বিরলতম মামলাই স্থানান্তর করা যায়, নারদ কাণ্ডে সওয়াল আইনজীবীর
বিরলের মধ্যে বিরলতম না হলে অভিযুক্তদের অধিকার খর্ব করে মামলা অন্য আদালতে স্থানান্তরের নির্দেশ দেওয়া যায় না। কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে বুধবার এমনই দাবি করা হল নারদ মামলার (Narada Case) চার অভিযুক্তের তরফে। যদিও এই বেঞ্চই অভিযুক্ত সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়কে সম্প্রতি অন্তর্বর্তী জামিন দিয়েছে।
এদিন শুনানির শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর তরফে হলফনামা জমা করতে চাইলে সিবিআই জানায়, তাদের সওয়াল পর্ব শেষ হয়ে যাওয়ার পর হলফনামা জমা করা যায় না। এই বক্তব্যের পাল্টা বিরোধিতা করেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত। কিন্তু, বেঞ্চ জানায়, সিবিআই সওয়াল শেষ হওয়ার পর এমন হলফনামা গ্রহণ করা কঠিন। পরে বিষয়টি বিবেচনা করার আশ্বাসও দেয় বেঞ্চ।
সিবিআই যেভাবে হাইকোর্টে (Calcutta High Court) এসেছে, তাকে কটাক্ষ করে অভিযুক্তদের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি বলেন, যদি অন্য কেউ এভাবে সুবিচার চাইতেন, তাহলে তার প্রতিক্রিয়া সম্ভবত অন্যরকম হতো। দেশের শীর্ষস্থানীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই নিজেকে এই পর্বে ‘অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড’ বলে মনে করছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। তাঁর মতে, হাইকোর্টের আইন অনুযায়ী ১৭ মে সিবিআই আবেদনের বিচার হয়নি। ২০১৪ সালের স্টিং অপারেশনের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারি প্রসঙ্গে সিংভি এদিন সিবিআই পদক্ষেপের ফাঁকফোকর তুলে ধরেন। গ্রেপ্তারির আগে অভিযুক্তদের নোটিস না দেওয়াটা, তার মধ্যে অন্যতম। পাশাপাশি মামলা সিবিআই আদালত থেকে অন্যত্র সরানোর আবেদন অযৌক্তিক প্রমাণ করতে তিনি সুপ্রিম কোর্ট ও অন্যান্য হাইকোর্টে দেওয়া বেশ কিছু রায়ের উল্লেখ করে বলেন, বিষয়টি বিরলের মধ্যে বিরলতম না হলে তা করা যায় না। মবোক্রেসি বা ১৭ মে প্রদর্শিত জন বিক্ষোভকে সামনে রেখে নিম্ন আদালতের শুনানি বাতিলযোগ্য বলে দাবি করেছে সিবিআই। সিংভি পাল্টা দাবি করেন, তা তখনই সম্ভব, যদি প্রমাণ করা যায় যে, সুবিচার করা সম্ভবই ছিল না। আর যদি প্রমাণ ছাড়াই হাইকোর্ট তার ক্ষমতা প্রয়োগ করে, তা যথাযথ হবে না বলে তিনি দাবি করেন। বৃহস্পতিবারও শুনানি চলবে।