চাই ২৩টি জায়গায় কংক্রিটের বাঁধ, চিহ্নিত করে প্রস্তাব দঃ২৪ পরগণা প্রশাসনের
সুন্দরবন সহ উপকূলের দুর্বল অংশগুলিকে রক্ষা করতে অন্তত ২৩টি জায়গায় কংক্রিটের বাঁধ নির্মাণ করা জরুরি। সংশ্লিষ্ট জায়গাগুলি চিহ্নিত করে সেচদপ্তরে এই প্রস্তাব পাঠিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। সব মিলিয়ে ২৫ হাজার ৫২০ মিটার এলাকায় স্থায়ী কংক্রিটের বাঁধ (Embankment) তৈরির কথা বলা হয়েছে। তার মধ্যে সুন্দরবন এলাকায় রয়েছে ১৮ হাজার ৮৭০ কিমি। গত দু’বছরে ঘূর্ণিঝড় ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে উপকূলবর্তী এলাকায় মাটির বাঁধ ভেঙে যেভাবে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার স্থায়ী সমাধানের জন্যই কংক্রিটের বাঁধের প্রয়োজনীতা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে থেকেই এই দাবি উঠে এসেছে। জেলা প্রশাসন সেই এলাকা চিহ্নিত করে সেচদপ্তরে প্রস্তাব আকারে পাঠিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নদী বাঁধের উপর বাড়তি গুরুত্ব দিতে বলায় এই কাজে কোমর বেঁধে নেমেছে জেলা প্রশাসন।
বুলবুল, ফণি, আম্পানের পর যশ (Yaas)। ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে এবার ভরা কোটালের জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকার নদী বাঁধ দুর্বল হয়ে পড়েছে। মাটির প্রলেপ কিংবা বস্তা ফেলে তা তখনকার মতো সারানো হলেও জলের তোড়ে আলগা হচ্ছে মাটি। এবারের দুর্যোগে আরও গভীর হয়েছে সেই ক্ষত। তাই মুখ্যমন্ত্রী এ নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করার পর বিভিন্ন ব্লক আধিকারিক, সেচ দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ার এবং জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা বৈঠক করে দুর্বল জায়গাগুলি চিহ্নিত করেছেন। যেমন, নামখানা ব্লকের পাতিবুনিয়া ও গোসাবার কুমিরমারি এলাকায় তিন হাজার মিটার কংক্রিটের বাঁধ নির্মাণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এবারের কোটালে এইসব এলাকার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এদিকে, কুলতলির দেউলবাড়িতে আব্দুল মোল্লারটেক থেকে ছিটকুড়ি খাল পর্যন্ত ২ হাজার ২০০ মিটার জুড়ে ইটের ব্লক দিয়ে বাঁধ নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, এই অঞ্চলের নদী বাঁধ অতি দুর্বল বলে চিহ্নিত হয়েছে। কংক্রিটের বাঁধ তৈরির তালিকায় পাথরপ্রতিমার গোবর্ধনপুর (৫৪০ মিটার), বাসন্তীর রামচন্দ্রখালি (১০০০ মিটার), গোসাবার সাতজেলিয়া (৮০০ মিটার), সাগরের ধবলাহাট (২৫০ মিটার) সহ বিস্তীর্ণ এলাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
সুন্দরবনের বাইরে বজবজ, মহেশতলা এবং ডায়মন্ডহারবারে গঙ্গার পাড় বরাবর কিছু অংশে কংক্রিটের বাঁধের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছে জেলা প্রশাসন। যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, তাতে নুঙ্গি ফেরিঘাট থেকে বজবজ ফেরিঘাট (২৫০০ মিটার), বজবজ থানা থেকে পুজালি ফেরিঘাট (২০০০ মিটার), ডায়মন্ডহারবার ২ নং ব্লকের হাটখোলা শ্রীফলবেরিয়া অঞ্চলের (৮০০ মিটার) কথা বলা হয়েছে।