তৃণমূলের পথে আরও বিজেপি নেতা! জল্পনা বাড়ালেন দিলীপ ঘোষ
এবার আর রাখঢাক না করে দলে ভাঙনের কথা কার্যত স্বীকার করে নিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। যেখানে আরও অনেকে চলে যেতে পারেন বলে মন্তব্য করতে দেখা গেল তাকে। অর্থাৎ বিধানসভা নির্বাচনের পরবর্তী সময়কালে বিজেপিতে যেভাবে বেসুরোদের মাত্রা বাড়তে শুরু করেছিল এবং কিছুদিন আগেই মুকুল রায়ের মত হেভিওয়েট নেতা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন, তারপরও গেরুয়া শিবিরে আরও অনেকেই ঘাসফুল শিবিরের নাম লেখাতে পারেন বলে জল্পনা তৈরি হয়।
এমত পরিস্থিতিতে খুব তাড়াতাড়ি আরও অনেক বিজেপির (BJP) জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে হেভিওয়েট নেতা দলত্যাগ করতে পারেন বলে দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এই গোটা ঘটনাকে কোনোকালেই গুরুত্ব দিতে রাজি নন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ। কিন্তু এবার দলে ভাঙনের ব্যাপারে প্রশ্ন করতেই আরও অনেকে যেতে পারেন বলে জল্পনা বাড়িয়ে দিলেন তিনি। স্বাভাবিক ভাবেই তার কাছে কি তাহলে এই ব্যাপারে নিশ্চিত কোনো খবর রয়েছে? কিন্তু তিনি এই রকম কথা বললেও, কেন সেই ভাঙ্গন আটকাতে পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন না, এখন তা নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন।
সূত্রের খবর, দলের আরও অনেক বিধায়ক এবং নেতা-নেত্রী গেরুয়া শিবির ত্যাগ করতে পারেন বলে জল্পনা তৈরি হয়েছে। আর এই পরিস্থিতিতে এদিন এই ব্যাপারে দিলীপ ঘোষকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “ঢেউয়ে অনেকে বিজেপিতে এসেছিলেন। তাদের আমরা কাজ দিয়েছিলাম। যারা এসেছিলেন কাজ করতে, তাদের কাজ দিয়েছি। তারা অনেকে নিজের মত করে এসেছিলেন, অনেকে নিজের মতো করে চলে গিয়েছেন। আরও অনেকে চলে যেতে পারেন।”
তবে ভারতীয় জনতা পার্টির যারা আসল কার্যকর্তা, তারা দলের সঙ্গেই থাকবেন বলে দাবি করতে দেখা যায় বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে। আর গেরুয়া শিবিরের সেনাপতির এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিজেপির অন্দরে কিছুটা হলেও আশঙ্কা মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে। অনেকে বলছেন, দিলীপ ঘোষের কাছে খবর রয়েছে যে, বিজেপির আরও অনেকে দলত্যাগ করতে পারেন। আর সেই কারণেই তিনি এই ধরনের মন্তব্য করে বুঝিয়ে দিলেন যে, ভবিষ্যতে কেউ দলত্যাগ করলেও বিজেপি চিন্তিত নয়।
পর্যবেক্ষকদের মতে, মুকুল রায় (Mukul Roy) গেরুয়া শিবির ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে নাম লেখানোর পরে বিজেপিতে ব্যাপকভাবে ভাঙতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে বিজেপির অনেক নেতা এবং জনপ্রতিনিধিদের একটি লম্বা তালিকা তুলে দিয়েছেন মুকুল রায়। এমনকি অনেকের কাছে মুকুলবাবুর ফোন গিয়েছে বলেও খবর।
সেদিক থেকে দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর করে এই দল ভাঙ্গন আটকাতে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু এরপরেও দিলীপ ঘোষের মন্তব্য যথেষ্ট চিন্তায় রাখছে ভারতীয় জনতা পার্টিকে। অর্থাৎ ভবিষ্যতে আরও অনেকে ঘাসফুল শিবিরের শামিল হতে পারেন, তা একপ্রকার স্পষ্ট। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।