রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

ত্রিপুরাতেও দিদিকে চাই – উত্তর পূর্বেও ভাঙতে পারে বিজেপির ঘর?

June 11, 2021 | 2 min read

পশ্চিমবঙ্গের একুশের ভোটে ময়দান কাঁপিয়েছিল ‘খেলা হবে’ স্লোগান। পথসভা, মিছিল, জনসভায় সর্বত্রই বেজেছিল তৃণমূলের (Trinamool) খেলা হবে গান।

এবার আওয়াজ উঠেছে ‘খেলা হবে ত্রিপুরাতে’। যাকে কেন্দ্র করে এক শিল্পীর গান ইতোমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।  

সম্প্রতি শেষ হয়েছে বাংলার বিধানসভা ভোট। একই সঙ্গে পাঁচ রাজ্যের ভোট থাকলেও ভারতের নজর ছিল বাংলার দিকে। কারণ, লড়াইটা ছিল মমতা বনাম মোদীর। বলার অপেক্ষা রাখে না যে এবারে বিজেপির নজর ছিল বাংলা। তৃণমূলকে হটাতে গোটা বিজেপি বাংলার ভোট ময়দানে নেমে পড়েছিল। দিল্লি থেকে ছুটে এসেছিলেন বিজেপির অধিকাংশ বড় নেতারা। এমনকী নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, যোগী আদিত্যনাথ, জেপি নাড্ডাদের মত সর্বোচ্চ নেতাদের বাংলায় আসা-যাওয়া প্রায় প্রতিদিনই লেগেছিল। যা দেখে তৃণমূল নেতৃত্বরা বলেছিল ‘এনারা সব বাংলার ডেইলি প্যাসেঞ্জার’।

তবে সর্বশক্তি দিয়ে ২০০ আসনের টার্গেট করে বাংলা দখলে ঝাঁপালেও ফল মেলেনি। বরং বাংলাবাসী আস্থা রেখেছেন মমতার উপরেই। ফলে তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর শপথ নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার এই বিপুল জয়কে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন ভারতের বিজেপিবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। বিরোধীদলগুলো এখন আবার নতুন করে মানতে শুরু করেছে মোদীর বিপক্ষে মুখ একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই (Mamata Banerjee)। ফলে বাংলাভাষী রাজ্যগুলো থেকে আওয়াজ উঠতে শুরু করেছে ২০২৪ এর ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাঙালি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখার। আর এই প্রেক্ষাপটে বাংলা ছেড়ে মমতার পাখির চোখ এখন ত্রিপুরা (Tripura)।

এবার সেখানেও মমতাকে চাইতে শুরু করেছে বিপ্লববিরোধী মানুষগুলো। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের উপর বর্তমানে ত্রিপুরার মানুষ বীতশ্রদ্ধ হয়ে উঠেছেন। তাদের মতে, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সেখানে কোনো কাজই করেননি বিপ্লব। তার উপর মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে একাধিক বিতর্কিত মন্তব্য করে নিজের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন। ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন হতে এখনও বছরদুয়েক বাকি।  

জানা যায়, রাজ্যটিতে বিজেপির দলের অন্দরে চোরাস্রোত বইতে শুরু করেছে। দলই আর বিপ্লবকে মেনে নিতে পারছে না। আর সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে কোমর বেঁধে নামছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেখানেও উঠছে স্লোগান, ‘খেলা হবে ত্রিপুরাতে’।

পশ্চিমবঙ্গের ফল দেখে তারা আপ্লুত। ত্রিপুরার বাঙালি সমাজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেসকে চাইতে শুরু করেছে। ত্রিপুরা তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, ২ মে ভোটের ফল ঘোষণার পরই বিজেপি ছেড়ে হাজার হাজার মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন। বর্তমানে বহু নেতাও যোগাযোগ রাখছেন ত্রিপুরা তৃণমূলের সঙ্গে।

এ বিষয়ে কলকাতার এক সংবাদ মাধ্যমকে ত্রিপুরা তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি আশীষলাল বলেন, ত্রিপুরার মানুষ বুঝতে পেরেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শান্তি ও উন্নয়নের প্রতীক। এমনকী মমতা দিদি যখন ভারতের রেলমন্ত্রী ছিলেন তখন বিশ্রামগঞ্জে রেললাইনের রুট বদলে যেভাবে মানুষদের উচ্ছেদ হওয়ার হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন, আদিবাসীরা তা মনে রেখেছে। এবারের নির্বাচনে ত্রিপুরায় তৃণমূল কংগ্রেসই সরকার গড়বে।

সম্প্রতি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন মমতার ভাইপো অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। অভিনেত্রী সায়নী ঘোষকে পশ্চিমবঙ্গের যুব সংগঠনের সভাপতি পদে তৃণমূল নেত্রী দায়িত্ব দিয়েছেন। অন্যদিকে দলের যুবনেতা দেবাংশু। ত্রিপুরা দখলে এদের উপর অনেকটাই দায়িত্ব পড়তে পারে বলে জানা যায়। গত বিধানসভা নির্বাচনে মানিক সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে বিজেপি এসেছিল। বড় দায়িত্ব পান বিপ্লব দেব। কিন্তু তিনি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরও সার্বিক মানুষের উপকার হয়নি বলেই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে ত্রিপুরায়। সেই ক্ষোভ কাজে লাগিয়ে ত্রিপুরায় জোড়াফুল ফোটাতে চাইছেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে বিজেপিকে বাংলা থেকে তাড়িয়েছেন, তাতে ত্রিপুরার মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসের উপর আস্থা রাখতে শুরু করেছেন, ত্রিপুরার নারী তৃণমূল রাজ্য সভাপতি শিবানী সেনগুপ্তর এমনটাই দাবি।  

তিনি বলেন, এবার সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের হাওয়া বইছে। সেখানকার নারীরা মমতার উন্নয়নের প্রকল্প সম্পর্কে জানেন। তিনি ভীষণ জনপ্রিয় ত্রিপুরাতেও। আমরা দিদিকে চাইছি। অপেক্ষা করুন- খেলা হবে ত্রিপুরাতেও। ‌

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#khela hobe, #Tripura Assembly Election 2023, #Social Media

আরো দেখুন