ফ্ল্যাট মালিকরা উদাসীন, শহরে ডেরা বাঁধছে ভিন রাজ্যের দুষ্কৃতীরা
ক্রমশ ভিন রাজ্যের অপরাধীদের ‘আশ্রয়স্থল’ হয়ে উঠছে শহর কলকাতা। বিভিন্ন সময়ে তারা যেমন ধরা পড়েছে পুলিসের জালে, তেমনই আবার অনেক ক্ষেত্রে পুলিসের চোখে ধুলো দিয়ে পালাতেও সক্ষম হয়েছে দুষ্কৃতীরা (Criminals)। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অভিযোগ, ভুয়ো নথি এবং ভুয়ো পরিচয় দিয়ে তারা থাকছে শহর ও শহরতলির বিভিন্ন বহুতলে। কেন এই শহরকে বেছে নেওয়া হচ্ছে বারবার? এক্ষেত্রে একদিকে যেমন দায়ী পর্যাপ্ত পুলিসি নজরদারি অভাব, তেমনই দায়ী ফ্ল্যাট মালিকের নথি যাচাইয়ের উদাসীনতা। এই শহরে যোগাযোগ মাধ্যম সবচেয়ে ভালো। আকাশপথ, সড়কপথ, রেলপথের সুবন্দোবস্ত থাকায় বহিরাগত অপরাধীদের গা ঢাকা দেওয়ার ‘চয়েস প্লেস’ হয়ে উঠেছে কলকাতা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, অন্যান্য রাজ্যে অপরাধ করে এই শহরে পালিয়ে এসে নিরাপদে দিন কাটাচ্ছে তারা।
অতীতে যেমন গুলশান কুমারের হত্যাকারী গা ঢাকা দেওয়ার জন্য বেছে নিয়েছিল এই শহরকেই। আবার কুখ্যাত জঙ্গি বাবু ভাই ওরফে জালালুদ্দিনকে উত্তর কলকাতার বেলগাছিয়া থেকে আরডিএক্স সমেত গ্রেপ্তার করেছিল সিআইডি। উত্তরপ্রদেশ থেকে এসে সে লুকিয়ে ছিল কলকাতায়। এছাড়াও চিৎপুরে গত বছর এক কুখ্যাত অপরাধী লুকিয়ে ছিল। পরে পুলিসি অভিযানের কথা টের পেয়ে উপর থেকে ঝাঁপ দিলে মৃত্যু হয় তার।
এদিকে, রাজ্যে এনকাউন্টারের ঘটনাও নতুন নয়। তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর সবচেয়ে বড় এনকাউন্টারের ঘটনা দেখেছে রাজ্যবাসী। মাওবাদী নেতা কিষেনজির মৃত্যু হয় রাজ্য পুলিসের সঙ্গে গুলি বিনিময়ে। তালিকায় রয়েছে ১৯৯৮ সালে পার্ক স্ট্রিট এনকাউন্টারের ঘটনা। যেখানে উত্তরপ্রদেশ পুলিসের এসটিএফের এনকাউন্টারে মৃত্যু হয় মনজিৎ সিং মাঙ্গের সহযোগীদের। পায়ে গুলি লাগে মনজিতের। একই বছর দমদমেও এনকাউন্টার হয়। কুখ্যাত অপরাধী ওয়াজিদ অকুনজি এবং কলকাতা পুলিসের গোয়েন্দাদের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়। এসআই মনোজ দাস ও অকুনজি আহত হয় সেই ঘটনায়। এদিকে, বছর ছয়েক আগে হাওড়ার ঘুষুড়িতে এনকাউন্টারে মৃত্যু হয় এক দুষ্কৃতীর। ২০১৯ সালের ১৩ জুলাই মাসে পুলিস আত্মসমর্পণ করতে বললে তাতে রাজি না হওয়ায় প্রভু সাউ নামে এক দুষ্কৃতী এনকাউন্টারে মারা যায়। এরপর ফের এদিন ঘটনাস্থল নিউটাউন সাপুরজি। এনকাউন্টারে নিকেশ দুই দুষ্কৃতী।