কয়েক মিনিটে ২ থেকে ১৮ কোটি, জমি কেলেঙ্কারিতে বিদ্ধ রাম জন্মভূমি ট্রাস্ট
মাত্র ১০ মিনিট। তাতেই জমির একটি অংশের দাম দু’কোটি থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ১৮.৫ কোটি টাকা। রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের (Ram Janmabhoomi Tirtha Khetra Trust) বিরুদ্ধে জমি দুর্নীতির (Land Scam) এমনই অভিযোগ তুলল সমাজবাদী পার্টি (Samajwadi Party) এবং আম আদমি পার্টি (আপ) (Aam Admi Party)। পুরো বিষয়টিতে সিবিআই তদন্তের দাবি উঠেছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে আপাতত কোনও মন্তব্য করতে চাননি ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক চম্পত রাই (Champat Rai)।
রবিবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকে সমাজবাদী পার্টির নেতা তেজনারায়ণ পান্ডে অভিযোগ করেন, ‘দু’কোটি টাকায় জমির সেই অংশ (১২,০৮০ স্কোয়ার মিটার) কিনেছিলেন রবিমোহন তিওয়ারি এবং সুলতান আনসারি। ১০ মিনিট পর গত ১৮ মার্চ ট্রাস্ট সেটি ১৮.৫ কোটি টাকায় জমি কিনেছে।’ তাঁর দাবি, কেনা চুক্তির সময় হাজির ছিলেন ট্রাস্টের সদস্য অনিল মিশ্র এবং অযোধ্যার মেয়র হৃষিকেশ উপাধ্যায়। সেইসঙ্গে আরটিজিএসের মাধ্যমে রবিমোহন ও সুলতানের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৭ কোটি টাকা পাঠানো হয়েছিল। আরটিজিএসের মাধ্যমে সেই অর্থ পাঠানোর ঘটনায় তদন্তের পাশাপাশি পুরো ‘জমি দুর্নীতিতে’ সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছেন সমাজবাদী পার্টির নেতা।
একই সুরে অভিযোগ তুলেছেন আপ নেতা সঞ্জয় সিং। সোশ্যাল মিডিয়ায় কয়েকটি নথি প্রকাশ করে তিনি দাবি করেন, সন্ধ্যা সাতটা ১০ মিনিটে দু’কোটি টাকায় জমির সেই অংশ কিনেছিলেন রবিমোহন ও সুলতান। সাতটা ১৫ মিনিটে রাম জন্মভূমি ট্রাস্টের চম্পত রাই সেই জমি কেনেন ১৮.৫ কোটি টাকায়। সেই হিসাব অনুযায়ী, প্রতি সেকেন্ডে জমির দাম বেড়েছিল ৫.৫ লাখ টাকা। সঞ্জয় প্রশ্ন করেন, ‘বিশ্বের আর কোনও এমন জায়গা আছে, যেখানে এত দ্রুত জমির দাম পালটে যায়? কিন্তু এটা হয় ভগবান রামের জন্মস্থানে।’
সঞ্জয় আরও অভিযোগ করেন, সেখানেই অনিয়মের স্বপক্ষে প্রমাণের শেষ হয়নি। তিনি বলেন, ‘অনিয়মের আরও একটি সূত্র আছে। প্রথম লেনদেনের জন্য স্টাম্প কেনা হয়েছিল ৫ টা ২২ মিনিটে। যেখানে দ্বিতীয় লেনদেনের জন্য ৫টা ১১ মিনিটে স্টাম্প কেনা হয়েছিল। অর্থাৎ যে জমি বিক্রি হয়নি, সেই জমি কেনার জন্য প্রথমে স্টাম্প জোগাড় করা হয়েছিল।’
যদিও সেই অভিযোগ নিয়ে সরাসরি মুখ খুলতে চাননি ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘ওঁরা আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলতেই থাকেন। গত ১০০ বছর ধরে এটাই হয়ে আসছে মহাত্মা গান্ধীর মৃত্যুর জন্যও আমাদের দায়ী করেছিল। বিস্তারিতভাবে খতিয়ে না দেখে আমি কোনও মন্তব্য করব না।’
এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে মোদিকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল নেতা যশোবন্ত সিনহা। তিনি লেখেন, রামের সঙ্গ, মোদির বিশ্বাস আর আমাদের বিকাশ। সব সীমা পাড়। রামকেও ছাড়লো না এরা। আর কী বাকি রইল? মোদি থাকলে সবই সম্ভব।