারটে তলা ভাড়া নেওয়া এই ঝাঁ চকচকে কার্যালয় এখন কার্যত বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই ব্যয়ভার কমাতে হেস্টিংস অফিসের তিনটে তলা ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বঙ্গ বিজেপি। থাকছে না নির্বাচনী যুদ্ধের জন্য তৈরি হওয়া সেই অত্যাধুনিক ‘কল সেন্টার’ও। মাত্র একটি তলা অর্থাৎ আটতলাটিই শুধুমাত্র রেখে দেওয়া হচ্ছে।
রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) জানিয়েছেন, “যেটুকু দরকার আগে ছিল সেই আট তলাটা শুধু রেখে দেওয়া হবে। বাকি তিনটি তলা ছেড়ে দেওয়া হবে। সেটাই আমি বলে দিয়েছি। কল সেন্টার থাকবে না। এই মাস থেকেই ছেড়ে দিতে বলেছিলাম। তাছাড়া অফিসও এখন তো এমনিতেই বন্ধ।” দলের মূল রাজনৈতিক কাজকর্ম কি আবার পরিচালিত হবে সেই মুরলীধর সেন লেনের কার্যালয় থেকেই? এমনই চর্চা শুরু হয়েছে দলের অন্দরে। যে কার্যালয়ে থাকাকালীনই গত ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে চমকপ্রদ ফল করেছিল গেরুয়া শিবির।
৬ নম্বর মুরলীধর সেন লেন বিজেপির (BJP) রাজ্য দপ্তর। যেখানে রাজ্য সভাপতি থেকে শুরু করে সাধারণ সম্পাদক ও পদাধিকারীদের ঘর রয়েছে। আবার পিছনের বিল্ডিংয়েও একাধিক ঘর রয়েছে। ২০১৬-র বিধানসভা ও ২০১৯-র লোকসভা নির্বাচনের সময়ও দলের কাজকর্ম এই দপ্তর থেকেই পরিচালিত হয়েছিল। রাজ্য দপ্তরে জায়গার অভাব থাকায় ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখেই হেস্টিংসে আলাদা করে নির্বাচনী দপ্তর বানায় বিজেপি। ১০ তলা বাড়ির চারটি তলা নিয়ে তৈরি হয় কার্যালয়। পাঁচ তলায় রয়েছে মিডিয়া সেন্টার ও আইটি সেন্টার। সাততলায় বিশাল কল সেন্টার। আট ও ন’তলায় রয়েছে নেতাদের বসার আলাদা আলাদা ঘর। ভোটের সময় পর্যন্ত এখানে সব সময়ই লেগে থাকত ভিড়। শুধু কল সেন্টারেই কয়েকশো ছেলেমেয়ে কাজ করতেন। ২০২১-এর নির্বাচনের বিশাল ওয়্যার রুম তৈরি হয়েছিল এই হেস্টিংস কার্যালয়ে।
দলীয় সূত্রে খবর, মাসিক ভাড়া দিয়েই এই চারটি তলা নেওয়া হয়েছে। দলের একাংশ মনে করছে কয়েকটি দপ্তর ছাড়া মূল কাজকর্ম পরিচালনা হোক ফের মুরলীধর সেন লেনের দপ্তর থেকেই। এক রাজ্য নেতার কথায়, মধ্য কলকাতায় ধর্মতলার অদূরে মুরলীধর সেন লেনের অফিসে পৌঁছনো অত্যন্ত সহজ। আর গার্ডেনরিচের কাছে হেস্টিংস দপ্তরটা শহরের এক প্রান্তে। মেট্রোপথেও সমস্যা, আবার যে কোনও প্রান্ত থেকে সরাসরি বাসে করেও যাওয়া যায় না। মূলত নেতাদের গাড়ি করেই যাতায়াত করতে হয়। সেক্ষেত্রে মুরলীধর সেন লেনের দপ্তর অনেক সুবিধাজনক বলে মনে করছেন ওই রাজ্য নেতা। দলের একাংশের কথায়, এই মুহূর্তে বড় কোনও নির্বাচন নেই। তাছাড়া মাসে কয়েক লক্ষ টাকা গোনা আপাতত বোঝা বলেই মনে করছে দলের একাংশ। তাই সিদ্ধান্ত হয়েছে, একটা তলা রেখে বাকি তিনটি তলা ছেড়ে দেওয়া হবে।