নানা কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে রাজ্যজুড়ে পালিত বিশ্ব পরিবেশ দিবস
নানা কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে শনিবার রাজ্যজুড়ে পালিত হল বিশ্ব পরিবেশ দিবস (World Environment Day)। এদিন সর্বত্রই বৃক্ষরোপণের পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষার বিষয়ে আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়। বিশেষ সভার আয়োজন করেছিল দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। দপ্তরের অতিরিক্ত সচিব বিবেক কুমার জানান, সুন্দরবন, সাগর এবং দীঘা উপকূলবর্তী অঞ্চলে কোস্টাল জোন ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র দাবি করেছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন ৪৯ শতাংশ কমানো না গেলে তাপমাত্রা তিন থেকে চার ডিগ্রি বেড়ে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী কয়েক দশকের মধ্যে ১০ লক্ষ প্রাণী পৃথিবী থেকে অবলুপ্ত হয়ে যাবে। দপ্তরের মন্ত্রী রত্না দে নাগ বলেন, কোনও সরকারের একার পক্ষে পরিবেশ দূষণের মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। তাই সবাইকে এই বিষয়ে সচেতন হতে হবে।এদিন শহরে কলকাতা পুরসভার তরফে প্রায় ৫০০ গাছ লাগানো হয়। চেতলা পার্কে গাছ লাগান রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। তিনি বলেন, আগামী প্রজন্মকে সুস্থ পরিবেশ দিয়ে যাওয়া আমাদের কর্তব্য। বিধাননগর পুরসভায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু, রাজারহাট-নিউটা
উনের বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়, পুরসভার মুখ্য প্রশাসক কৃষ্ণা চক্রবর্তী সহ অন্যান্যরা।
কলকাতা পুলিসের সাউথ-ইস্ট ট্রাফিক গার্ডের পক্ষ থেকে গড়িয়াহাট চত্বরে গাছ বসিয়ে দিনটি উদযাপন করা হয়। হরিশ মুখার্জি রোডে বৃক্ষরোপণ ও অনগ্রসর মানুষের হাতে মশারি, মাস্ক, সানিটাইজার তুলে দেন কলকাতা দক্ষিণের সাংসদ মালা রায়। রাজারহাট-নিউটাউনে ইস্টার্ন হাই কমপ্লেক্সের সামনে বৃক্ষরোপণ করেন বিজেপি’র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বেহালায় সিপিআইয়ের পক্ষ থেকেও বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। এদিন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকেও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় গাছ লাগিয়ে দিনটি উদযাপন করা হয়। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন উপাচার্য মানসকুমার সান্যাল। বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে এই দিবস পালিত হয় রথতলা বনবিভাগে।
নদী বাঁধ বাঁচাতে একদল যুবক-যুবতী ইছামতীর পাড়ে হেতাল, কেওড়া, সুন্দরী, গরান, গেওয়া ইত্যাদি প্রজাতির বেশ কিছু গাছ লাগায়। ম্যানগ্রোভের কারণে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার প্রবণতা কম থাকে। তাই সরকারও আগামী পাঁচ বছরে পাঁচ কোটি ম্যানগ্রোভ লাগানোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। জয়নগর-মজিলপুর পুরসভার তিলিপাড়ায় গঙ্গার ধারে গাছ লাগানো হয়। রায়দিঘিতে বিতরণ করা হয় গাছের চারা। সুন্দরবনকে বাঁচাতে কুলতলির চিতুরির ফরেস্ট এলাকায় গাছ বসানো হয়। সবুজ বাঁচানোর ডাক দিয়ে এদিন হাওড়া গ্রামীণ জেলাজুড়ে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
এদিকে, ২০২২ সালে হতে চলেছে পরিবেশ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সম্মেলন ওয়ার্ল্ড সাস্টেনেবল ডেভেলপমেন্ট সামিট। তারই প্রাক-অনুষ্ঠান ছিল এদিন। বিষয় ছিল ‘জল’।