রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

দীঘায় গাফিলতির জন্য প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তদন্ত হবে: নবান্নে মমতা

June 2, 2021 | 2 min read

কংক্রিট বা ইট-পাথর দিয়ে তৈরি বাঁধ প্রকৃতির রোষে, জলের তোড়ে ভেঙেই যাবে। টাকাও জলে চলে যাবে। তাই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করবে প্রকৃতিই। তাই এই কাজে মোটা গাছের গুঁড়ি ব্যবহারের পরামর্শ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বুধবার নবান্নে ‘যশ’ মোকাবিলায় বিভিন্ন দপ্তরের সাংবাদিক বৈঠকে ভাঙা বাঁধ তৈরিতে আরও প্রাকৃতিক উপায় অবলম্বনের কথা বললেন তিনি। এবার পূর্ব মেদিনীপুরেও ম্যানগ্রোভ অরণ্য তৈরির কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী। বনদপ্তরের দায়িত্বে আরও ৫ কোটি করে ম্যানগ্রোভ চারা বসাতে হবে দুই ২৪ পরগনা লাগোয়া সুন্দরবন এবং দিঘায়।

‘আম্পান’, ‘যশ’-এর মতো ঘূর্ণিঝড় বুঝিয়ে দিয়েছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কাছে কতটা অসহায় মানুষ, মানুষের তৈরির যাবতীয় কৃত্রিম সৃষ্টি। তা থেকে শিক্ষা নিয়ে আম্পানের পর পরিবেশ রক্ষায় বেশ খানিকটা পদক্ষেপ করেছিল কলকাতা পুরসভা। বৃক্ষরোপন ছিল তার মধ্যে অন্যতম। তারও আগে ৫ কোটি ম্যানগ্রোভ চারা বসানো হয়েছিল সুন্দরবনেও। কিন্তু আম্পানে সব নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এ নিয়ে বুধবারের সাংবাদিক বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। বললেন, ‘আম্পানের গাছগুলো কোথায় গেল? তিনদিনের মধ্যেই রিপোর্ট চাই। রিপোর্ট দেওয়া হবে বলে, বসে থাকবেন না। তিনদিনের মধ্যেই দেবেন।’

এবার ‘যশ’ (Yaas) তছনছ করেছে রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকা। সেসব জায়গায় এবার একই উপায়ে পরিবেশ সংরক্ষণের পরামর্শ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। গাছ লাগানো, গাছের গুঁড়ি দিয়ে বাঁধের কাজ করা – এমনই একগুচ্ছ কাজ দ্রুত করে ফেলার নির্দেশ দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ২৬ তারিখ ফের ভরা কোটাল। তার আগে যশে ভেঙে যাওয়া সমস্ত বাঁধ অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে মেরামতি করতে হবে। ঘাসের মতো একপ্রকার গাছের গুঁড়ি ব্যবহার হোক। এটা বোঝাতে গিয়ে দিঘার বোল্ডার এবং বাঁধ কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা এঁকে বোঝালেন মুখ্যমন্ত্রী।

এদিন নবান্নে (Nabanna) প্রশাসনিক বৈঠকে সেচ দফতরের কাজ নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘প্রতিবছরই সেচ দফতর বাঁধ সারাচ্ছে, প্রতিবছরই ভেঙে যাচ্ছে। লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে জলে যাচ্ছে।’

দিঘা সৌন্দর্যায়েনর কাজ প্রসঙ্গে এদিন অসন্তোষ প্রকাশ করেন বলেন, ‘দিঘায় সৌন্দর্যায়নের ভিত্তিটাই ভুল হয়েছে। বছরের পর বছর ব্রিজের কাজ কেন আটকে আছে? দিঘার চিফ ইঞ্জিনিয়ারকে দায়িত্ব নিতে হবে।’

তিনি যোগ করেন, ‘মন্দারমণিতে হোটেলের ক্ষতি হয়েছে নিজেদের দোষে। সমুদ্রের কাছে হোটেল তৈরি করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সুন্দরবনে বিদ্যাধরী নদীর বাঁধ সবথেকে বেশি ভেঙেছে। বিদ্যাধরীর জলে বেশিরভাগ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। প্রয়োজনে ১০০ দিনের কাজের লোকেদের কাজে লাগাতে হবে।’

মমতার বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, ‘প্রতি বছরই ঘূর্ণিঝড় হচ্ছে, বাঁধ ভাঙছে। বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে ব্যবস্থা করতে হবে। অন্তত ১০ বছরের জন্য ঠিকাদারদের দায়িত্ব দিতে হবে।’

ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির কথা বলতে গিয়ে বন দফতরের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ফরেস্ট ডিপার্টমেন্ট কী করেছে? ৫ কোটির ম্যানগ্রোভ পুঁতবে বলেছিল। হয়নি।

প্রসঙ্গত, আম্পানের সময় সেচমন্ত্রী ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপিতে যোগদানের আগে গতবছর নভেম্বরে সেচমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। তার আগে ২০১১ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত রাজ্যের সেচমন্ত্রী ছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর তাঁকে বনমন্ত্রী করা হয়।

মুখ্যমন্ত্রী শেষে বলেন কেন্দ্রের থেকে টিকা সংগ্রহের বিষয়ে গতকাল ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক তাঁর সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। কেরালার মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকেও চিঠি পেয়েছেন তিনি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Digha, #cyclone yaas, #Mamata Banerjee

আরো দেখুন