পাইকারি মুদ্রাস্ফীতির হারে সর্বকালীন রেকর্ড
পাইকারি মূল্যসূচক সর্বকালীন সর্বোচ্চ হারে পৌঁছেছে। খুচরো মূল্যসূচক এক ধাক্কায় এক মাসে দু’শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৬.৩ শতাংশ। ১২.৯৪ শতাংশ হয়েছে পাইকারি মুদ্রাস্ফীতির (Inflation) হার। সবমিলিয়ে আগামী দিনে চরম মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কেন্দ্রীয় শিল্প-বাণিজ্য মন্ত্রকের পেশ করা তথ্যে দেখা যাচ্ছে, পেট্রল(Petrol), ডিজেল(Diesel), বিদ্যুৎ, উৎপাদন সেক্টরের চরম উদ্বেগজনক মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। সাধারণ মানুষের জীবনযাপনকে যে সেক্টরের বৃদ্ধি-হ্রাস প্রভাবিত করে. সেই খাদ্যপণ্যের দামও উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। এক ধাক্কায় তা পাঁচ শতাংশ ছাপিয়ে গিয়েছে। কিছু খাদ্যপণ্যের দাম সামান্য কমার লক্ষণ দেখা গেলেও, বেশ কিছু খাদ্যপণ্যের দাম লাগাতার ঊর্ধ্বমুখী। পাইকারি এবং খুচরো দুটি ক্ষেত্রেই মূল্যবৃদ্ধি চরমে। খুচরো পণ্যের মুদ্রাস্ফীতির হার ছয় শতাংশ ছাড়িয়ে যাওয়ার এই প্রবণতা গত ছ’মাসের মধ্যে হয়নি।
পেট্রপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি চরম সতর্কবার্তা দিচ্ছে। সোমবার প্রকাশিত পাইকারি মূল্যসূচকের তথ্যে ৩৭.৬ শতাংশ বেড়েছে পেট্রপণ্য ও জ্বালানি। অশোধিত তেলের দাম বেড়েছে ১০২ শতাংশ। রান্নার গ্যাস, পেট্রল, ডিজেল তিনটি জ্বালানির দাম বৃদ্ধি ৬০ শতাংশের বেশি। মধ্যবিত্তের রান্নাঘরে আগুন জ্বালিয়ে পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির হার সবথেকে বেশি হয়েছে ডাল, পেঁয়াজ এবং ফলের। সব্জির দাম এপ্রিল মাসের তুলনায় মে মাসে কিছুটা কমলেও, সাধারণ নিয়মে যতটা কমার কথা সেটা হয়নি। এখনও বহু সব্জির পাইকারি দাম স্বাভাবিকের তুলনায় দ্বিগুণ বা তিনগুণ বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। উৎপাদন সেক্টরের মুদ্রাস্ফীতির হার ১০.৮ শতাংশ বেড়েছে। সামগ্রিকভাবে উৎপাদন সেক্টরের মধ্যে খাদ্যপণ্য বেড়েছে ১৫ শতাংশের বেশি। ভোজ্য তেল ৫১ শতাংশ বেড়েছে।
সাধারণ মানুষ তো বটেই, সরকার ও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছেও সবথেকে বড় সঙ্কট এখন মূল্যবৃদ্ধি(Price Hike)। বস্তুত, মাসের পর মাস ধরে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কেন্দ্রীয় সরকারকে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সতর্ক করেছে। যেভাবেই হোক দ্রুত মূল্যবৃদ্ধির রাশ টানা দরকার বলে বিবৃতিও দিয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার কোনওভাবেই মূল্যবৃদ্ধি কমাতে পারছে না। ফলে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নীতি নির্ধারণের সংস্কার পর্ব দীর্ঘদিন ধরে থমকে রয়েছে।
পাইকারি মুদ্রাস্ফীতির বৃদ্ধিহার এবং পেট্রল ডিজেলের মূল্য — এই দুটি ক্ষেত্রে মোদি সরকার সর্বকালীন রেকর্ড করেছে। রেকর্ড হয়েছে ডলারের বিনিময়ে টাকার দামেও। পেট্রল ও ডিজেলের দাম আকাশ ছোঁয়ায় পরিবহণ ব্যয় প্রবল বৃদ্ধি পেয়েছে। এরপর প্রতিটি পণ্যের দাম মাত্রাছাড়া হতে পারে বলে এখন থেকেই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।