দক্ষিণবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

আদিবাসী মহিলাকে বিবস্ত্র করে ঘুরিয়ে গ্রেপ্তার ১২

June 16, 2021 | 2 min read

কুমারগ্রামে (Kumargram) এক আদিবাসী মহিলাকে (Adibasi women) বিবস্ত্র করে নিগ্রহ করার ঘটনায় অভিযুক্ত সবাইকেই গ্রেপ্তার করল পুলিস। পরকীয়ার অভিযোগে দিন কয়েক আগে গ্রামের ভিতরে বিবস্ত্র করে তাঁকে ঘোরানো হয়। সেই অমানবিক ঘটনায় অভিযুক্ত ছিল গ্রামেরই ১২ জন বাসিন্দা।

মঙ্গলবার পুলিস জানিয়েছে, সেই ১২ জনকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই রাজ্য মহিলা কমিশন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিসকে উদ্যোগী হতে বলেছে। এদিন পুলিস জানায়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, এ ধরনের মহিলা নিগ্রহের ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে আর কোথাও না ঘটে তার জন্য দ্রুত জেলাজুড়ে সচেতনতামূলক প্রচার অভিযানেও নামছে জেলা পুলিস।

জেলার পুলিস সুপার ভোলানাথ পান্ডে বলেন, কুমারগ্রামের নিগৃহীতা আদিবাসী ওই মহিলা জানিয়েছেন, তাঁকে নিগ্রহের ঘটনায় ১২ জন যুক্ত ছিল। আমরা প্রত্যেককে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। ধৃতদের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে, তার জন্য পুলিসের পক্ষ থেকেই জেলাজুড়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, পরকীয়ার ‘অপরাধে’ সালিশি সভার পর কুমারগ্রামের আদিবাসী মহল্লার ওই মহিলাকে বাড়ি থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করে প্রথমে প্রচন্ড মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পরে মহিলাকে বিবস্ত্র করে গ্রামের পথে ঘোরানো হয়। নির্যাতিতা ওই মহিলা বাঁচার জন্য সবার কাছে কাতর অনুরোধ করলেও কেউ সেই আর্তি কানে তোলেননি। বরং নিগ্রহকারীদের মধ্যে কেউ কেউ এই নৃশংস দৃশ্য মোবাইলে ক্যামেরায় বন্দি করে। পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ছবি ভাইরাল হতেই জেলাজুড়ে শোরগোল পড়ে। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই পুলিসও নড়েচড়ে বসে। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সমাজের বিভিন্ন মহল থেকে পুলিসের কাছে দাবি জানানো হয়।

তৃণমূলের কুমারগ্রাম ব্লক সভাপতি ধীরেশচন্দ্র রায় বলেন, ব্লকের চ্যাংমারির এই মধ্যযুগীয় ঘটনার নিন্দার ভাষা নেই। আমরা পুলিসকে এই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছি। পুলিস দ্রুততার সঙ্গে অভিযুক্ত প্রত্যেককে গ্রেপ্তার করায় আমরা খুশি। পুলিস নির্যাতিতা মহিলাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। মহিলার কাউন্সেলিংও করে। মহিলার বয়ানের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের জন্য কুমারগ্রাম থানা, কামাখ্যাগুড়ি ফাঁড়ি, এসডিপিও আলিপুরদুয়ার ও জেলা পুলিস হেড কোয়ার্টারকে নিয়ে পুলিসের একটি টিম তৈরি করে। অভিযানে নেমে পুলিস খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এই ঘটনায় অভিযুক্ত ১২ জনকেই গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। এদিকে, সত্যতা যাচাই করতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিও ক্লিপ পুলিস ফরেন্সিক বিভাগেও পাঠিয়েছে। অভিযুক্ত প্রত্যেককে আদালতে তুলে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিস। স্থানীয় ও পুলিস সূত্রের খবর, আদিবাসী ওই বিবাহিত মহিলা ছ’মাস আগে স্বামীকে ছেড়ে অন্য একজনের সঙ্গে পালিয়ে যান। সম্প্রতি মহিলা বাড়ি ফিরে এলে তাঁর স্বামী বাড়িতে থাকতেও দেন। কিন্তু আদিবাসীদের স্থানীয় সমাজ তা মেনে নিতে পারেনি বলে অভিযোগ। তারপরেই এলাকায় সালিশি সভা করে স্থানীয় মাতব্বরদের নিদানে প্রথমে মারধর ও পরে মহিলাকে বিবস্ত্র করে গ্রামে ঘোরানো হয় বলে অভিযোগ।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Kumargram, #adibasi woman

আরো দেখুন