দক্ষিণবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালিতে জরুরি ভিত্তিতে ৫০ লক্ষ ম‍্যানগ্রোভ রোপণ করবেন বিধায়কই

June 2, 2021 | 2 min read

যশ (Yaas) হামলায় আমফানের (Amphan) মতো শক্তি না থাকলেও উত্তর ২৪ পরগনার সুন্দরবন এলাকায় উপড়ে গিয়েছে ম্যানগ্রোভ। জলের ধাক্কায় পড়ে গিয়েছে বহু পূর্ণবয়স্ক গাছ। মাটি ক্রমশই আলগা হয়ে যাচ্ছে। সরাসরি আছড়ে না পড়লেও ঘূর্ণিঝড় যশ ক্ষতি করে দিয়েছে অনেকটাই।

উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট (Basirhat) মহকুমার হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালিতে জরুরি ভিত্তিতে বসিরহাট পঞ্চাশ লক্ষ ম‍্যানগ্রোভ বৃক্ষরোপণ করতে চলেছেন সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাত। চলছে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় জমি পরিদর্শন এবং কোথায় কত গাছ লাগানো হবে সেই সংক্রান্ত হিসেবের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছেন।

এই বিষয়ে সন্দেশখালি (Sandeshkhali) ২নং ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক অর্ণব মুখ‍্যোপাধ‍্যায় জানান, এই পঞ্চাশ লক্ষ ম‍্যানগ্রোভের মধ‍্যে যেমন সুন্দরবনের জন্য ক‍্যাঁওড়া, হেতালের মতো গাছ আছে তেমনি সুন্দরী, গরান ও গেঁওয়ার মতো গাছও আছে। সুন্দরবন-সহ গোটা বসিরহাট মহকুমা জুড়ে গতবছর আমফানের তাণ্ডবে গাছের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছিল, সেই ক্ষতি পূরণ করতে তৎপর প্রশাসন।

একদিকে যেমন সুন্দরবন এলাকার ম্যানগ্রোভের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল, তেমনি হেমনগর থেকে বসিরহাট পর্যন্ত বহু জায়গাতেই গাছ উপড়ে পড়ে যায়। শুধুমাত্র বসিরহাট শহরকে এই উপড়ানো গাছের থেকে মুক্ত করতেই বেশ কয়েকদিন লেগে যায়। তারপর এবছর ইয়াশেরর তাণ্ডবে সেই ক্ষয়-ক্ষতি না হলেও জলোচ্ছ্বাসের কারণে সুন্দরবনের সন্দেশখালি ১ ও ২ নং, হিঙ্গলগঞ্জ, হাসনাবাদ ও মিনাখাঁর নদী উপকূলবর্তী এলাকার ম‍্যানগ্রোভ যথেষ্ট পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বহু জায়গায় গাছ যেমন পড়ে গেছে তেমনি গোড়া আলগা হয়ে মাটি সরে যাওয়ার কারণে গাছ গিয়েছে হেলে। তাই দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আগামীদিনে সুন্দরবন এলাকার নদীগুলি বনাঞ্চলকে গ্রাস করে জনবসতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে।

সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতো বলেন, “সুন্দরবনই কিন্তু ঝড় বা জলোচ্ছ্বাস সামাল দিয়ে কলকাতা, বারাসাত বা বসিরহাট শহরের আশেপাশের এলাকাকে রক্ষা করে চলেছে। এটা সম্ভব হচ্ছে ম্যানগ্রোভের জন্য। আম্ফানের পর বসিরহাট মহকুমা, বসিরহাট ফরেস্ট রেঞ্জের ব্যাঘ্র প্রকল্প এলাকায় পঁচাত্তর লক্ষ ম্যানগ্রোভ লাগানো হয়েছিল। কিন্তু অন্য গাছের সঙ্গে এই গাছের তফাত হল এটা বড় হতে বাকি গাছের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ সময় নেয়।”

এছাড়াও অভিযোগ, সুন্দরবন এলাকার অনেক অংশেই প্রাকৃতিকগণ ভাবে ম্যানগ্রোভ তৈরি হয়েছে। যা কেটে ভেড়ি তৈরি করার অভিযোগও মাঝে মাঝে শোনা গেছে। ফলে প্রশাসন এবং বনবিভাগ যেমন দায়িত্ব পালন করছে তেমনি সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে, তা না হলে নদীর জলোচ্ছ্বাস আগামীদিনে আরও উঁচু হতে পারে, আর তা থেকে বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে তাই আগাম এই ম্যানগ্রোভ লাগানোর প্রস্তুতি চলছে যাতে বড় বড় সাইক্লোন রক্ষা করতে পারে এই ম্যানগ্রোভ।

যশ ঘূর্ণিঝড় গতবারের আমফানের মতো শক্তিশালী ছিল না। তবে যশের হামলায় সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভে ক্ষতি মোকাবিলা না করলে পরবর্তী সময়ে বিপদ আরও বাড়বে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#sundarbans, #Mangroves, #yaas cyclone

আরো দেখুন