শালিমারের জাহাজ কারখানার পুনরুজ্জীবনে উদ্যোগী রাজ্য
রাজ্য সরকারের মালিকানায় থাকা জাহাজ তৈরির কারখানা শালিমার ওয়ার্কস লিমিটেডের (Shalimar Works Limited) পুনরুজ্জীবনে উদ্যোগী হল পরিবহণ দপ্তর। এই দপ্তরের প্রয়োজন মতো ভেসেল, লঞ্চ, প্রমোদতরীর বরাত এখন থেকে ব্রিটিশ আমলে হাওড়ায় গঙ্গার পারে তৈরি এই কারখানাকেই দেওয়া হবে বলে জানান পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। এর পাশাপাশি অর্থনৈতিক যেসব জটিলতা ইতিমধ্যে হয়ে রয়েছে, সেগুলির সমাধান, সংস্থার অধীন যে জায়গা ফাঁকা পড়ে রয়েছে, তার সদ্ব্যবহার, একটি ছোট ‘ড্রাই ডক’ নির্মাণ সহ একগুচ্ছ পদক্ষেপ করছে পরিবহণ দপ্তর (Transport Dept)। সোমবার মন্ত্রী নিজে শালিমারের এই কারখানা ঘুরে দেখেন। সেখানে তিনি পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকের পর এই খবর জানিয়েছেন।
এদিন তিনি আরও জানান, রাজ্য পরিবহণ নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজনবীর সিং কাপুরকে এই সংস্থা পরিচালনার অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হল। তিনি এদিন এই বৈঠকে উপস্থিতও ছিলেন। সূত্রের খবর, ২০০৪ সালে কয়েকটি ভেসেল তৈরির বরাত নিয়েছিল সংস্থাটি। কিন্তু তা তৈরি করতে না পারায় প্রায় ১৫ কোটি টাকা লোকসান হয়। আরও আর্থিক জটিলতা রয়েছে। তাই মন্ত্রী বলেন, সংস্থার পুনরুজ্জীবনে প্রথম কাজ হবে আর্থিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। তারপর রাজ্য সরকারের বরাতগুলি পেলেই সংস্থা অনেকটাই প্রাণ ফিরে পাবে বলে মনে করছেন কর্তারা। মন্ত্রী আরও জানান, সার্বিকভাবে ‘রিভার ট্রাফিক’ ব্যবস্থাকে উন্নত করতে বিশ্বব্যাঙ্কের অর্থসাহায্যে বড় প্রকল্পের কাজ শুরু হতে চলেছে।
সেই প্রকল্পের আওতায় লঞ্চ, ভেসেল নির্মাণ ও মেরামতির অনেক কাজই শালিমারের সংস্থাটিকে দেওয়া যাবে। মন্ত্রী এদিন এই কারখানা চত্বর ঘুরে জানান, অনেকগুলি ভেসেল তৈরির কাজ মাঝরাস্তায় থমকে রয়েছে। সেই কাজগুলি শেষ করে সেগুলিতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা সহ নানা অত্যাধুনিক সুযোগ দিয়ে প্রমোদতরী হিসেবে চালু করা যায় কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, ১৮৮৫ সালে তৈরি হওয়া এই কারখানা ১৯৮০ সাল নাগাদ রাজ্য সরকার অধিগ্রহণ করেছিল। এক সময় যথেষ্ট সুনামের সঙ্গে জল পরিবহণের নানা যান তারা তৈরি করলেও ধীরে ধীরে সরকারি উদাসীনতা সহ নানা কারণে সংস্থাটি ধুঁকতে থাকে। রাজ্যের নবগঠিত সরকারের এমন উদ্যোগে খুশি ও উৎসাহিত এখানকার উচ্চপদস্থ কর্তা থেকে সাধারণ শ্রমিক-কর্মচারীরা। তবে পুনরুজ্জীবনের ঘোষণা এবং তা বাস্তবায়নের মধ্যে প্রায়শই ফারাক থেকে যায়। এক্ষেত্রে অন্তত তেমনটা হবে না বলে আশাবাদী তাঁরা।