লক্ষ্য ২০২৪? অবিজেপি নেতাদের সাক্ষাতে পিকে
শারদ পাওয়ারের (Sharad Pawar) সঙ্গে প্রশান্ত কিশোরের (Prashant Kishor) বৈঠক। আর তার থেকেই তুমুল জল্পনা… তবে কি মহাজোটের লক্ষ্যে দৌত্য শুরু হয়ে গেল? প্রশান্ত কিশোর কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখেই জোট গঠনের প্রধান দূতের ভূমিকায় অবতীর্ণ? লোকসভা ভোটের আর তিন বছর। দিল্লির রাজনীতির ময়দানে এই তিনটি বছর রীতিমতো গুরুত্বপূর্ণ। আর তাই কি আসরে পিকে? নিজে সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হলেও রাজনৈতিক স্ট্র্যাটেজিস্ট হিসেবে প্রতিটি জাতীয় ও আঞ্চলিক দলের সঙ্গেই তাঁর যোগযোগ রয়েছে। প্রশান্ত কিশোর শুক্রবার যেমন দেখা করেছেন শারদ পাওয়ার ও তাঁর কন্যা সুপ্রিয়া সুলের সঙ্গে, তেমনই তিনি যাবেন অন্যান্য রাজ্যেও।
দুপুরে শারদ পাওয়ারের সঙ্গে লাঞ্চ, সন্ধ্যায় শাহরুখ খানের সঙ্গে ডিনার। প্রশান্ত কিশোর শুক্রবার ছিলেন রাজনৈতিক মহলের আগ্রহের প্রধান ভরকেন্দ্র। তাঁর এই উদ্যোগ আদতে বিজেপি বিরোধী মহাজোটেরই সলতে পাকানো বলে মনে করা হচ্ছে, যা বিজেপির উদ্বেগ বাড়িয়েছে। একদিকে রাজ্যে রাজ্যে দলে বিদ্রোহ ও ভাঙন শুরু হয়েছে, আর অন্যদিকে ২০২৪ সালের আগেই বিরোধী জোট ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আভাস। বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব দিশাহারা।
শুধু বাংলায় দলে ভাঙনের পদধ্বনি নয়, উত্তরপ্রদেশ ও হরিয়ানা নিয়েও বিজেপি চরম উদ্বেগে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে দূরত্ব তীব্র হচ্ছে। বৃহস্পতিবার থেকে যোগী আদিত্যনাথ দিল্লিতে। একের পর এক বৈঠক—শুক্রবার তিনি দীর্ঘ বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে। বৃহস্পতিবার দেখা করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের বরফ গলার কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। এর মধ্যেই হরিয়ানা নিয়ে মাথাব্যথা শুরু হয়েছে কেন্দ্রের শাসক দলে। হরিয়ানার বিজেপি জোট সরকারের প্রধান শরিক জননায়ক জনতা পার্টির নেতা রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী দুষ্যন্ত চৌতালা দিল্লিতে দেখা করেছেন অমিত শাহের সঙ্গে। কৃষক আন্দোলনকে কেন্দ্র করে চৌতালার দলে বিদ্রোহ শুরু হয়েছে। কৃষকদের পাশে না দাঁড়ালে, কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি আইনের বিরোধিতা না করলে আগামী দিনে নির্বাচনে ভরাডুবি হবে। আর তাই জননায়ক জনতা পার্টিতে মাথাচাড়া দিয়েছে বিদ্রোহ।
বিধায়কদের একাংশের দাবি, এই ইস্যুতে এখনই কৃষকদের পাশে দাঁড়ানো হোক।
বাংলা, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, কর্ণাটকজুড়ে দলের মধ্যে চরম বিক্ষোভের মধ্যেই নতুন উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে মহাজোটের সম্ভাবনা। গত কয়েকদিন ধরে জল্পনা চলছিল বিজেপি ও শিবসেনার মধ্যে কোনও গোপন সম্পর্ক স্থাপন নিয়ে। কিন্তু শারদ পাওয়ার বলে দিয়েছেন, মহারাষ্ট্রের মহাজোট সরকার পাঁচ বছর চলবে। আগামী লোকসভা এবং বিধানসভা দু’টি নির্বাচনে এই মহাজোটই লড়াই করবে। আগামী বছর ছ’টি রাজ্যে বিধানসভার ভোট। তার আগে দলের ফাটল মেরামতি করে কর্মীদের মনোবল বাড়াতে মরিয়া বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু আপাতত তাঁদের উদ্বেগ বাড়িয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বাংলায় বিজেপিকে নতুন করে আতঙ্কগ্রস্ত করে তুলেছেন। উস্কে দিয়েছেন ভাঙনের সম্ভাবনা। আর তাতে চরম দুশ্চিন্তায় বিজেপি। তার সঙ্গে মমতাকে মুখ করে নয়া মহাজোটের সম্ভাবনাও এখন আর অগ্রাহ্য করতে পারছেন না মোদি-শাহ।এই মুহূর্তে