টিকা নিলে কমছে করোনায় মৃতের সংখ্যা, চমকপ্রদ পরিসংখ্যান বাঙুরের
করোনাকে জব্দ করতে টিকার কোনও বিকল্প নেই। এবার জানা গেল পশ্চিমবঙ্গের প্রেক্ষিতে এই প্রথম তার হাতেগরম তথ্য। বাংলার অন্যতম বড় ও নামকরা এম আর বাঙুর কোভিড হাসপাতালে (Bangur hospital) টিকা নিয়ে এবং না-নিয়ে ভর্তি করোনা রোগীদের পরিসংখ্যান থেকে জানা গেল এই চাঞ্চল্যকর পরিসংখ্যান। জানা যাচ্ছে, বাঙুরে টিকা (Covid vaccines) না-নেওয়া করোনা রোগীদের মৃত্যুহার ১২ শতাংশ। আর দু’টো ডোজ টিকা নেওয়ার পর ভর্তি রোগীদের মৃত্যুহার মাত্র ৬-৭.৫ শতাংশ। সংখ্যার হিসেবে তা আরও নগণ্য। এখনও পর্যন্ত মাত্র ছ’জন! পাঁচজন কোভিশিল্ড নিয়েছিলেন। একজন কোভ্যাকসিন। মহামারীবিদরা বলছেন, টিকার সাফল্য আর গভীরে। কারণ, ঘটনা হল টিকা নেওয়ার পর আক্রান্ত ও ভর্তি রোগীর সংখ্যাই অনেক কম। যৎসামান্য মানুষ ভর্তি হচ্ছে। তারপর তো আসছে তাঁদের সুস্থতা বা মৃত্যুর কথা!
স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তীর উদ্যোগে এই প্রথম বাংলায় টিকা নেওয়ার পর আক্রান্ত ও মৃত্যুর খতিয়ান নিয়ে সমীক্ষা করেছে স্বাস্থ্যভবন। আপাতত বাঙুরের মতো একটি বড় কোভিড হাসপাতালের পরিসংখ্যানগত তথ্য তুলে এনেছে দপ্তর। এরপর আক্রান্ত ও মৃত্যুর রাজ্যওয়ারি পরিসংখ্যান তুলে আনার চেষ্টা করা হবে বলে ডাঃ চক্রবর্তী সোমবার জানিয়েছেন।
স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রের খবর, করোনা পর্বে অর্থাৎ ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে এবছর ৬ জুন পর্যন্ত টালিগঞ্জের এম আর বাঙুর হাসপাতালে ১৩ হাজার ৯৪ জন কোভিড রোগী ভর্তি হয়েছেন। সিংহভাগই টিকা না-নেওয়া রোগী। সংখ্যা হল ১২ হাজার ৫৯৩ জন। মারা গিয়েছেন মোট ১৫৯৩ জন (সোমবার দুপুর পর্যন্ত)। তার মধ্যে টিকা নেননি ১৫৪৭ জন।
প্রথম ডোজ টিকা নেওয়ার পরও ভর্তি হন ৫০১ জন। এর মধ্যে কোভিশিল্ড নিয়েছিলেন ৪০০ জন। কোভ্যাকসিন নেন ১০১ জন। কোভিশিল্ডের প্রথম ডোজ নিয়ে ভর্তি ৪০০ জনের মধ্যে মারা যান ৩৬ জন (মৃত্যুহার ৯ শতাংশ)। অন্যদিকে, কোভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ পেয়ে ভর্তি ১০১ জনের মধ্যে মারা যান ১০ জন (মৃত্যুহার ১০ শতাংশ)। আর যখন মানুষজন দু’টি ডোজই টিকা নিয়েছে, তখন? স্বাস্থ্যদপ্তরের শীর্ষ সূত্রে জানাচ্ছে, কোভ্যাকসিনের কোর্স সম্পূর্ণ শেষ করেও আক্রান্ত এবং তারপর ভর্তি হয়েছেন, এমন মানুষও আছেন। কিন্তু, এই সংখ্যা হাতেগোনা—মাত্র ১৭ জন। তাঁদের মধ্যে মারা গিয়েছেন মাত্র ১ জন। (মৃত্যুহার ৫.৮ শতাংশ)। কোভিশিল্ডের ক্ষেত্রে দু’টি ডোজ নেওয়ার পর ভর্তি হয়েছেন ৬৭ জন। মারা যান ৫ জন (মৃত্যুহার ৭.৫ শতাংশ)।