কোথায় ডিজিটাল ইন্ডিয়া? বিহারের ১১৮টি গ্রাম যেন বিচ্ছিন্ন দ্বীপ
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’র ঢক্কানিনাদই সার! নেই ইন্টারনেট সংযোগ। হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠানোর জন্যও পাড়ি দিতে হয় ২২ কিলোমিটার। কেন্দ্রের ইন্টারনেট নির্ভর টিকাকরণ কর্মসূচির কার্যত সলিলসমাধি ঘটেছে ‘ডবল ইঞ্জিন’ বিহারের ১১৮টি গ্রামে। ফলে, অথই জলে স্থানীয় প্রশাসন।
এই ১১৮টি গ্রাম বিহারের (Bihar) আধৌরা ব্লকের অধীনে পড়ে। জেলা সদর কাইমুর থেকে দূরত্ব মাত্র ৫৮ কিলোমিটার। কিন্তু তা সত্ত্বেও ইন্টারনেট সংযোগের চিহ্নমাত্র মিলবে না এই গ্রামগুলিতে। কোউইন দূর অস্ত, বিহার সরকারের হোম আইসোলেশন ট্র্যাকিং বা এইচআইটি অ্যাপের নামও জানা নেই এই গ্রামগুলির বাসিন্দাদের। কাইমুরের ডেপুটি ডেভেলপমেন্ট কমিশনার কুমার গৌরব বলেন, এই এলাকাগুলিতে যাতে অফলাইনে টিকাকরণ করা যায়, সেজন্য আমরা রাজ্য সরকারকে চিঠি পাঠিয়েছি।
ইন্টারনেট সংযোগের এই বেহাল দশার কথা মেনে নিচ্ছেন বিডিও অলোককুমার শর্মাও। তিনি জানান, জেলা সদরে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ পাঠানোর জন্য ২২ কিলোমিটার দূরে উত্তরপ্রদেশ সীমানা লাগোয়া একটি জায়গায় যেতে হয়। তাছাড়া কোনও সিগন্যাল মেলে না। এজন্য আলাদাভাবে আমার একজন লোক লাগে। এই ২২ কিলোমিটার পাড়ি দেওয়ার জন্য বাইক ও পেট্রলের ব্যবস্থা করতে হয়।
মূলত অরণ্যে ঘেরা এই ১১৮টি গ্রামে মূলত আদিবাসী মানুষের বাস। জনসংখ্যা ৫৭ হাজার। ইন্টারনেট দূরের কথা, নেই আধুনিক কোনও সুযোগ সুবিধাও। অন্তত ছ’টি পঞ্চায়েতে পাকা সড়ক যোগাযোগ গড়ে ওঠেনি। শর্মা বলেন, বর্ষার সময় এই এলাকাগুলিতে পৌঁছনো মুশকিল হয়ে পড়বে প্রশাসনের পক্ষে। হাজারো প্রতিকূলতার মধ্যে আশার আলো একটাই। গত ২৩ মে এই ব্লকটিকে করোনামুক্ত বলে ঘোষণা করা হয়েছে। ব্লক অফিসাররা জানাচ্ছেন, তার আগে পর্যন্ত যাঁরা আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাঁদের খুবই সামান্য উপসর্গ ছিল। কাউকেই হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন পড়েনি। অচল ইন্টারনেটের পাশাপাশি গুজবের কারণেও এই গ্রামগুলিতে টিকাকরণের পথে বাধা আসছে। এলাকায় এলাকায় গুজব ছড়িয়েছে, এই টিকা নিলে মৃত্যু অবসম্ভাবী। জোড়া সমস্যার জেরে ১১৮টি গ্রামের মাত্র ২ হাজার বাসিন্দাকে এখনও পর্যন্ত টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া সম্ভব হয়েছে।